গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করোনার দৈনিক লাফ রোজ কোথায় পৌঁছবে, সেটাই ক্রমশ বোঝা দুষ্কর হয়ে পড়ছে। ভারতে নতুন সংক্রমণের রেকর্ড রোজই। গত ২৪ ঘণ্টায় সেই সংখ্যাটা ২৮,৬৩৭। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে, মোট রোগীর সংখ্যা আজ ৮.৪৯ লক্ষ। রাতে আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় তা ৮.৬৭ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। দেশে মোট রোগীর সংখ্যা ৭ থেকে ৮ লক্ষে পৌঁছেছিল ‘রেকর্ড’ ৪ দিন সময়ে। যে গতিতে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সেই রেকর্ডও ভাঙার আশঙ্কা প্রবল।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫১ জনের মৃত্যুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২,৬৭৪। স্বাস্থ্য মন্ত্রক রোজকার মতোই আশ্বস্ত করে চলেছে যে, অ্যাক্টিভ রোগীর চেয়ে সুস্থের সংখ্যা বাড়ছে। আজ সেই ব্যবধান ২,৪২,৩৬২। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা এখনও ২.৯২ লক্ষ, সেখানে সুস্থের সংখ্যা ৫.৩৪ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। গত কাল থেকে আজ পর্যন্ত ১৯,২৩৫ জন সুস্থ হয়েছেন। দেশে মোট আরোগ্যের হার বাড়তে বাড়তে পৌঁছেছে ৬২.৯৩ শতাংশে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ ও যথাযথ পদক্ষেপের পাশাপাশি সময়মতো রোগ ধরা পড়ছে বলেই দেশে সুস্থের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় ৮,৩৮৬.৪ জনের কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে।
আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘ভাল জায়গায়’ রয়েছে ভারত। গুরুগ্রামের কদরপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানের পরে তিনি বলেন, ‘‘গোটা দুনিয়া দেখছে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সফল যুদ্ধ যদি কোথাও হয়ে থাকে, তা হলে সেটা ভারতে— নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হয়ে আমরা কী ভাবে লড়ব, তা ভেবে অনেকে ভয় পেয়েছিলেন। আজ আমরা ভাল জায়গায় রয়েছি। ভয়ের প্রশ্ন নেই।’’ করোনা-যুদ্ধে আধাসেনা যে ভূমিকা নিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি তার জন্য গর্বিত বলে জানান অমিত।
আরও পড়ুন: সপ্তাহান্তে বন্ধ থাকবে বাজার-অফিস, সংক্রমণ ঠেকাতে ঘোষণা যোগীর
আরও পড়ুন: বিদ্রোহী পাইলট দিল্লিতে, রাজস্থানও কি মধ্যপ্রদেশ হচ্ছে কংগ্রেসের
দিল্লির পরিস্থিতি সামলাতে সক্রিয় হয়েছিলেন অমিত। তবে অরবিন্দ কেজরীবাল সরকারকেও কৃতিত্ব দিয়েছে কেন্দ্র। জুলাইয়ে দিল্লিতে গৃহ-নিভৃতবাসে থাকা এক জন রোগীও মারা যাননি। আজ দিল্লি সরকার বলেছে, বাড়িতে থাকা সমস্ত রোগীকে পাল্স অক্সিমিটার দেওয়ার ফলেই এই সাফল্য। কেজরীও এই যন্ত্রকে ‘সুরক্ষা কবচ’ বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, উপসর্গহীন বা সামান্য আক্রান্তদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে পাল্স অক্সিমিটার থাকার ফলে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রার উপরে সব সময় নজর রাখা যাচ্ছে। অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে রোগীরা ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
করোনায় মৃতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে আজ জনস্বার্থ মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, দ্রুত সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলেই দেশে মৃত্যুহার ২.৬৬ শতাংশে বেঁধে রাখা গিয়েছে। এখনও ১.১৫ কোটির বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। মোট ১১৯৪টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার কাজ চলছে। জম্মু-কাশ্মীরের বাছাই কিছু এলাকায় আজ থেকে আবার লকডাউন শুরু হয়েছে। কন্টেনমেন্ট করা হয়েছে শ্রীনগরের লাল চক-সহ ৬৮টি এলাকাকে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy