ছবি: এপি।
সাউথ ব্লকের রক্তচাপ বাড়াল হোয়াইট হাউস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের ৪৮ ঘণ্টা আগে ছোটখাটো বোমা ফাটালেন সে দেশের উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্তা। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানালেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতে গিয়ে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতার’ বিষয়টি জোরালো ভাবে তুলবেন। তাঁর কথায়, ‘‘সব ধর্মকে সমান সম্মান দেওয়ার বিষয়টি ভারতের সংবিধানের অন্তর্গত। গোটা বিশ্ব এ ব্যাপারে ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে।’’
সিএএ, এনআরসি-র প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত যখন উত্তাল, তখন আন্তর্জাতিক মানচিত্রে ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টায় মরিয়া দৌত্য চালাচ্ছে দিল্লি। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ, ইসলামি বেশ কিছু রাষ্ট্র বিষয়টি নিয়ে ভারতের সমালোচনা করছে। পাশাপাশি, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে সেখানকার মানবাধিকার নিয়ে। কূটনীতিকদের মতে, এত ধুমধাম করে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে আসার পরে যদি ফের ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ে, তা সম্যক বিড়ম্বনার কারণ হবে মোদী সরকারের কাছে।
ওয়াশিংটনে সাংবাদিক বৈঠকের গোড়াতেই ওই মার্কিন কর্তা বলেন, ‘‘গত বছর নির্বাচনের পর প্রথম বক্তৃতাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছিলেন, ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আরও বেশি করে মূল স্রোতে নিয়ে আসাটাই তাঁর অগ্রাধিকার। গোটা বিশ্বই এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, যাতে তারা আইন অনুযায়ী সবাইকে সমান ভাবে দেখে এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখে।’’ তাঁর এই বক্তব্যের সূত্র ধরে জানতে চাওয়া হয়, ভারত থেকে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সেখানকার মুসলমান বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব আইন এনে দেশছাড়া করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্য দেশ থেকে আসা মুসলমানদের নাগরিকত্ব হরণ করা হচ্ছে। এই নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কিছু বলার আছে ?
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-সফরেই চাকরির বন্যা, খোঁচা কংগ্রেসের
প্রশ্নটি কার্যত লুফে নিয়ে মার্কিন কর্তা বলেন, ‘‘আমার ধারণা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর প্রকাশ্য সমাবেশে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রসঙ্গ তুলবেন। বিশেষ করে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি তিনি তুলবেনই। কারণ মার্কিন প্রশাসনের কাছেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা দু’দেশই আইনের শাসন ও বিশ্বজনীন মূল্যবোধের শরিক। ভারতের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও ঐতিহ্যের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। এই ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য তাদের আমরা উৎসাহিত করে চলব। ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা, সব ধর্মের মানুষকে সমান ভাবে সম্মান করার বিষয়গুলি ভারতের সংবিধানেই আছে। এগুলি অবশ্যই প্রেসিডেন্টের সফরে উঠবে।’’
আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার আগে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে তাজমহল। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
ধর্মীয় স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার কথা বলে সফরের আগে মোদীকে সুস্পষ্ট বার্তা দিলেও কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি ওই মার্কিন কর্তা। শুধু বলেছেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারত এবং পাকিস্তান দু’টি দেশকেই নিয়ন্ত্রণ রেখার দু’পারে শান্তি এবং সুস্থিতি বজায় রাখার বার্তা দিয়ে চলবেন। ওই অঞ্চলে অশান্তি তৈরি হয়, এমন কোনও বিবৃতি বা পদক্ষেপ যাতে না-করা হয়, সে ব্যাপারেও অনুরোধ জানানো হবে দু’দেশকেই।’’
ট্রাম্প এর আগে একাধিবার কাশ্মীর প্রশ্নে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করার বার্তা দিয়েছেন। প্রত্যেকবারই ভারতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি একান্ত ভাবেই দ্বিপাক্ষিক। এ নিয়ে তৃতীয় কোনও পক্ষের নাক গলানোর প্রয়োজন নেই। আসন্ন সফরেও ট্রাম্প যে এই প্রসঙ্গ তুলবেন, তা মার্কিন কর্তার বক্তব্যে স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলবেন। দু’টি দেশ নিজেদের মধ্যে কথা বলে যাতে মতবিরোধ মিটিয়ে নেয়, তার জন্য উৎসাহিত করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy