প্রতীকী ছবি।
দেশে প্রতিদিন যে ভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছিল, তাতে উদ্বেগ ছিলই। সেই উদ্বেগ আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল মুম্বইয়ের ওখার্ড হাসপাতাল। সেখানকার তিন জন চিকিৎসক ও ২৬ জন নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তার জেরে ওই হাসপাতালকে ‘সংক্রামক এলাকা’ (কনটেইনমেন্ট জোন) ঘোষণা করে হাসপাতালে সবার ঢোকা-বেরনো বন্ধ করে দিল বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে।
হাসপাতালের মধ্যেই এত বিপুল সংখ্যক নার্স ও চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ মুম্বই পুর প্রশাসন। অতিরিক্ত পুর কমিশনার সুরেশ কাকানি বলেন, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে স্বাস্থ্য পরিষেবার চৌহদ্দির মধ্যে এত সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ওঁদের আরও সাবধান হওয়া উচিত ছিল।’’ তিনি জানিয়েছেন, কী ভাবে সংক্রমণ ছড়াল, তা নিয়ে একজন স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই আক্রান্তের খবর ছড়াতেই হাসপাতালের আউটডোর ও এমার্জেন্সি বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রোগী, চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী— কাউকেই হাসপাতালে ঢুকতে বা বাইরে বেরোতে দেওয়া হবে না। রোগী, হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স এবং কর্মীদের খাবার দেওয়ার জন্য শুধুমাত্র ক্যান্টিন খোলা থাকবে। গোটা এই ব্যবস্থা তদারকির জন্য হাসপাতালের গেটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দু’বার কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট এলে তবেই বাইরে বেরনোর অনুমতি মিলবে।
আরও পড়ুন: সামনে লম্বা লড়াই, করোনা নিয়ে দেশবাসীকে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
ওখার্ড হাসপাতালের নার্সদের কোয়ার্টার্স রয়েছে ভিলে পার্লে এলাকায়। আক্রান্ত নার্সদের সেখান থেকে সরিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত দুই চিকিৎসককে ভর্তি করা হয়েছে মাহিমের এসএল রাহেজা হাসপাতালে। পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যান্য কর্মী মিলিয়ে ২৭০ জনের লালারসের নমুনা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।
কিন্তু ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৭ মার্চে ৭০ বছরের এক করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধ ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। তার দিন দু’য়েকের মধ্যেই ওই বৃদ্ধের দেখভালের দায়িত্বে থাকা দুই নার্সেরও কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট এসেছিল। অভিযোগ, তার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ সতর্কতা নেননি। আক্রান্ত দুই নার্সের সংস্পর্শে আসা বা কোয়ার্টার্সে থাকা তাঁর রুমমেটদের পর্যন্ত কোভিড-১৯ পরীক্ষা বা কোয়রান্টিনের ব্যবস্থা করা হয়নি। আক্রান্ত দুই নার্সের ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাকও ছিল না বলে অভিযোগ। এমনকি, কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট আসার পরেও তাঁদের ডিউটি থেকে সরানো হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে ইউনাইটেড নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন। অন্তঃসত্ত্বা নার্সদের এই সময় ডিউটি থেকে অব্যহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে নার্সদের ওই সংগঠন।
আরও পড়ুন: কমেনি জ্বর, হাসপাতালে ভর্তি করা হল ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে
তবে হাসপাতালের পক্ষ থেকে সব অভিযোগই অস্বীকার করা হলেও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি কর্তৃপক্ষ। এক মুখপাত্র শুধু বলেন, হাসপাতালের এমার্জেন্সি ও আউটডোর পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy