Advertisement
E-Paper

বিচারপতি বদলি নিয়ে তোপ রাহুল-প্রিয়ঙ্কার, ‘রুটিন বদলি’ বললেন রবিশঙ্কর

বুধবার মধ্যরাতে মুরলীধরের বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। এর পরেই শুরু হয়েছে শাসক ও বিরোধী পক্ষের বিতণ্ডা।

রাহুল গাঁধী, বিচারপতি মুরলীধর এবং রবিশঙ্কর প্রসাদ। -ফাইল চিত্র।

রাহুল গাঁধী, বিচারপতি মুরলীধর এবং রবিশঙ্কর প্রসাদ। -ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৩:২৮
Share
Save

দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি মুরলীধরের বদলি নিয়ে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক চাপান-উতর তুঙ্গে। বুধবার মধ্যরাতে মুরলীধরের বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। এর পরেই শুরু হয়েছে শাসক ও বিরোধী পক্ষের বিতণ্ডা।

দিল্লির সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে মুরলীধর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে উঠেছে, সেই সব নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর করার বিষয়ে কেন্দ্রকে চিন্তাভাবনা করতে বলেন। তারই প্রেক্ষিতে এই রাতারাতি বদলির নির্দেশ কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী পক্ষের নেতারা।

ইতিপূর্বে ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে দিল্লি হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে একটি প্রস্তাব প্রকাশ করা হয়েছিল, যেখানে জানানো হয়, বার অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টের অন্যতম সেরা বিচারপতির এই বদলির নির্দেশে স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ। সর্বসম্মতিক্রমে বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা এই ঘটনার নিন্দা করছেন। অ্যাসোসিয়েশনের মতে, এই নির্দেশ বিচার ব্যবস্থার নিয়মের পরিপন্থী। তাঁরা আশা করছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। প্রস্তাবটি সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোও হয়। কিতু এই প্রস্তাব যে গ্রাহ্য হয়নি তা বুধবারের ঘটনাই প্রমাণ করে দিল।

আরও পড়ুন: রাজধানী যখন জ্বলছে, পুলিশ তখন আব্বুলিশ!

অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্রের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্তুতি’-র নিন্দা করেছে বার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া। বিচারপতি মিশ্র মোদীকে “আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত দূরদর্শী’’ ও “বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী” বলে বর্ণনা করেন। বার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এই ধরনের উক্তি বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষ ও স্বাধীন ভাবমূর্তির পক্ষে ক্ষতিকর। শাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের একটা সম্ভ্রমজনক দূরত্ব বজায় রাখা একান্ত কাম্য— এই মত বার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া ব্যক্ত করেছে।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী এদিন বিচারপতি মুরলীধরের বদলির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে এক হাত নেন। তিনি টুইটে লিখেছেন , “বিচারপতি লোয়ার কথা মনে পড়ছে, যাঁকে বদলি করা হয়নি”। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ব্রিজগোপাল হরকিষেন লোয়া ২০১৪ সালে মারা যান। তিনি সেই সময় গুজরাতের সোহরাবুদ্দিন শেখের হত্যা সংক্রান্ত তদন্তের মুখ্য তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। ওই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন অমিত শাহ। লোয়ার মৃত্যু নিয়ে বিপুল বিতর্ক শুরু হয়। যদিও ২০১৮-য় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই মৃত্যুকে ‘স্বাভাবিক’ বলে রায় দেয়, তবু গণমানসে লোয়ার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

আরও পড়ুন: পুলিশের হাল দেখে বিস্মিত বিচারপতি মুরলীধর

রাহুলের এই টুইটের পরই ময়দানে নেমে পড়ে বিজেপি। বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এক টুইট-বার্তায় জানিয়েছেন, মুরলীধরের বদলি কার্যত রুটিন বদলি। ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম এই বদলির নির্দেশ জারি করে। সেই মোতাবেকই কাজ চলছে। কিন্তু দিল্লির সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিত আর এই বদলির নির্দেশকে ‘কাকতালীয়’ হিসেবে দেখছেন না রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর মতো কংগ্রেস নেতারা।

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী তাঁর টুইটে লিখেছেন। “মধ্যরাতে বিচারপতি মুরলীধরের এঈ বদলির নির্দেশ বর্তমান পরিস্থিতিতে মোটেই আশ্চর্যের বিষয় নয়। কিন্তু নিশ্চিত ভাবে বেদনাদায়ক ও লজ্জাকর। “ তাঁর মতে এই ঘটনা সরকারের তরফে বিচারব্যবস্থার মুখে লাগাম পরানোর সমতুল। এতে দেশের বিচারব্যবস্থার উপরে জনগণের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অন্যদিকে আইন মন্ত্রী তাঁর টুইটে বলেছেন, লোয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টই রায় দিয়েছিল। রাহুলের এই প্রসঙ্গ আবার তুলে আনা মানে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে প্রশ্ন করা। তিনি লিখেছেন, “রাহুল গাঁধী কি নিজেকে সুপ্রিম কোর্টের ঊর্ধ্বে মনে করেন?” তাঁর মতে, কংগ্রেস এই বদলিকে ইচ্ছে করে রাজনৈতিক রং দিতে চাইছে। তাঁর আরও মন্তব্য, কংগ্রেস কার্যত একটি বিশেষ পরিবারের সম্পত্তি। এমন দলের এ ধরনের প্রশ্ন তোলার কোনও অধিকারই নেই। জরুরি অবস্থার সময় দেশের বিচার ব্যবস্থা, বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্ট ও তার বিচারপতিদের উপরে কী ধরনের নিয়ন্ত্রণ চালু ছিল, তা সকলেই জানেন। রবিশঙ্করের কথায়, ‘‘কোনও সিদ্ধান্ত তাদের (কংগ্রেসের) অপছন্দ হলেই তারা প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করে থাকে।’’

বুধবার রাত ১১টা নাগাদ রাষ্ট্রপতির তরফে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি মুরলীধরকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির নির্দেশ জারি করা হয়। নিয়ম মাফিক বদলির আগে বিচারপতিকে ১৪ দিন সময় দেওয়ার কথা। কিন্তু এই ‘রাতারাতি’ বদলির পিছনে অন্য কারণ বিদ্যমান— কংগ্রেসের এই মতকে উড়িয়ে দিয়ে এই বদলিকে ‘রুটিন’ হিসেবে দেখাতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব। আপাতত এই নিয়ে বিতণ্ডা তুঙ্গে।

CAA Protest Delhi Violence Citizenship Amendment Act

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।