ছবি: পিটিআই।
চারপাশে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। ৩ বছরের মেয়ে নাজনিনের গলা ব্যথা, সর্দি দেখে পূর্ব দিল্লির মান্ডাবলির মহল্লা ক্লিনিকে এসেছিলেন কৌসর বেগম। পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক সাধারণ সর্দি বলে জানাতেই দুশ্চিন্তা উধাও মায়ের। ওষুধ নিয়ে বাড়ির পথ ধরলেন। গোটাটাই নিখরচায়। সৌজন্যে কেজরীবাল সরকার।
বেশ ক’দিন ধরেই জ্বরে ভুগছেন পিঙ্কি কুশওয়া। তিনিও এসেছিলেন মহল্লা ক্লিনিকে। চিকিৎসককে দেখিয়ে রক্ত পরীক্ষাও সেরে নিলেন ক্লিনিকে, বিনা মূল্যেই।
ছোটখাটো সমস্যার চিকিৎসা, রক্তের যাবতীয় পরীক্ষার সুযোগ তো রয়েছেই। ডাক্তার দেখিয়ে বিনা মূল্যে ওষুধ পাওয়ার সুযোগও আমজনতাকে করে দিচ্ছে আপ সরকারের মহল্লা ক্লিনিক। শিক্ষার পাশাপাশি দিল্লিতে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরতে যা তুরুপের তাস হতে চলেছে বলেই দাবি আপ নেতৃত্বের। আসন্নপ্রসবা স্ত্রী-কে নিয়ে মহল্লা ক্লিনিকে এসেছিলেন অভয় ঠাকুর। তাঁর কথায়, ‘‘শুরুর দিন থেকেই মহল্লা ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা স্ত্রী-কে দেখছেন। আজ পর্যন্ত এক পয়সা খরচ হয়নি।’’ কিন্তু বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়ায় তা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না? মহল্লা ক্লিনিকের চিকিৎসক উমেশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘সেই আশঙ্কা থাকে। তবে নার্সেরা পাখি পড়ার মতো বুঝিয়ে দেন যে ওষুধ না খেলে রোগ ঠিক হবে না। তখন পয়সা খরচ করে দামি নার্সিংহোমে যেতে হবে। তাতে কাজ হয় অনেকটা।’’
আজ ভোট দিল্লিতে
• আসন: ৭০
• প্রার্থী: ৬৭২
• ভোটদাতা: ১ কোটি ৪৭ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩৮২
• বুথ: ১৩,৭৫০
• ভোটকর্মী: ৯০,০০০
• ফল: ১১ ফেব্রুয়ারি
২০১৫-র ভোট-চিত্র
• আপ: ৬৭ • বিজেপি: ৩
প্রতি দিন সকাল আটটায় খুলে যায় মহল্লা ক্লিনিক। চলে বেলা দু’টো পর্যন্ত। সারা দিনে গড়ে ২০০-২৫০ জন রোগীকে সামলাতে হয় চিকিৎসকদের। থাকেন নার্স ও রক্ত পরীক্ষার কর্মীরা। উমেশের মতে, ‘‘রোগীদের অধিকাংশ গরিব থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির। উচ্চ মধ্যবিত্তরা এখনও ভরসা পাচ্ছেন না মহল্লা ক্লিনিকে।’’
আরও পড়ুন: শাহিন বাগে শিশুমৃত্যুর শুনানি দিল্লি ভোটের পরে সোমবার
পাঁচ বছর আগে ক্ষমতায় এসে মূলত তিনটি বিষয়ে জোর দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। প্রথম— পানীয় জল। প্রতিদিন যা ঘরে ঘরে বিনা মূল্যে পৌঁছে দিচ্ছে আপ সরকার। দ্বিতীয়, শিক্ষা। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তাঁর সরকার ভোল পাল্টে দেয় সরকারি স্কুলগুলির। তৃতীয়, স্বাস্থ্য। বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকে দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে মহল্লা ক্লিনিক খোলার সিদ্ধান্ত নেয় কেজরীবাল সরকার। এই মুহূর্তে গোটা দিল্লিতে ৩০০-এর বেশি মহল্লা ক্লিনিক রয়েছে। যাতে ১১৫ রকমের ওষুধ দেওয়া হয় এবং ২০০-র বেশি পরীক্ষা বিনা মূল্যে করা হয়। ফলে চাপ কিছুটা কমেছে সরকারি হাসপাতালগুলির।
যদিও এক সময়ে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল স্বজনপোষণের। অভিযোগ, মহল্লা ক্লিনিক প্রকল্পের পরামর্শদাতা হিসাবে নিজের মেয়েকে নিযুক্ত করেছিলেন সত্যেন্দ্র। পরে মেয়েকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হন তিনি। এ প্রশ্নও উঠেছে, দিল্লি সরকারের যে সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে, সেগুলির সংখ্যা না বাড়িয়ে মহল্লা ক্লিনিকের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হল কেন। বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারির অভিযোগ, অধিকাংশ মহল্লা ক্লিনিক চলছে আপ কর্মীর বাড়িতে। যার ভাড়া গুনছে সরকার। যা ওই এলাকার ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি। প্রতি রোগী পিছু এক জন চিকিৎসক পাচ্ছেন ৪০ টাকা। যা যোগ করলে দিল্লি সরকারের সরকারি চিকিৎসকদের আয়কে ছাপিয়ে যাবে। এ ছাড়া, নার্স ও পরীক্ষানিরীক্ষা করার কর্মীরা হয় আপ সমর্থক বা তাঁদের পরিবারের লোকেরা আপের সঙ্গে যুক্ত বলে তাঁদের অভিযোগ।
অটোচালক উমেশ যাদব বলছেন, ‘‘দুর্নীতি হচ্ছে কি না জানি না। কিন্তু মহল্লা ক্লিনিক চালু হওয়ায় হাতুড়েদের আয় কমেছে, আর আমাদের মতো লোকেদের খরচ বেঁচেছে। আগে সামান্য জ্বরে পাড়ার হাতুড়ে চিকিৎসক ১০০ টাকা নিত। ওষুধও কিনতে হত। এখন এক পয়সাও লাগছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy