ছবি: পিটিআই।
পাঁচ ঘণ্টায় ৪৮১টি ফোন! পুলিশের কাছে আতঙ্কিত মানুষজনের থেকে এত সংখ্যক ফোন কল পেল দিল্লি পুলিশ। রাজধানীতে ফের সংঘর্ষ ছড়ানোর আতঙ্কেই ওই ফোন গিয়েছিল রবিবার। যদিও দিল্লি পুলিশের দাবি, ওগুলি সবক’টিই গুজব। রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষের গুজব ছড়ানোর জন্য পুলিশ ইতিমধ্যেই কয়েক জনকে আটক করেছে। গোটা বিষয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
কেবলমাত্র পশ্চিম দিল্লি থেকেই গত কাল সন্ধ্যা ৭টা থেকে মাঝরাতের আগে পর্যন্ত ওই ৪৮১টি ফোন কল পেয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে তিলকনগর এলাকা থেকে ১৪৮টি, খয়াল পুলিশ স্টেশন এলাকা থেকে ১৪৩টি ফোন কল করা হয়েছে। এ ছাড়া, রজৌরি গার্ডেন, পঞ্জাবি বাগ, হরিনগর, মোতিনগর, জনকপুরী থেকে বহু ফোন করা হয়েছে দিল্লি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘দেখা গেল, সবক’টি ফোনই ভুয়ো। আসলে একটা আতঙ্ক যেন গ্রাস করেছে শহরে।’’
দিন তিনেক নতুন করে সংঘর্ষ হয়নি। তবে যেন শশ্মানের শান্তি উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। বড় রাস্তায় কড়া পুলিশি প্রহরার মধ্যে গাড়ি চলাচল করছে। লোকজনও বেরিয়েছেন রাস্তায়। তবে অলিগলিতে যেখানে হকারের ডাকে গমগম করত, সেখানে অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। এরই মাঝে দিল্লির দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে ও পশ্চিম দিল্লিতে সংঘর্ষের গুজব সামলাতে জেরবার হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। সংঘর্ষের আতঙ্কে দিল্লি পুলিশের কাছে এসেছে অজস্র ফোন। মেট্রো চলাচল বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ-প্রশাসন। সেই সঙ্গে গুজবে প্রভাবিত না হওয়ার জন্য আম জনতার কাছে টুইটারে আবেদনও করেছে দিল্লি পুলিশ।
আরও পড়ুন: এটা দিল্লি বা গুজরাত নয়, যে গুলি মারলে ছেড়ে দেব: অনুব্রত
গত কাল পশ্চিম দিল্লির খয়াল এলাকায় একটি জুয়ার আড্ডায় অভিযান চালানোর সময় থেকেই গুজবের সূত্রপাত। পুলিশের ওই শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ খয়াল এলাকায় অভিযানের সময় লোকজন ছোটাছুটি করতে শুরু করে। তা থেকেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। কেউ বলে, পুলিশ গুলি চালিয়েছে। কয়েকটি টিভি চ্যানেলে বলা হয়, কয়েক জন জুয়াড়ি পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ছে। তবে কোনওটাই সত্যি নয়।” উত্তর দিল্লি থেকেও ২৮টি ফোন কল পেয়েছে। এর মধ্যে দিল্লির বাইরে থেকে ২২২টি কল এসেছে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। তবে সে সবই ভুয়ো। তবে পুলিশের আশ্বাসেও আশঙ্কার মেঘ কাটছে না দিল্লিবাসীর মন থেকে। এখনও পর্যন্ত দিল্লিতে সাম্প্রতিক হিংসায় মৃত্যুর সংখ্যা ছুঁয়েছে ৪৬। আহত দু’শোরও বেশি। পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি নাগরিক কমিটিগুলিও তৎপর হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩৭০ নিয়ে চ্যালেঞ্জের শুনানি বৃহত্তর বেঞ্চে নয়, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আরপি মীনা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আমরা অসংখ্য ফোন পাচ্ছি। ওই এলাকায় থানা থেকে লোক পাঠানো হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, সব ফোন কলই ভুয়ো। আমরা এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি।’’ পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীরাই সংঘর্ষের গুজব ছড়াচ্ছে। দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক এমএস রনধাওয়া বলেন, ‘‘কিছু দুষ্কৃতী গুজব ছড়াচ্ছে। আমরা বেশ কিছু পিসিআর কল পেয়েছি। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গুজবে কান দেবেন না। বরং এ নিয়ে পুলিশকে জানান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy