গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুত করে আক্রান্ত হলেন ২৪ হাজার ৮৫০ জন। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা রোজ দিন বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহে যেখানে ২৪ ঘণ্টায় বাড়ছিল ১৮ থেকে ২০ হাজার মতো। সেটাই গত দু’দিন ধরে ২২-২৪ হাজার ছুঁয়ে ফেলেছে। যার জেরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৮৫০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বাধিক। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ছ’লক্ষ ৭৩ হাজার ১৬৫ জন।
আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে মোট মৃত্যু ১৯ হাজার পার করল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬১৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ১৯ হাজার ২৬৮ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ৬৭১ জনের। রাজধানী দিল্লিতে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে মৃত্যু সংখ্যা রবিবার তিন হাজার ছাড়াল। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৯২৫ জন। গত মাসের শেষ দিক থেকে তামিলনাড়ুতেও ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে করোনার জেরে প্রাণহানি। যার জেরে দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত এক হাজার ৪৫০ জন। উত্তরপ্রদেশ (৭৭৩), পশ্চিমবঙ্গ (৭৩৬) ও মধ্যপ্রদেশে (৫৯৮) মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪৮৭),কর্নাটক (৩৫৩), তেলঙ্গানা (২৮৮), হরিয়ানা (২৬০), অন্ধ্রপ্রদেশ (২১৮), পঞ্জাব (১৬২) ও জম্মু ও কাশ্মীর (১২৭)।
আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখন দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে বেশি। দেশে মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রবিবার সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটা চার লক্ষ ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৮৫৬ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট চার লক্ষ ন’হাজার ৮৩ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে দিয়েছিল কেরল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে তা বল্গাহীন ভাবেই বেড়েছে। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। রবিবার সে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজার ৭৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৬৪ জন। শনিবার এক লক্ষের গণ্ডি পার করেছিল তামিলনাড়ু। গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজারেরও বেশি বেড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল এক লক্ষ সাত হাজার এক জন। দিল্লিও এক লক্ষের দিকে এগোচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় আড়াই হাজার বেড়ে রাজধানীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ৯৭ হাজার ২০০ জন। দেশের মোট সংক্রমণের মধ্যে ৬০ শতাংশই এই তিনটি রাজ্য থেকে।
৩৫ হাজার ৩১২ সংক্রমণ নিয়ে গুজরাত ও ২৬ হাজার ৫৫৪ আক্রান্ত নিয়ে উত্তরপ্রদেশ, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে। তেলঙ্গানা, কর্নাটক ও পশ্চিমবঙ্গের মোট আক্রান্ত ২০ হাজারে গণ্ডি পার করে ছুটে চলেছে। তেলঙ্গানা (২২,৩১২), কর্নাটক (২১,৫৪৯) ও পশ্চিমবঙ্গে (২১,২৩১) জন আক্রান্ত হয়েছেন। রাজস্থান (১৯,৫৩২), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৭,৬৯৯), হরিয়ানা (১৬,৫৪৮), মধ্যপ্রদেশও (১৪,৬০৪) ছুটছে কুড়ি হাজারের দিকে। বিহার (১১,৭০০) ও অসম (১০,৬৬৮) দশ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছেওড়িশা, জম্মু ও কাশ্মীর, পঞ্জাব, কেরল, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলি।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও নতুন করে অনেক বেশি সংক্রমণ হচ্ছে। শেষ ক’দিনে দৈনিক বৃদ্ধি ৬০০ পার করে ৭০০ ঘরে ঢুকে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৪৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ২১ হাজার ২৩১ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৭৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy