বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে জাফরাবাদ, পিস্তল হাতে এক যুবক। ছবি: পিটিআই।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ফের রণক্ষেত্রের চেহারা নিল রাজধানী দিল্লি। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সঙ্ঘর্ষ চলাকালীন মাঝখানে পড়ে প্রাণ গেল পুলিশের এক হেড কনস্টেবলের। পাশাপাশি তিন জন সাধারণ নাগরিকেরও মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব দিল্লির একাধিক জায়গায় নতুন করে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে। আজই দু’দিনের সফরে ভারতে এসেছেন সস্ত্রীক ডোনাল্ড ট্রাম্প। সন্ধ্যায় আগরা থেকে তিনি দিল্লি আসেন। তার মধ্যে এই ঘটনায় চিন্তা বেড়েছে সাউথ ব্লকের।
শনিবার রাত থেকে শাহিন বাগের ধাঁচে বিক্ষোভ চলছে জাফরাবাদের রাস্তায়। কয়েকশো মহিলা জড়ো হয়েছেন সেখানে। তা নিয়ে রবিবারই পুলিশকে হুমকি দিয়েছিলেন বিজেপির কপিল মিশ্র। তিন দিনের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের না হঠালে তাঁরাও পাল্টা রাস্তায় নামবেন। সেই নিয়ে গতকালই তেতে উঠেছিল জাফরাবাদ। সোমবার দুপুরেও তা নিয়ে বিক্ষোভ চলছিল গোকুলপুরি, ভজনপুরা এলাকায়। তখনই সিএএ-র সমর্থনে একদল মানুষ সেখানে এসে হাজির হয় বলে অভিযোগ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে দিতে সিএএ বিরোধী মিছিলের সামনে হাজির হয় ওই দলটি। তাতেই পরিস্থিতি তেতে ওঠে। রাস্তার উপরই দু’পক্ষের মধ্যে সঙ্ঘর্ষ বেধে যায়। একে অপরকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইটবৃষ্টি করতে থাকে। বেশ কিছু গাড়িও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি একটি পেট্রোল পাম্পেও আগুন ধরানো হয় বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশের একটি বাহিনী। লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। তাতে সংঘর্ষ চরম আকার নেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেই ইটবৃষ্টি শুরু হয়। তাতেই মাথায় গুরুতর আঘাত পান রতনলাল নামের এক হেড কনস্টেবল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ইটের আঘাতে আরও বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। জিটিবি হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
অন্য দিকে সংঘর্ষে আহত হন মহম্মদ ফুরকান নামে আরও এক সাধারণ নাগরিক। সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলের দিকে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে আরও এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
ঘটনার সময়কার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে পিস্তল উঁচিয়ে পুলিশকে শাসানি দিতে দেখা গিয়েছে এক যুবককে। এমনকি গুলির শব্দও শোনা গিয়েছে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করে দেখেনি আনন্দবাজার ডিজিটাল।
বিক্ষোভ যাতে চরম আকার ধারণ না করে, তার জন্য ইতিমধ্যেই জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, জোহরি এনক্লেভ এবং শিব বিহার মেট্রো স্টেশনের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনও ট্রেন দাঁড়াবে না। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারাও জারি হয়েছে।
সোমবারই সপরিবারে দু’দিনের ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সকালে আমদাবাদ হয়ে আগরা গিয়েছেন তাঁরা। সেখান থেকে দিল্লি ফেরেন। তার মধ্যেই পরিস্থিতি এমন চরম আকার ধারণ করায় উদ্বেগ বাড়ছে সাউথ ব্লকের। শান্তি বজায় রাখতে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। অশান্তি থেকে দূরে থাকতে তাঁদের পরামর্শ দিয়েছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলও।
তবে এ দিনের ঘটনার জন্যও বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রকে দায়ী করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।গতকাল জাফরাবাদে অশান্তির পর থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় টুইটারে একাধিক মন্তব্য পোস্ট করেছেন কপিল মিশ্র। কোথাও তিনি লেখেন, ‘‘দিল্লিতে দ্বিতীয় শাহিন বাগ হতে দেব না।’’ কোথাও আবার বিক্ষোভের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘‘জাফরাবাদে বিক্ষোভের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। ফের একটা এলাকায় আইনের শাসন নেই। মোদীজি ঠিকই বলেছিলেন যে, শাহিন বাগ দিয়ে শুরু হয়েছে, এ বার ধীরে ধীরে রাস্তা, গলি, বাজার হারানোর জন্য প্রস্তুত হন। আপনাদের দরজা পর্যন্ত না এসে পৌঁছনো পর্যন্ত চুপ করেই থাকুন আপনারা।’’
मैंने अभी LG साहिब से बात की। उन्होंने भरोसा दिलाया कि और पुलिस फ़ोर्स भेजी जा रही है। किसी के भी द्वारा हिंसा बर्दाश्त नहीं की जाएगी। मेरी सभी लोगों से विनती है कि कृपया शांति बनाए रखें। हिंसा से कोई समाधान नहीं निकलेगा। https://t.co/d3biQqr13X
— Arvind Kejriwal (@ArvindKejriwal) February 24, 2020
এই ধরনের মন্তব্য করে কপিল মিশ্রই জাফরাবাদে হিংসায় মদত জুগিয়েছেন বলে এ দিন অভিযোগ করেছেন ওয়াইসি। নাম না করে টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘প্রাক্তন বিধায়ক এবং এক বিজেপি নেতার উস্কানিমূলক মন্তব্যই এ দিনের দাঙ্গার জন্য দায়ী। এখন তো পুলিশের যুক্ত থাকার প্রমাণও স্পষ্ট। ওই প্রাক্তন বিধায়ককে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। হিংসা রুখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে, নইলে এটা আরও ছড়িয়ে পড়বে।’’
These riots were a result of incitement by an ex MLA & BJP leader. Now there is clear evidence of police involvement
— Asaduddin Owaisi (@asadowaisi) February 24, 2020
The ex-MLA should be arrested immediately, urgent steps should be taken to control the violence. Otherwise, it’ll spread https://t.co/numkSduOiZ
ওয়েইসির টুইট।
ওয়াইসির অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি কপিল মিশ্র। তবে টুইটারে বিক্ষোভকারীদের শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘সকলের কাছে আমার আনুরোধ, হিংসার মাধ্যমে কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। দিল্লিতে ভ্রাতৃত্ব বজায় থাকুক। তাতেই সকলের মঙ্গল। সিএএর সমর্থক হোন বা বিরোধী, হিংসা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। সকলের কাছে আমার অনুরোধ, হিংসা বন্ধ করুন।’’
मेरी सभी से अपील हैं कि हिंसा से कोई समाधान नहीं निकलता
— Kapil Mishra (@KapilMishra_IND) February 24, 2020
हिंसा किसी विवाद का हल नहीं
दिल्ली का भाईचारा बना रहे इसी में सबकी भलाई हैं
CAA समर्थक हो या CAA विरोधी या कोई भी, हिंसा तुरंत बंद होनी चाहिए
मेरी पुनः अपील, हिंसा बंद कीजिए 🙏
কপিল মিশ্রর টুইট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy