প্রতীকী ছবি
দেশ জুড়ে ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নেভানো হলে আচমকা জোরাল ধাক্কা খেতে পারে পাওয়ার গ্রিড। আবার ৯টা বেজে ৯মিনিটের পরেই দেশ জুড়ে তৈরি হবে বিদ্যুতের বিপুল চাহিদা। এই টানাপড়েনে ঘটতে পারে বড়সড় বিপর্যয়। বিপত্তি এড়াতে রবিবার রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ধাপে ধাপে লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত নিল উত্তরপ্রদেশের বিদ্যুৎ দফতর। রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের মতে, এমন কৌশলে প্রধানমন্ত্রীর আর্জিও রক্ষা হবে। আবার পাওয়ার গ্রিডেও বাড়তি চাপ পড়বে না। ওই বিশেষ ৯ মিনিট দেশের প্রতিটি বিদ্যুৎ সংস্থাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ জারি করেছে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডও।
স্টেট লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের (এসএলডিসি) কর্তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর কথা মতো, রবিবার রাত ৯টা থেকে ৯টা বেজে ৯ মিনিট পর্যন্ত দেশ জুড়ে বাড়ির আলো নেভানো হলে উত্তরপ্রদেশের পাওয়ার গ্রিডে বিপুল চাপ পড়বে। অন্তত ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাড়তি হবে। ওই ‘বিপুল পরিমাণ’ বিদ্যুৎ জোরাল ঘা দিতে পারে পাওয়ার গ্রিডে। সেই দুর্ঘটনা ঘটলে রাজ্য জুড়ে নেমে আসতে পারে অন্ধকার। করোনা সঙ্কটের মধ্যে এই বিপত্তি সামলানোই এখন চ্যালেঞ্জ বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের কাছে। এ নিয়ে দফতরের কর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছেন এসএলডিসি-র ডিরেক্টর রাম স্বরথ। তাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রবিবার রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ধাপে ধাপে যেন লোডশেডিং করা হয়। তাতে সামলানো যাবে বিপর্যয়।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দেন, করোনা সঙ্কটে যে অন্ধকার তৈরি হয়েছে, তা শেষ করতে আলোর দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য ১৩০ কোটি দেশবাসীকে ‘মহাশক্তি’ জাগ্রত করার আর্জি জানান তিনি। মোদীর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা শশী তারুর। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘রবিবার রাত ৯টায় বিদ্যুতের চাহিদা আচমকা কমবে, এবং রাত ৯টা ৯ মিনিটের পর চাহিদা আচমকা বাড়বে, প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুতের গ্রিডে বিপর্যয় ঘটাতে পারেন। তাই বিদ্যুৎ দফতর ওই দিন রাত ৮টা থেকে ধাপে ধাপে লোডশেডিংয়ের চিন্তা ভাবনা করছে এবং ধাপে ধাপে তা ফিরবেও। রাত ৯টা বেজে ৯ মিনিট থেকে তা স্বাভাবিক হতে থাকবে। এটা আরও একটা ব্যাপার, যা প্রধানমন্ত্রী চিন্তাই করেননি!’
An unprecedented drop in electricity demand at 9pm Sunday &an immediate surge at 9.09 pm could cause the electrical grid to crash. So Electricity Boards are contemplating load shedding from 8 pm & staggered return to normal after 9.09pm. One more thing the PM didn’t think about! pic.twitter.com/zbmcyYm838
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) April 4, 2020
আরও পড়ুন: এক লাফে ৬০১ বেড়ে দেশে করোনা আক্রান্ত ২৯০২, মৃত্যু বেড়ে ৬৮
শুক্রবার পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (পিজিসিআইএল)-এর কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আরকে সিংহ। এর পর রবিবার ৯টা থেকে ৯টা বেজে ৯মিনিট পর্যন্ত দেশের সমস্ত বিদ্যুৎ সংস্থাকেই বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে বলেছে পিজিসিআইএল। বলা হয়েছে,
• ৫ এপ্রিল ওই নির্দিষ্ট সময়ে চূড়ান্ত ভাবে সতর্ক থাকতে হবে। কোনও রকম অস্বাভাবিকতা দেখলে বা সাহায্য প্রয়োজন হলে দ্রুত ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সেন্টার (এনটিএএমসি)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
• পরিষেবা মসৃণ ভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে স্টেশন ইন চার্জ ও আধিকারিকদের নিজেদের অফিসের কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত থাকতে হবে। স্পেশ্যাল ডিউটিতে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের বিস্তারিত বিবরণ ও মোবাইল নম্বর এনটিএএমসি-কে ৪ এপ্রিলের মধ্যে জানাতে হবে
• করোনা রুখতে সামাজিক দূরত্ব মেনে ও মাস্ক ব্যবহারের মতো সতর্কতা মেনে এই কাজ করতে হবে
এর আগে ২০১২ সালের জুলাই মাসের শেষাশেষি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারত জুড়ে পাওয়ার গ্রিড বিপর্যয় নেমে এসেছিল। তার কবলে পড়েছিল উত্তরপ্রদেশও।
মোদীর উল্টো যুক্তি দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিদ্যুৎমন্ত্রী নিতিন রাউত-ও। তাঁর মতে, একসঙ্গে সব আলো নেভালে ভেঙে পড়তে পারে গ্রিড ব্যবস্থা। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জরুরি পরিষেবা।
If all lights are switched off at once it might lead to failure of grid. All our emergency services will fail&it might take a week's time to restore power.I would appeal to the public to light candles&lamps without switching off lights:Nitin Raut,Maharashtra Energy Minister (3.4) pic.twitter.com/2j2gtOoJKi
— ANI (@ANI) April 4, 2020
আরও পড়ুন: এক দিনে ১৫০০ মৃত্যুর ধাক্কা আমেরিকায়, বিশ্বে আক্রান্ত ছাড়াল ১১ লক্ষ
রাজ্যের জনসাধারণের প্রতি একটি বার্তায় নিতিন বলেছেন, ‘‘একসঙ্গে সব আলো নিভিয়ে দিলে তা বিদ্যুতের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বিস্তর ফারাক তৈরি করবে। এমনিতেই লকডাউনের জন্য কারখানা বন্ধ। ফলে ২৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে চাহিদা নেমে ১৩ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।’’ তার উপর এমন ঘটনা ঘটলে যে বিপদের আশঙ্কা আছে সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নিতিন বলেছেন, ‘‘একসঙ্গে সব আলো নিভিয়ে দিলে ব্ল্যাকআউট হতে পারে। তখন পুরো পরিষেবা ফের চাঙ্গা করতে তুলতে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। করোনার মতো অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিদ্যুৎ খুবই প্রয়োজনীয়।’’ সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ছুঁই ছুঁই। এর মধ্যে নিতিন রাউত যে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী, সেই মহারাষ্ট্রেই ওই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা চারশোর গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে, যা সারা দেশে সবচেয়ে বেশি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy