লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতাল পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
টানা প্রায় ছ’সপ্তাহের লকডাউনের মধ্যেও রোজ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। শুধু যে মোট আক্রান্ত বাড়ছে তাই নয়, নতুন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধিতেও প্রায় প্রতিদিন নয়া নজির তৈরি হচ্ছে দেশে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দাবি করলেন, বিশ্বের মধ্যে ভারতেই মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময়ের ব্যবধানও বেড়েছে। অর্থাৎ আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে সময় লাগছে কম। হর্ষবর্ধন আরও বলেন, করোনা আক্রান্তরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।
রবিবার দিল্লির লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতাল পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় কেমন প্রস্তুত ওই হাসপাতাল, তা খতিয়ে দেখেন তিনি। কথা বলেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে।
লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনে ভাগ করে আলাদা পরিকল্পনা— এই সব পদক্ষেপের জেরে অন্যান্য বহু দেশের তুলনায় ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কম। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভারতের করোনা মোকাবিলার প্রশংসা করা হচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যেও দেশে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। রবিবারও নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি মানুষ (২৬৪৪)। ২৪ ঘণ্টায় এত সংখ্যক মানুষের কোভিড-পজিটিভ হওয়ার নজির নেই দেশে। একই ভাবে নতুন মৃত্যুর সংখ্যাতেও রেকর্ড তৈরি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের।
দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৯৮০। মোট মৃত ১৩০১। এই হিসেবে মৃত্যুর হার ৩.২৫ শতাংশের মতো। হর্ষবর্ধনের দাবি, এই মৃত্যুর হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম।
Today more than 10,000 COVID19 patients have been discharged. Those still admitted at hospitals are on the road to recovery. If in last 14 days doubling rate was 10.5 days, then today it's around 12 days.Our mortality rate of 3.2% is the lowest in the world: Union Health Minister pic.twitter.com/YnQpnJ9IeJ
— ANI (@ANI) May 3, 2020
আরও পড়ুন: ‘ডাক্তাররা ধরেই নিয়েছিলেন আমি মরছি’, মুখ খুললেন বরিস জনসন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কত দ্রুত বাড়ছে, বা সংক্রমণের প্রবণতা নির্ধারণ করতে আক্রান্তের সংখ্যা কত দিনে দ্বিগুণ হচ্ছে, তাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে ভারতে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকও প্রতি সপ্তাহে সেই দ্বিগুণ হওয়ার সময় নির্ধারণ করছে। এ দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, ‘‘গত ১৪ দিনে যেখানে ১০.৫ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল, এখন সেখানে সময় লাগছে ১২ দিন।"
কিন্তু এই দ্বিগুণ হওয়ার সময়ের হিসেবকে বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ গুরুত্ব দিতে চান না। তাঁদের বক্তব্য, এতে সংক্রমণ বৃদ্ধির হারের সঠিক চিত্র পাওয়া কঠিন। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, আক্রান্তের সংখ্যা ৫ থেকে বেড়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ১০ হতে যে সময় লাগবে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার হতে তার চেয়ে অনেক বেশি সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। অথচ ৫ থেকে ১০ হলে আক্রান্ত বাড়বে ৫ জন, কিন্তু ৫ হাজার থেকে বেড়ে ১০ হাজার হলে আসলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে ৫ হাজার। সংখ্যার এই তারতম্যেই বোঝা যায়, এতে আক্রান্তের সঠিক গ্রাফ পাওয়া কার্যত সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: মৃত্যু-আক্রান্তে ফের রেকর্ড, দেশে করোনা আক্রান্ত ৪০ হাজার ছুঁইছুঁই, মৃত ১৩০১
রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া হিসেবে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০৬৩৩ জন। সেই তথ্য দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, যাঁরা কোভিড পজিটিভ হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই সুস্থ হওয়ার পথে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy