Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪
India-China Clash

সমন্বয় বাড়ানোর উপরেই জোর দিলেন রাওয়ত

গত এপ্রিল থেকে লাদাখ সীমান্তে কার্যত ঢিল ছোড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু’দেশের সেনা।

জাহাজ ‘হিমগিরি’র অবতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত। ছবি: সুমন বল্লভ

জাহাজ ‘হিমগিরি’র অবতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৩৬
Share: Save:

লাদাখে চিনের আগ্রাসন থেকে শিক্ষা নিয়ে জল, স্থল ও আকাশে সমন্বয় ও উচ্চ পর্যায়ের সেনা প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি করলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত। আজ কলকাতায় যুদ্ধজাহাজ সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে তিনি জানান, লাদাখ সীমান্তে এখনও দু’দেশের মধ্যে অচলাবস্থা জারি রয়েছে। আজ প্রায় একই সুরে বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানে চিনের মনোভাবের সমালোচনা করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও বলেন, ‘‘হিমালয়ের মতো এলাকায় বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসনের ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে, কী ভাবে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে। যার ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়টি।’’

গত এপ্রিল থেকে লাদাখ সীমান্তে কার্যত ঢিল ছোড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু’দেশের সেনা। গোড়ায় চিনা সেনার বিরুদ্ধে ভারতীয় ভূখণ্ড দখলের অভিযোগ উঠলেও পরে ভারত সেই জমি দখল করেছে বলে সরকারি ভাবে দাবি করা হয়। আজ বণিকসভা ফিকি-র একটি অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বিপুল সেনা উপস্থিতি রয়েছে। চিনা সেনা আগ্রাসনের চেষ্টা করলেও ভারতীয় সেনার বীরত্বের ফলে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। সেনাদের ওই বীরত্ব আগামী প্রজন্মের কাছে গর্বের কারণ হতে চলেছে।’’ নরেন্দ্র মোদী সরকার লাদাখে এলাকা পুনর্দখলের দাবি করলেও বিরোধী শিবিরের দাবি, গলওয়ান উপত্যকার একটি বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড এ যাত্রায় ভারতের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে চিনা সেনা। চিনের সেনা ঘাঁটি গাড়ায় ওই এলাকাগুলিতে আর টহল দিতে পারছে না ভারতীয় সেনা।

গোটা গ্রীষ্ম জুড়ে সক্রিয়তা তো ছিলই, প্রবল শীতের মধ্যেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনের সেনা যে এখনও সক্রিয়, তা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিপিন রাওয়ত। তিনি বলেন, ‘‘চিনের তিব্বত অংশে পরিকাঠামো গড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চিন। আমরাও পাল্টা পদক্ষেপ করছি। যার ফলে নিয়ন্ত্রণরেখায় অচলাবস্থা জারি রয়েছে। প্রত্যেকটি দেশ নিজস্ব সামরিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে নিজেদের প্রস্তুতি নিতে পারে। তবে ভবিষ্যতে যে কোনও সমস্যার মোকাবিলা করার প্রশ্নে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’’ রাজনাথও মনে করেন, গত কয়েক মাসে বারবার বিভিন্ন ঘটনায় ভারত-চিন দু’দেশের সামরিক শক্তির তুলনা চলে এসেছে। রাজনাথের মতে, ওই সামরিক শক্তির সংঘাতে কেবল হিমালয়ের পার্বত্য এলাকাতেই নয়, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামগ্রিক পরিস্থিতিকেও পাল্টেছে।

সুষ্ঠু সমন্বয়ের লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় ধরে সেনার তিন বাহিনীর মধ্যে সংযুক্তিকরণের প্রশ্নে সরব সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আজ এ প্রশ্নে রাওয়ত বলেন, ‘‘সবার আগে প্রত্যেক বাহিনীর অন্য বাহিনীকে বুঝতে হবে। প্রত্যেকে যে একে অপরের পরিপূরক, তা বোঝা প্রয়োজন। এটা ঠিক, কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে তা মিটে যাবে। ইতিমধ্যেই সংযুক্তিকরণের কাজ শুরু হয়েছে। সংস্কারমুখী পদক্ষেপ হিসেবে খরচ কমানো হয়েছে। মানবসম্পদকে আরও পরিকল্পিত ভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি তিন বাহিনীর মধ্যে সংহতি গড়ে তোলার কাজও শুরু হয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE