প্রতীকী ছবি।
ভৌগোলিক এলাকাতে তো বটেই, এ বার ভার্চুয়াল জগতেও চিনা হামলার চেষ্টা চলছে। লাদাখে আগ্রাসনের পর মাত্র পাঁচ দিনেই ৪০ হাজারেরও বেশি বার দেশের সাইবার পরিকাঠামো আক্রমণের চেষ্টা করেছে চিনের হ্যাকাররা। এমনটাই জানিয়েছে মহারাষ্ট্রের সাইবার সিকিউরিটি সেল।
শি চিনফিং সরকারের মদতপুষ্ট ওই হ্যাকারেরা সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাইবার হানা শুরু করেছে। তবে মূলত পরিকাঠামো, ব্যাঙ্কিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেই তাদের তৎপরতা বেশি বলে জানিয়েছে মহারাষ্ট্রে সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। ‘সাইবার ক্রাইম অ্যাক্টর’ নামে পরিচিত ওই চিনা হ্যাকারদের পাশাপাশি পাকিস্তানের হ্যাকাররাও দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থায় হানাদারির চেষ্টা করছে।
মহারাষ্ট্র পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি সেলের আইজি বৈষ্ণবী যাদব জানিয়েছেন, গত চার-পাঁচ দিনে হঠাৎ করেই দেশের সাইবার জগতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চিনা হ্যাকারদের তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “বিশেষ করে পরিকাঠামো, ব্যাঙ্কিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র লক্ষ্য করেই বেশির ভাগ হামলা শুরু হয়েছে। ওই কয়েক দিনে অন্তত ৪০ হাজার ৩০০টি সাইবার অ্যাটাক হয়েছে। এবং চিনের সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী শহর চেংডু থেকেই বেশির ভাগ হানাদারি চলছে।”
আরও পড়ুন: গালওয়ানে হামলার নির্দেশ দিয়েছিল চিন, বলছে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট
ঠিক কী ধরনের সাইবার হানা চলছে? বৈষ্ণবী যাদব বলেন, “এই সাইবার অ্যাটাকগুলোকে তিনটে ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। পরিষেবা দিতে অস্বীকার করা, আইপি হাইজ্যাকিং এবং ফিশিং। মূলত ভারত সরকারের সাইবার পরিকাঠামোকে লক্ষ্য করেই এই মুহূর্তে আঘাত হানা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ দরকার নেই ভারত-চিনের, বলল রাশিয়া
মহারাষ্ট্রের সাইবার সেলের আধিকারিকদের মতোই এ নিয়ে সতর্কবার্তা শুনিয়েছেন অ্যান্টি-ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা। কুইক হিল সিকিউরিটি ল্যাবের ডিরেক্টর হিমাংশু দুবে বলেন, “গত কয়েক দিনে আমরা দেখছি, বেশ আঁটঘাট বেঁধেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সাইবার হানা চলছে। ম্যালওয়ারের সাহায্যে চিনের কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিএনসি) সার্ভারের মধ্য়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কম্পিউটার সিস্টেমে টার্গেট করা হচ্ছে. তাতে ক্রিপ্টো মাইনার্স এবং রিমোট অ্যাকসেস টুল (আরএটি) ম্যালওয়ার ঢোকানো হচ্ছে। যাতে ওই কম্পিউটারগুলোর সাহায্যে দূর থেকেই সংযোগ স্থাপন করা যেতে পারে।”
চিনের হ্যাকারদের পাশাপাশি পাক সাইবার হানাদারদেরও প্রচেষ্টা কিছু কম নয় বলে জানিয়েছেন হিমাংশু। গত মার্চ থেকেই পাক হ্যাকারেরা বেশ সচেষ্ট বলে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের একটি হ্যাকার সংগঠন এপিটি-৩৬ বা ট্রান্সপারেন্ট ট্রাইবও দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থায় ক্রমাগত হানাদারি চালাচ্ছে। তবে এই দুই হ্যাকার গোষ্ঠীর মধ্যে কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা, তা এখনই স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। হিমাংশু বলেন, “হ্যাকাররা হানিট্র্যাপিংয়ের সাহায্যেও স্পর্শকাতর তথ্য চুরির চেষ্টা করছে।”
এই পরিস্থিতিতে কী করণীয়? সাধারণ মানুষকে সাইবার সুরক্ষা নিয়ে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হিমাংশু। তাঁর কথায়, “সকলকেই বলব, সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল নিয়ে আরও সচেতন হোন। নিজেদের অনলাইন তথ্যভাণ্ডার রক্ষায় করতে উদ্যোগী হতেও পরামর্শ দেব। বেশ মজবুত ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন। অন্য দিকে, ব্যবসায়িক সংস্থাগুলোকে আমার পরামর্শ, সাইবার বিশেষজ্ঞদের দিয়ে নিজেদের সিকিউরিটি যাচাই করিয়ে নেওয়াটাও জরুরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy