Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

আমপানের মোকাবিলায় ফোনে মমতাকে সহযোগিতার আশ্বাস অমিতের

অতীতে বুলবুল ঝড়ের সময় আর্থিক সাহায্য বা কোভিড প্রশ্নে রাজ্য সরকারের সমালোচনা— কোনও ক্ষেত্রেই রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনায় পিছপা হয়নি কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৩:৫৮
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় আমপানের মোকাবিলায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দুপক্ষের আলোচনায় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু সেই ফোনালাপের পরেই প্রশ্ন উঠেছে যে, সৌজন্যের আবহ কি আগামী দিনেও বজায় থাকবে? নাকি ঝড় কেটে যাওয়ার পরেই নতুন করে আমপান নিয়ে রাজনৈতিক ঝড় উঠবে? কারণ অতীতে বুলবুল ঝড়ের সময় আর্থিক সাহায্য বা কোভিড প্রশ্নে রাজ্য সরকারের সমালোচনা— কোনও ক্ষেত্রেই রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনায় পিছপা হয়নি কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি।

আজ বিকেলে ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও একপ্রস্ত বৈঠক করেন দুই রাজ্যের আমলাদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের মতে, বর্তমান পরিস্থতিতে ওই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য রাজ্যগুলির করোনা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও। মূলত তাঁরই নির্দেশে এখন কেন্দ্রের লক্ষ্য হল যথাসম্ভব ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে ওই ঝড়ের মোকাবিলা করা। সে কারণে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে দিল্লির সুষ্ঠু সমন্বয় গড়ে তোলার উপরে জোর দিয়েছে মোদী সরকার। বিজেপি সূত্রের দাবি, অতীতের মতো এ ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গকে যথাসম্ভব সাহায্য করা হচ্ছে। বিরোধী রাজ্য বলে কোনও রাজনীতি করা হচ্ছে না। বিজেপি নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন যে, অমিত শাহ ফোন করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের পাশে রয়েছে। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য ব্যর্থ হলে বিজেপি বিরোধী দল হিসেবে আঙুল তুলবেই। সেটাই বিরোধী দলের কাজ। কেন্দ্র রাজ্যকে সব ধরনের সাহায্য দেওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন, সেই প্রশ্নে আক্রমণ শানাবেই বিজেপি।

অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কেন্দ্রীয় সাহায্যের প্রশ্নে মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী তৃণমূল নেতৃত্বও। দলের কথায়, বুলবুল ঝড়ের সময়েও এ ভাবেই সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল কেন্দ্র। ঝড়ের পরে রাজ্যের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ভাবে ১১ হাজার কোটি টাকার হিসেব পাঠিয়েছিল রাজ্য। পরে চূড়ান্ত রিপোর্টে তা কমিয়ে সাত হাজার কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাতে সাহায্য আসে মাত্র হাজার কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রেও শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সাহায্য কতটা বাস্তবে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের এক সাংসদের কথায়, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় দল অবশ্যই স্বাগত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পুনর্গঠনে আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন হলেই তখন মুখ ফিরিয়ে নেয় কেন্দ্র। তখনই শুরু হয় রাজনীতি।’’

আরও পড়ুন: জুনে চরম করোনার সংক্রমণ, আশার রেখা অক্টোবরে

আরও পড়ুন: সম্পত্তি ও জলকর রাজ্যকে বাড়াতে হবে, শর্ত কেন্দ্রের

ওই সাংসদের মতে, সম্প্রতি কোভিড মোকাবিলার প্রশ্নেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী করোনা সংক্রান্ত একাধিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, কোনও রাজ্য করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলে, তা সেই রাজ্যের ব্যর্থতা হিসেবে তুলে ধরা হবে না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ছুতোনাতায় পশ্চিমবঙ্গ বা মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপি বিরোধী রাজ্যে করোনা প্রশ্নে আক্রমণ শানাতে পিছপা হচ্ছে না কেন্দ্র তথা শাসক দল বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কোভিডের প্রশ্নে একের পর এক কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সময়ে কিট দেওয়া হয়নি। শ্রমিক স্পেশাল চালানোর প্রশ্নে রাজনীতি করতেও পিছপা হয়নি কেন্দ্র। ভবিষ্যতে আমপানকে নিয়ে যে এমন হবে না, সেই ভরসা কোথায়—প্রশ্ন তৃণমূলের।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Amit Shah Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE