Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
National News

মেরুকরণের ধার কি কমছে? আপ-ঝড়ে অমিত কোথায়

শনিবার রাত থেকেই ‘উধাও’ অমিত।

দলীয় বৈঠকেও ছিলেন না অমিত। ছবি: পিটিআই।

দলীয় বৈঠকেও ছিলেন না অমিত। ছবি: পিটিআই।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

শনিবার ভোট হল। বুথফেরত সব সমীক্ষা বলল, ফের আপের ঝড়। রাত ৩টে পর্যন্ত আসন ধরে ধরে বৈঠক করলেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। সেই বৈঠক ডেকেছিলেন অমিত শাহই। পর দিন সকালে ঘুম চোখেই দিল্লি বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি বললেন, ‘‘না না, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে ছিলেন না।’’

শনিবার রাত থেকেই ‘উধাও’ অমিত। তাঁকে ‘দূরে রাখা’র কৌশলও রচনা হয় তখন থেকে। গত কালও সংসদে আসেননি। যদিও দলের এক সাংসদের ছেলের বিয়েতে গিয়েছিলেন। আজ ছিল সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্বের শেষ দিন। হুইপ ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসেও একবার ঢুঁ মারেন। কিন্তু অমিতের দেখা নেই। অথচ দিল্লির ভোটের দু’সপ্তাহ আগে তিনিই প্রচারের পুরো দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। ঘুরে ঘুরে বলেছিলেন, শাহিন বাগে ‘কারেন্ট’ লাগাতে। ছোট-বড় মিলিয়ে দিল্লিতে ৫ হাজার সভার আয়োজন করেছেন। সব রাজ্য থেকে সাংসদ, নেতাদের দিল্লিতে এনে পাঠিয়ে দেন অলিতে-গলিতে। তাতেও দুই অঙ্কে পৌঁছল না তাঁর দলের বিধায়ক সংখ্যা।

অমিত শিবিরের অনেকের অবশ্য আপত্তি আছে ‘তাঁর দল’ তকমায়। তাঁদের মতে, দিল্লি ভোটের আগেই বিজেপির সভাপতি পদে এসেছেন জগৎপ্রকাশ নড্ডা। কাল রাতেই বার্তা গিয়েছে, ফল প্রতিকূলে গেলে নড্ডাকেই সামনে রাখবে দল। আজ সকাল থেকে হলও তাই। ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই খাঁ খাঁ করছে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির ঝাঁ চকচকে সদর দফতর। সেখানেই দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে উপস্থিত থাকলেন নড্ডা। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন তিনিই। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ হারও স্বীকার করলেন। কেজরীবালকে অভিনন্দন জানানোর টুইট করতে সন্ধে গড়াল মোদীর। অমিতের তখনও কোনও উচ্চবাচ্য নেই।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রধান সেনাপতি নেই। কিন্তু বিজেপির সৈনিকেরা আজ সংসদ চত্বরেই আলোচনা শুরু করেছেন, মেরুকরণের ধার কি তবে কমছে? আলোচনায় উপস্থিত বিজেপির অধিকাংশ সাংসদই মনে করেন, অমিতের কৌশলে ভুল ছিল না। শাহিন বাগের মতো একটি এলাকায় মুসলিমরা আবদ্ধ। দিল্লির জনতা তাই এখনও ‘বিপদ’ বুঝতে পারেননি। বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা বুঝেছেন, তাই গত বিধানসভার থেকে ভোট শতাংশ বেড়েছে। আসন না পেলেও। অমিত না-নামলে এটাও হত না। তবে দলের এক সাংসদের কথায়, ‘‘মেরুকরণের সঙ্গে উন্নয়নের বিষয়েও জোর দিলে লাভ হত বেশি। কারণ, কেজরীবাল মেরুকরণে পা দেননি। ফলে লড়াইটা একতরফা হয়ে গিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: আপের দিল্লি জয়ের ১৬টি কারণ, এক নজরে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।

কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, ‘‘অমিত শাহ ‘কারেন্ট’ লাগাতে চেয়েছিলেন, ‘শর্ট সার্কিট’ হয়ে গিয়েছে। ঝটকা খেয়ে এখন নিজেই গৃহবন্দি। (স্বরাষ্ট্র) মন্ত্রক চালাবেন কি?’’ বিজেপির এক নেতার মতে, দিল্লিতে কংগ্রেস ও বিজেপির একই হাল। দলের নেতারা কেউ কারও মুখ দেখতে চান না। যে কারণে গত বিধানসভাতেও বিজেপির নেতা-কর্মীরা কাজ করেননি। আজও ফল প্রকাশের পর বিজেপির অনেক নেতা ঘরে সমর্থকদের লাড্ডু খাইয়েছেন। তবে অমিত পরিশ্রম করে কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছিলেন। আসন মেলেনি ঠিকই। তবে তিনি না নামলে অনেক আসনে আপ প্রার্থীদের ভোট শতাংশের ব্যবধান কমত না।

সুনসান: ফল ঘোষণার পরে দিল্লিতে বিজেপির দফতর। ছবি: প্রেম সিংহ

বিজেপির দিল্লি প্রদেশ দফতরে পা রাখতেই অমিত শাহের ছবি। নীচে লেখা, ‘জয়ে অহঙ্কার নয়, হারেও হতাশা নয়’। আসতে-যেতে সেটি পড়েই স্বস্তি খুঁজছেন অনেকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy