Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

শ্রমিক ফেরাতে ১০৫ ট্রেন, কটাক্ষ কেন্দ্রের

এ দিন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা ট্রেন চালানোর বিষয়টি নিয়ে রেল মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতেই ফের আসরে নামেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

ঘরে ফেরা: শান্তিনিকেতনের মোলডাঙা থেকে প্রশাসনের উদ্যোগে ঝাড়খণ্ডে ফিরলেন এই শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

ঘরে ফেরা: শান্তিনিকেতনের মোলডাঙা থেকে প্রশাসনের উদ্যোগে ঝাড়খণ্ডে ফিরলেন এই শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ০৩:৩০
Share: Save:

ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরি করল রাজ্য সরকার। বিভিন্ন রাজ্য ও রেল মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনার পরে আজ নবান্নের তরফে জানানো হয়, আগামী শনিবার থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ১০৫টি ট্রেনে করে ১৮টি রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরবেন। তাতেও অবশ্য কেন্দ্র-রাজ্য বাদানুবাদ থামছে না।

গোড়ার দিন থেকেই কেন্দ্র তথা বিজেপির অভিযোগ, অন্যান্য রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে সক্রিয় হলেও, হাত গুটিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ। তারা শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে না। যা নস্যাৎ করে রাজ্যে আসতে চলা ট্রেনের তালিকা প্রকাশ করে নবান্ন।

এ দিন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা ট্রেন চালানোর বিষয়টি নিয়ে রেল মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতেই ফের আসরে নামেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তিনি টুইট করে বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ গত ১৫ দিনে ৪০০টি ট্রেনে বিভিন্ন রাজ্য থেকে শ্রমিকদের ফিরিয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গ তার শ্রমিকদের ঘরে ফেরায় বাধা দিচ্ছে।’ ঘটনাচক্রে আজই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও মধ্যপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে তুলনা করে জানান, এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ মাত্র সাতটি শ্রমিক স্পেশালকে রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। সেখানে উত্তরপ্রদেশ ৪০০টি, মধ্যপ্রদেশ ৬৭টি ট্রেন চেয়েছে।

আরও পড়ুন: এক দিনে পাঁচ হাজার নমুনা পরীক্ষায় হ্যাটট্রিক করল স্বাস্থ্য দফতর

এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া রাজ্যবাসীকে ঘরে ফেরাতে তাঁর সরকার দায়বদ্ধ। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই সরাসরি তাঁকে আক্রমণ করে পীযূষের টুইট: ‘পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে প্রতিদিন ১০৫টি ট্রেন চালানো প্রয়োজন। সেখানে রাজ্য এক মাসে ১০৫টি ট্রেনের অনুমতি দিয়েছে।’ এখানেই না-থেমে তিনি লেখেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের পশ্চিমবঙ্গ যদি নিতে রাজি না-হয়, তা হলে আমরা তাঁদের, এমনকি শিশুদেরও কয়েকশো কিমি পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে দেখব।’

নবান্ন সূত্রের পাল্টা বক্তব্য, গত দেড় মাস ধরে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্রের কোনও মাথাব্যথা ছিল না। তাদের উদাসীনতার জন্যই পথে প্রাণ গিয়েছে বহু শ্রমিকের। সেই দায় ঝেড়ে ফেলতেই এই রাজ্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ব্যস্ত কেন্দ্র।

কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের একসঙ্গে ফেরানো হচ্ছে না কেন? নবান্ন সূত্রের বক্তব্য, এঁদের অনেকের শরীরেই করোনাভাইরাস থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে রাজ্যে আসার পরে তাঁদের ভাল করে পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে আইসোলেশনে রাখতে হবে। এটা না-করলে রাজ্যে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়বে। আবার যাঁদের করোনা হয়নি, তাঁদের স্টেশন থেকে বাস-গাড়িতে করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নবান্নের কর্তাদের মতে, এক সঙ্গে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে এসে পড়লে এই সব বন্দোবস্ত করা কঠিন। তাই ধাপে ধাপে তাঁদের আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কেন্দ্রের অবশ্য বক্তব্য, রাজ্যের উচিত দ্রুত পরিকাঠামো গড়ে তোলা। পীযূষের আগে রাজ্যকে চিঠি দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে বিঁধেছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্য পাল্টা দাবি করে, রেলের কারণেই পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: হাতে এক নয়া পয়সাও নয়, পরিযায়ী-পাতে শুধুই চাল, ডাল

নবান্ন সূত্রের দাবি, আটকে পড়া মানুষদের ফেরাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনা করতে হয়। দুই রাজ্য এক মত হলে সূচি নিয়ে রেলের সঙ্গে আলোচনা হয়। কোনও রাজ্য থেকে বেশির ভাগ মানুষ কোন জেলায় ফিরবেন, সেই বুঝে তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট সব মহলকে জানাতে হয়। কারণ, যে জেলায় সর্বাধিক মানুষ ফিরবেন, সেই জেলাতেই ট্রেন পৌঁছনোর কথা। সেই কারণে রেলের তরফে পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি না-পাওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা যাচ্ছিল না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy