রাজ্যসভায় অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তৈরির ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ ধর্মকে নিশানা করা হয়নি। বুধবার রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ আবারও জানিয়ে দিলেন, পড়শি দেশগুলিতে ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার হিন্দু, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পার্সিদেরই শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এর আগেও অমিত-সহ বিজেপি নেতৃত্ব একাধিক বার প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন— বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে আসা সে সব দেশের সংখ্যালঘুদেরই এ দেশে শরণার্থী হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে। যার থেকে স্পষ্ট, ওই দেশগুলিতে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষদের অর্থাৎ মুসলিমদের এ দেশে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করতে চায় বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার।
সংসদের চলতি অধিবেশনে রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের। তার আগে বুধবার এনআরসি-র প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হলে শাহ রাজ্যসভায় বলেন, ‘‘পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় বৈষম্যের শিকার হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান এবং পার্সি শরণার্থীদেরই নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। তাঁদের ভারতের নাগরিক করে তুলতেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রয়োজন।’’
কিন্তু হিন্দু, খ্রিস্টান-সহ বাকিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বললেও, শাহ কেন মুসলিমদের এড়িয়ে গেলেন, তা জানতে চান এনসিপি সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন। জবাবে অমিত শাহ বলেন, ‘‘আপনি এনআরসি এবং নাগরিক সংশোধনী বিলের মধ্য গুলিয়ে ফেলছেন। এনআরসি তৈরির ক্ষেত্রে কোনও ধর্মকে নিশানা করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতেই সব কিছু হয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস যাই হোক না কেন, দেশের সব নাগরিকেরই নাম নথিভুক্ত হবে এনআরসি তালিকায়। দেশের সর্বত্র এনআরসি হবে। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। সকলকে এনআরসি-র আওতায় আনতেই এই প্রক্রিয়া।’’
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের আগেই সরকার মহারাষ্ট্রে, ঘোষণা কাল! শিবসেনার মন্তব্যে জল্পনা
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনে ধোঁয়াশার মধ্যেই বৈঠকে মোদী-পওয়ার, আলোচ্য বিষয় নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
অসমে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা থেকে ইতিমধ্যেই ১৯ লক্ষের বেশি মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। কিন্তু ফরেনার্স ট্রাইবুনালে তাঁরা আবেদন করতে পারে বলে এ দিনও জানান অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘তালিকায় নাম বাদ গেলে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে যাওয়ার অধিকার রয়েছে প্রত্যেকের। অসমের বিভিন্ন প্রান্তে এই ট্রাইবুনাল গড়ে তোলা হবে। কারও সামর্থ্য না থাকলে, অসম সরকার তাঁর আইনজীবীর খরচ বহন করবে।’’
২০১৬ সালে লোকসভায় নাগরিক সংশোধনী বিল পেশ করে প্রথম মোদী সরকার। পরে সেটি সংসদীয় যৌথ কমিটির কাছে পাঠানো হয়। এ বছর জানুয়ারি মাসে তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিটি। তার পর সেটি লোকসভায় গৃহীত হয় এবং গত ৮ জানুয়ারি পাশ হয়ে যায়। কিন্তু রাজ্যসভায় এখনও পাশ হয়নি বিলটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy