উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক সুরেশ তিওয়ারি। ছবি: সংগৃহীত।
করোনা-সংক্রমণ এড়াতে মুসলিম বিক্রেতাদের কাছ থেকে শাকসব্জি না কেনার নিদান দিলেন উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি বিধায়ক। তবে এ নিয়ে বিরোধী দল তথা নেটাগরিকদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেও তিনি নির্বিকার। উল্টে তাঁর দাবি, তিনি কোনও ভুল কথা বলেননি। এ নিয়ে অহেতুক হইচই করা হচ্ছে। আত্মপক্ষ সমর্থন করে সমালোচকদের উদ্দেশে ওই বিধায়কের প্রশ্ন, ‘‘বিষয়টিকে এত বড় ইস্যু করা হচ্ছে কেন?’’
ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহে। লকডাউন-পরিস্থিতি পরিদর্শনে উত্তরপ্রদেশের দেবরিয়া জেলায় নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বরহজে গিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক সুরেশ তিওয়ারি। সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার সময় তাঁদেরকে ওই বিতর্কিত পরামর্শ দেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সুরেশ বলছেন, ‘‘একটা কথা মনে রাখুন। আমি সকলকে খোলাখুলিই বলছি, মিয়াঁদের (মুসলিমদের) কাছ থেকে সব্জি কেনার কোনও প্রয়োজন নেই।’’
ওই ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই সুরেশ তিওয়ারির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে এ বিষয়ে নিজের অবস্থানে অনড় সুরেশ। উল্টে তাঁর দাবি, ‘‘আমার কেন্দ্রের ১০-১২ জন লোকের সঙ্গে লকডাউন নিয়ে কথাবার্তা বলছিলাম। সে সময় তাঁরা আমাকে জানান, সব্জি বিক্রির আগে মুসলিম বিক্রেতারা তাতে থুথু ছিটিয়ে দিচ্ছেন।’’ ফলে করোনা-সংক্রমণ এড়াতে এর পর তাঁদের ওই পরামর্শ দেন বলেও স্বীকার করেন সুরেশ। সেই সঙ্গে নিজের মন্তব্যের সপক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন তিনি। সুরেশের কথায়: ‘‘আমি তাঁদের বলেছিলাম, এ নিয়ে আমি কিছুই করতে পারব না। তবে করোনা-সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ওই বিক্রেতাদের থেকে সব্জি কেনা বন্ধ করার কথা বলেছিলাম। মানুষজন যখন জানতে চাইছেন, এ বিষয়ে কী করণীয়... তখন এক জন বিধায়কের আর কী-ই বা বলা উচিত? আমি কি কিছু ভুল বলেছি? বিষয়টিকে এত বাড়িয়েই বা দেখা হচ্ছে কেন?’’
আরও পড়ুন: রেড জোন কলকাতার কোন কোন জায়গা অতি স্পর্শকাতর, দেখে নিন
আরও পড়ুন: পূর্ব মেদিনীপুরের অতিস্পর্শকাতর এলাকা কী কী জেনে নিন
মঙ্গলবার দেবরিয়ায় নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সুরেশ। এ দিন তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘এইএমআইএম (অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদ উল-মুসলিমীন)-প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি হিন্দুদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করলে, তা নিয়ে কেউ আপত্তি করেন না। আর এক জন বিধায়ক তাঁর কেন্দ্রের মানুষজনের ভালর জন্য কিছু বললেই তা নিয়ে এত বড় ইস্যু করা হয়।’’
আরও পড়ুন: প্রতিবেশী করোনা আক্রান্ত হলে কী করবেন, কী করবেন না
আরও পড়ুন: উত্তর ২৪ পরগনায় অতি স্পর্শকাতর এলাকা কোনগুলি, তা দেখে নিন
আরও পড়ুন: হাওড়ায় কোন কোন পাড়া স্পর্শকাতর, তালিকা দিল রাজ্য
সুরেশের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটাগরিকদের পাশাপাশি সরব হয়েছেন প্রাক্তন অভিনেত্রী তথা উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেত্রী নাগমা। নিজের টুইটার হ্যান্ডলেও ওই ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ট্যাগ করে তিনি লিখেছেন, ‘‘আপনার নেতাদের এ ধরনের কাজ করতে নিষেধ করুন। এঁরা তো কিছুই বোঝেন না।’’
#BJPStopHatredFightCorona #BJP #Mla Suresh Tiwari from #UP is seen instructing people not to buy vegetables from Muslim People #communalhatred #pandemicdesign #Islamophobic during #StopCOVIDIslamophobia @narendramodi teach ur men to stop doing this 1st they don’t seem 2understand https://t.co/tCnH6dlIaO
— Nagma (@nagma_morarji) April 27, 2020
গত সপ্তাহেই করোনাভাইরাসের মতো অতিমারির দাপটের সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোভিড-১৯ ধর্ম, জাতি, বর্ণ বা সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলকেই আঘাত করে, সে কথাও বলেছিলেন তিনি। এই অতিমারিকে রুখতে সকলকেই একসঙ্গে হলে লড়াই করার আবেদনও করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে মোদীর সেই আহ্বান সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের অভিযোগ উঠছে একাধিক বার। সোমবার লখিমপুর শহরে একটি মুসলিম ফলবিক্রেতাকে ভুয়ো অভিযোগে হেনস্থা করা হয়। এর কিছু দিন আগে মাহোবাতে জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে এক সব্জি বিক্রেতা অভিযোগ করেন, তাঁকে বিক্রিবাটা বন্ধ করতে বলা হচ্ছে। প্রথম ক্ষেত্রে ঘটনার সত্যতা নিয়ে নিশ্চিত হলেও পরের ঘটনায় অভিযোগ অসত্য বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। তবে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে গুজবে কান না দেওয়ার আবেদন সত্ত্বেও ওই রাজ্যের সংখ্যালঘুদের প্রতি এ ধরনের আচরণ চলছেই বলে অভিযোগ।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy