Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
National News

‘আইন তার কর্তব্য পালন করেছে’, এনকাউন্টারের বর্ণনা দিয়ে বললেন সজ্জানর

প্রমাণ হিসেবে বলেছেন, ‘‘দুই নিহতের হাতের কাছেই মিলেছে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া অস্ত্র। আহত দুই কনস্টেবলের মাথায় চোট লেগেছে। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি।’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:৫৮
Share: Save:

হায়দরাবাদ এনকাউন্টারের বর্ণনা দিল পুলিশ। একাধিক প্রশ্ন উঠলেও সাইবরাবাদের পুলিশ কমিশনার ভিসি সজ্জানর বললেন, ‘‘আইন তার কর্তব্য পালন করেছে।’’ জানালেন, পুনর্নির্মাণের জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করে, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালায়। পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় তেলঙ্গানায় তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে ধৃত চার অভিযুক্তের। যাঁরা যাঁরা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন বা তদন্ত করবেন, সবাইকে তথ্যপ্রমাণ-সহ জবাব দিতেও তৈরি বলে জানিয়েছেন সজ্জানর।

গত ২৭ নভেম্বর তেলঙ্গানার তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর খুন করা হয়। তার পর একটি কালভার্টের নীচে নিয়ে গিয়ে মৃতদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। পরের দিন উদ্ধার হয় চিকিৎসকের ঝলসানো মৃতদেহ। তদন্তে নেমে চার অভিযুক্ত চিন্নাকুন্ত চেন্নাকেশভুলু, মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা এবং জল্লু নবীনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে পুলিশ জানায়, এনকাউন্টারে চার জনেরই মৃত্যু হয়েছে। তার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ার একটা অংশ পুলিশের এই এনকাউন্টারের প্রশংসা করে মতামত প্রকাশ করেন। আবার উল্টো দিকে এনকাউন্টার নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতেই সাংবাদিক বৈঠকে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন সজ্জানর।

সাইবরাবাদের পুলিশ কমিশনারের বয়ান অনুযায়ী, ‘‘২ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে পায় পুলিশ। তার পর ৩ এবং ৪ ডিসেম্বর তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রচুর তথ্য উঠে আসে। শুক্রবার তদন্তের অংশ হিসেবেই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনাস্থলে। সেখানে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করেছিল। পুলিশকে পাথর ও লাঠি দিয়ে আক্রমণ করে। তাতে দুই পুলিশকর্মী জখম হন। একই সঙ্গে পুলিশ অফিসারদের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে দুই অভিযুক্ত। পুলিশ প্রথমে আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু তারা না করায় পুলিশ বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়।’’

আরও পড়ুন: অনেকেই বলছেন সাবাশ, কেউ বলছেন অন্যায়, তেলঙ্গানা এনকাউন্টার নিয়ে তোলপাড় দেশ

কমিশনার জানিয়েছেন, পুলিশের চালানো গুলিতে মৃত্যু হয় চার অভিযুক্তের। প্রমাণ হিসেবে বলেছেন, ‘‘দুই নিহতের হাতের কাছেই মিলেছে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া অস্ত্র। আহত দুই কনস্টেবলের মাথায় চোট লেগেছে। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি।’’ এর পরেই কমিশনার বলেন, আমি শুধু এটাই বলতে পারি, ‘‘আইন তার কর্তব্য পালন করেছে।’’

কিন্তু সাংবাদিকরা এনকাউন্টার নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। সজ্জানর জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ১০ জন পুলিশ অফিসার সঙ্গে ছিলেন। কী ভাবে ১০ জন পুলিশ অফিসারের ঘেরাটোপের মধ্যে থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল এবং অস্ত্র ছিনতাইয়ের চেষ্টা করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অত রাতে কেন ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হল অভিযুক্তদের, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিকরা।

আরও পড়ুন: তেলঙ্গানার এনকাউন্টারের তত্ত্বটাই বিশ্বাস করতে পারছি না

যে ঘটনা নিয়ে সারা দেশ তোলপাড়, এই রকম হাই প্রোফাইল মামলার অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়ার সময় কি পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল— সেই প্রশ্নও ওঠে। অভিযুক্তরা পুলিশের অস্ত্র কী ভাবে কেড়ে নিল, সে সব প্রশ্ন উঠলেও কমিশনার জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

সংবাদ মাধ্যম থেকে জেনে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তেলঙ্গানার ডিজিকে অবিলম্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এক জন এসএসপির নেতৃত্বে কমিশনের তদন্তকারী অফিসাররাও ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছেন। তাঁরা অবিলম্বে রিপোর্ট দেবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE