ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬৭৫ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
গত কয়েকদিনের তুলনায় বেশ খানিকটা কমল করোনায় নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা। গত চারদিনে দৈনিক সংক্রমণ হচ্ছিল ৬০ হাজারেরও বেশি। সেই সংখ্যাটা মঙ্গলবার কমে হয়েছে ৫৩ হাজার। গতকালের তুলনায় আজ করোনা পরীক্ষাও হয়েছে অনেক বেশি। সেই সঙ্গে কমেছে সংক্রমণ হারও।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫৩ হাজার ৬০১ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে, আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৯ হাজার ৫১৭ ও ২২ হাজার ৪৮ জন। সংক্রমণ কমলেও, এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলের উপরেই রইল ভারত। এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬৭৫ জন। সেখানে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫০ লক্ষ ৯৪ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩০ লক্ষ ৫৭ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। সোমবার এই হার ছিল ১৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় তা কমে হয়েছে ৭.৬৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৯০ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও শুরু থেকেই স্বস্তি দিয়ে আসছে। এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪৮৯ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৯ শতাংশের বেশি সুস্থ হয়ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৭ হাজার ৭৪৬ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর নিরিখে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৮৭১ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৪৫ হাজার ২৫৭ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৮ হাজার ৫০ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত আজ পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা ৪ হাজার ১৩১ জন।
জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি ৩ হাজার ৩১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে ২ হাজার ৬৭২ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। উত্তরপ্রদেশ (২,১২০), পশ্চিমবঙ্গ (২,১০০) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (২,১১৬) মৃতের সংখ্যা রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (১,০১৬), রাজস্থান (৮০০), তেলঙ্গানা (৬৪৫), পঞ্জাব (৬০৪), হরিয়ানা (৪৮৯), জম্মু ও কাশ্মীর (৪৭৮), বিহার (৩৯৭), ওড়িশা (২৮৬), ঝাড়খণ্ড (১৮৮) ও উত্তরাখণ্ড (১৩৪)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫১৩ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৩ লক্ষ ২ হাজার ৮১৫ জন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫২৫ জন। সংক্রমণের নিরিখে চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৮২ হাজার ৮৭ জন। তবে জুলাই থেকেই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। রাজধানীতে এখনও অবধি মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪৬ হাজার ১৩৪ জন। উত্তরপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৭২২ জন।
পশ্চিমবঙ্গ (৯৮,৪৫৯), তেলঙ্গানা (৮২,৬৪৭), বিহার (৮২,৫৫০), গুজরাত (৭২,০৩১), অসম (৬১,৭৩৭), রাজস্থান (৫৩,৬৭০) ও ওড়িশাতে (৪৭,৪৫৫) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে হরিয়ানা (৪২,৪২৯), মধ্যপ্রদেশ (৩৯,৮৯১), কেরল (৩৫,৫১৫), জম্মু ও কাশ্মীর (২৫,৩৬৭), পঞ্জাব (২৪,৮৮৯), ঝাড়খণ্ড (১৮,৭২৩), ছত্তীসগঢ় (১২,৪৪৮) ও উত্তরাখণ্ড (১০,০২১)-এর মতো রাজ্য। গোয়া, ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমাচল প্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।
পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে ২ হাজার ৯০৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৯৮ হাজার ৪৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। করোনার কবলে রাজ্যে এখনও অবধি মোট প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ১০০ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy