সেই রাতে পুলিশের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে বিক্ষোভ দেখান নির্যাতিতার পরিবার এ গ্রামের লোকজন।
রাতের অন্ধকারে দেহ পুড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। শেষ বারের মতো বোনের মুখটুকুও দেখতে দেয়নি। তা নিয়ে যে অভিযোগ জানাবেন, তারও উপায় ছিল না। কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল তাঁদের। সেই অবস্থায় দু’দিন কাটানোর পর শনিবার সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিল হাথরস-কাণ্ডে নিহত নির্যাতিতার পরিবার। ইংরেজি পড়তে জানেন না, এই যুক্তি দেখিয়ে পুলিশ ও প্রশাসন ময়নাতদন্তের রিপোর্টও দিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
হাথরসের বুল গড়হী গ্রাম, যেখানে নির্যাতিতার বাড়ি, শনিবার থেকে সেখানে সংবাদমাধ্যমকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় এক সঙ্গে পাঁচ জনের বেশি সংবাদকর্মীর ঢোকার অনুমতি নেই। তবে তাতেই কিছুটা হলেও মনে বল পেয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। সংবাদমাধ্যমে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা।
এ দিন সংবাদমাধ্যমে নির্যাতিতার ভাই বলেন, ‘‘আমরা জানতে চাই, ওই রাতে কার দেহ পোড়ানো হয়েছিল? যদি আমার বোনের দেহ হয়ে থাকে, তা হলে এ ভাবে পোড়ানো হল কেন? পুলিশ এবং প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম, বোনকে শেষ দেখাটা যেন দেখতে দেওয়া হয়। তা তো হয়ইনি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চাইলে বলা হয়, ইংরেজি পড়তে পারো না, রিপোর্ট কী বুঝবে?’’
আরও পড়ুন: হাথরস কাণ্ডে পথে নেমে ভোটপ্রচারের সুর বাঁধলেন মমতা
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি বলে এর আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে দাবি করা হয়। কিন্তু নির্যাতিতার হাতে পরিবারকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে দিতে আপত্তি কোথায়, এখনও পর্যন্ত তার জবাব মেলেনি। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি স্থানীয় প্রশাসন।
হাথরস-কাণ্ডে শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকা। পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে দিল্লির সফদরজং হাসপাতাল থেকে নির্যাতিতার দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, রাতারাতি সেই দেহ পুড়িয়ে ফেলা, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় নির্যাতিতার দেহ উদ্ধার হওয়ার পরেও ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া, তার উপর পরিবারকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না দেওয়া— পুলিশের প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
একই সঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তাঁদের সঙ্গে কোনও কথাই বলছে না বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন। তাঁদের দাবি, শুরুতে এক দিন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। তার পর গ্রামে ঘুরে ঘুরে অন্যদের বয়ান নিলেও, তাঁদের বাড়িতে কেউ আসেননি। তাঁরা যে বাইরে বেরিয়ে কথা বলবেন, সে উপায়টুকুও নেই বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার দাদা। তিনি বলেন, ‘‘গত দু’দিন ধরে বাড়িতে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে আমাদের। বাড়ির ভিতরেও সর্ব ক্ষণ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা অত্যন্ত আতঙ্কে রয়েছি। মাঝখানে এক প্রশাসনিক আধিকারিক এসে আমাদের ফোন দেখতে চান। এর মধ্যে বাইরের কারও সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়নি আমাদের।’’
আরও পড়ুন: ড্রাইভিং সিটে প্রিয়ঙ্কা, হাথরসের পথে রাহুল
নির্যাতিতার পরিবারের জন্য ইতিমধ্যেই ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে যোগী সরকার। এ ছাড়াও বাড়ি এবং পরিবারের এক সদস্যের জন্য গ্রুপ সি ক্যাটেগরির সরকারি চাকরির বন্দোবস্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ওই পরিবারের অন্য এক সদস্য বলেন, ‘‘গ্রামের অধিকারী (গ্রাম প্রশাসনের কর্তা) বিষয়টি মীমাংসা করে নিতে চাপ দিচ্ছেন আমাদের। কিন্তু আমরা ন্যায্য বিচার চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy