Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
গৃহদাহে জেরবার কংগ্রেস

দলের ঘরই কি দলের পরিচয়

অনেকেই বলছেন, বিষয়টি প্রতীকী। নেমপ্লেট সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাহুলও ‘অন্তরালে’।

কংগ্রেস সভাপতির বন্ধ ঘর। নিজস্ব চিত্র

কংগ্রেস সভাপতির বন্ধ ঘর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

আকবর রোডে কংগ্রেস সদর দফতরে মূল ভবনের সামনের দরজা দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়বে কংগ্রেস সভাপতির ঘর। সাদা রঙের দরজার এক দিকে ইংরেজিতে, আর এক দিকে হিন্দিতে লেখা—সনিয়া গাঁধী, সভানেত্রী। এই বোর্ডেই এক মাস আগে পর্যন্ত রাহুল গাঁধীর নাম লেখা ছিল। সভাপতির পদ ছাড়ার পরে গোটা কংগ্রেস দফতরেই কোথাও রাহুলের নাম নেই।

অনেকেই বলছেন, বিষয়টি প্রতীকী। নেমপ্লেট সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাহুলও ‘অন্তরালে’। সভাপতির পদ ছাড়লেও রাহুল বলেছিলেন, তিনি দলের কাজে সক্রিয় থাকবেন। কিন্তু নিজের কেন্দ্র ওয়ানাড ছাড়া আর কোথাও তাঁকে দেখা যায়নি। তিনি সক্রিয় শুধুমাত্র টুইটারে।

আবার কংগ্রেস সভাপতির ঘরও খালিই পড়ে রয়েছে। কারণ, দশ জনপথের বাড়িতে বসেই সনিয়া একের পর এক বৈঠক করছেন। অতীতেও তিনি বাড়ি থেকেই কাজ চালাতেন। রাহুল মুখে দলের সংগঠনের কথা বললেও কংগ্রেস অফিসে সভাপতির ঘরে বসে কাজ করেননি। কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, এআইসিসি দফতর দেখলেই দলের ‘বেহাল’ দশা বোঝা যায়। যেমন এআইসিসি দফতর, তেমন রাজ্যের প্রদেশ দফতরেও নেতারা যে যাঁর নিজের বাড়িতে অনুগামীদের নিয়ে বসে থাকেন। সমন্বয় তৈরি হয় না। রাহুল নিজেও এই সংস্কৃতি দূর করার চেষ্টা করেননি বলে অভিযোগ। বরং মায়ের ঘাড়ে রাজ্যে রাজ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর ভার চাপিয়ে গিয়েছেন। যা মেটাতে আজ দলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে সনিয়াকে বলতে হয়েছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। তৃণমূল স্তরের কর্মীদের উৎসাহ দিতে হবে।

কারণ, নবীন বনাম প্রবীণ প্রজন্মের নেতাদের সংঘাত মধ্যপ্রদেশ থেকে রাজস্থান, এআইসিসি থেকে প্রদেশ কমিটি, সর্বত্রই তুঙ্গে। গত সপ্তাহে সনিয়া মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে সংঘাত মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। গত রাতে তিনি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ও প্রদেশ সভাপতি সচিন পাইলটের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সনিয়া গহলৌত ও পাইলটকে জানিয়ে দিয়েছেন, একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পাইলট কিন্তু বলে দেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি যাঁরা দলকে ক্ষমতায় এনেছেন, তাঁদেরও সম্মান দিতে হবে। সরকার ও সংগঠনের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে হবে।’’

এ সব দেখেশুনে কংগ্রেসের এক নেতার প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যের বড় বড় নেতাদের উপর কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদকদের রাজ্যের নেতারাই মানেন না। রাহুল এই হাল শোধরানোর কোনও চেষ্টাই করেননি। আর সনিয়া পুরোপুরি সুস্থ নন। ৭২ বছর বয়সে তিনি কতটা সামলাবেন?’’

আর রাহুল? এর আগে শোনা গিয়েছিল, তিনি ২ অক্টোবর, গাঁধীজির দেড়শোতম জন্মবার্ষিকী থেকে পদযাত্রা শুরু করবেন। কংগ্রেস ওই দিন দেশ জুড়ে পদযাত্রা করলেও রাহুল কোথায় থাকবেন, তা এখনও অজানা। এ বিষয়ে গতকালের বৈঠকেও তিনি হাজির ছিলেন না। রাহুলের ঘনিষ্ঠ নেতাদের যুক্তি, সভাপতির পদ ছেড়ে দিয়েও তিনিই দল চালাচ্ছেন, এমন কোনও বার্তা রাহুল দিতে চান না। কিন্তু তিনি মাঠে নামছেন না কেন? সে প্রশ্নের জবাব নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Sonia Gandhi Rahul Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy