আঁখি দাস, ফেসবুকের ভারতীয় শাখার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর— ফাইল চিত্র।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক স্বার্থে ঘৃণা-ভাষণের সঙ্গে আপসের অভিযোগ এ বার গড়াল আদালতে। মঙ্গলবার ফেসবুকে ভারতীয় শাখার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর আঁখি দাসের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য প্রচার এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে ছত্তীসগঢ় পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফে পুরো ঘটনার তদন্ত চেয়ে ফেসবুক কর্ণধার মার্ক জ়াকারবার্গের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ছত্তীসগঢ় পুলিশ সূত্রের খবর, আবেশ তিওয়ারি নামে এক সাংবাদিকের অভিযোগের ভিত্তিতেই আঁখি দাসের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আঁখি সোমবার অনলাইনে ও অফলাইনে তাঁকে শারীরিক আক্রমণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখায় আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই তালিকায় নাম ছিল আবেশের। এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল আজ বলেন, ‘‘আমেরিকার সংবাদপত্রে ফেসবুকের ভারতীয় শাখার বিরুদ্ধে বিজেপির প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। আমরা চাই সংস্থার প্রধান হিসেবে মার্ক জ়াকারবার্গ তার তদন্ত করুন।’’
মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে শুক্রবার প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্তের দাবিও তুলেছে কংগ্রেস, বাম-সহ বিরোধী শিবিরের একাংশ। প্রকাশিত ওই খবরে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভারতের শাসক দল বিজেপিকে চটাতে ভয় পান ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। কারণ, তাতে ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল। আর তাই বিজেপি নেতাদের হিংসায় উস্কানি বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয় না। এমনকি, এ বিষয়ে ঘোষিত নীতি ভাঙতেও পিছপা হয় না ফেসবুক! এ ক্ষেত্রে বিরোধীদের মূল নিশানা আঁখি। তাঁর বোন রশ্মি দাস দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপির সভানেত্রী ছিলেন। ফলে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ অন্য মাত্রা পেয়েছে।
You are absolutely right, @mahuaMoitra,& by imputing motives to my decision, @nishikant_dubey has brought the Committee's work into disrepute, a matter I will take up. Extraordinary that an MP would suggest that a matter of such great public interest should NOT be taken up by us! https://t.co/8pRxZ5r6mU
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) August 17, 2020
প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ফেসবুকের ভারতীয় শাখার পরিচালকদের জবাবদিহির জন্য তলব করার কথা জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ তথা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান শশী তারুর। সে সংক্রান্ত সংসদীয় প্রক্রিয়াও শুরু করেন। কিন্তু আজ সকাল থেকেই তারুরের উদ্যোগ বানচাল করতে সক্রিয় হয়েছে শাসক শিবির। বিজেপি সাংসদ তথা কমিটির সদস্য নিশিকান্ত দুবে টুইটারের লেখেন, ‘‘সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যেদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া চেয়ারম্যান একক সিদ্ধান্তে এমন পদক্ষেপ করতে পারেন না। তিনি এমন করলে আমরা একযোগে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে লিখিত প্রতিবাদ জানাব। রাহুল গাঁধীর রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা পূরণের কাজ করবেন না।’’
আরও পড়ুন: ফের হাসপাতালে অমিত শাহ, পর্যবেক্ষণে থাকবেন ২৪ ঘণ্টা
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র আজ তারুরের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁর টুইট, ‘‘ফেসবুকের স্বার্থ রক্ষা করতে বিজেপি যে ভাবে লাফালাফি শুরু করেছে তাতে আশ্চর্য হচ্ছি।’’ এর পরে তারুর টুইটে ধন্যবাদ জানান মহুয়াকে। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘মহুয়া আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন। আমার পদক্ষেপকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে চিহ্নিত করে নিশিকান্ত দুবে যে মন্তব্য করেছে তা মনে রাখব। জনস্বার্থের এমন বিষয়ে নজর দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে কোনও সাংসদ মনে করছেন! সত্যিই অসাধারণ!’’
আরও পড়ুন: বিজেপি এবং আরএসএস নেতাদের খুনের পাক ছক, সতর্ক করল কেন্দ্র
তেলঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিংহ একটি বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষদের গুলি করে মারার সওয়াল করেছিলেন ফেসবুকে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, এর পরে ‘বিপজ্জনক ব্যক্তি এবং সংস্থা’ নীতির ভিত্তিতে রাজাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য সুপারিশ করেছিলেন ফেসবুকের ভারতীয় শাখার কয়েকজন কর্মী। কিন্তু আঁখি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিজেপি নেতাদের আইনভঙ্গকারী হিসেবে শাস্তি দিলে ভারতে ফেসবুকের ব্যবসায়িক ক্ষতি হতে পারে। রাজা অবশ্য ওই বিদ্বেষমূলক পোস্টের দায় অস্বীকার করে টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘‘আমার নামে অনেকগুলি ফেসবুক পেজ রয়েছে। কিন্তু আমার নিজের কোনও অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ নেই। ওই পোস্টের দায় আমার নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy