গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবারই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। নতুন করে কড়া লকডাউনের জল্পনাও ছড়িয়েছে। তার মধ্যেই ফের দেশে করোনা সংক্রমণে ফের নয়া নজির। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৯২৯ জন। এখনও পর্যন্ত এক দিনে এত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হননি। এই নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৩ লক্ষ ২০ হাজার ৯২২। পাশাপাশি এই নিয়ে পর পর দু’দিন ১১ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেন। রবিবারের সংখ্যাটা প্রায় ১২ হাজারের কাছাকাছি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী দেশে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩১১ জনের। এই নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৯১৯৫। এর মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রেই মৃতের সংখ্যা ৩৮৩০। মৃতের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে গুজরাত, মৃত্যু হয়েছে ১৪৪৮ জনের। দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ১২৭১।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণেও শীর্ষে মহারাষ্ট্র। একমাত্র এই রাজ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। রবিবার দেওয়া কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৪ হাজার ৫৬৮ জন। মহারাষ্ট্র ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর শনিবারের বৈঠকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আরও চার রাজ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তামিলনাড়ুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৬৮৭ জন। দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৯৫৮। গুজরাতে কোভিড পজিটিভ ২৩ হাজার ৩৮ জন মানুষ। উত্তরপ্রদেশে কোভিড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজার ১১৮। প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উঠে এসেছে, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের দুই তৃতীয়াংশই রয়েছে এই পাঁচ রাজ্যে। তা ছাড়া এই রাজ্যগুলির বড় শহরগুলিতে দ্রুত হারে বাড়ছে সংক্রমণ। ফলে কেন্দ্র নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বলে শনিবারের বৈঠক সূত্রে খবর। শনিবার প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন-সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পাঁচ রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পডু়ন: উদ্বিগ্ন মোদী বৈঠকে, দেশে ১১ হাজার আক্রান্ত বাড়ল এক দিনে
করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গেও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজার ৬৯৮ জন। কেন্দ্রের হিসেবে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৬৩ জনের। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ হাজার ৫৪২ জন। রাজ্যে সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৫৬৯৩। তবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে ৪৬৩ জনের মৃত্যু হলেও তার মধ্যে কো-মর্বিডিটির লক্ষণ ছিল ৩১৮ জনের শরীরে।
আরও পড়ুন: ভারতের জমি জুড়ে নয়া মানচিত্র পাশ নেপাল পার্লামেন্টে, ক্ষুব্ধ দিল্লি
তবে এই তীব্র উদ্বেগের মধ্যেও একটাই স্বস্তির খবর, আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৩৭৯ জন। অন্য দিকে বর্তমানে দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত রোগীর (মৃত, সুস্থ হয়ে ওঠা এবং দেশান্তরী বাদ দিয়ে) সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩৪৮। অর্থাৎ মোট সক্রিয় আক্রান্তের চেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা বেশি।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy