নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন বুলন্দশহর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত যোগেশ রাজ। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁকে নাকি খুঁজেই পাচ্ছে না পুলিশ। অথচ সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো হাজির তিনি। একটি ভিডিয়োবার্তায় নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে দাবিও করেছেন বুলন্দশহর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত যোগেশ রাজ। আপাতত সেই ভিডিয়োটিই ভাইরাল।
ওই ভিডিয়োতে যোগেশের দাবি, কোনও দোষ না করলেও তাঁর গায়ে দাগী অপরাধীর তকমা এঁটে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি, সোমবার, ঘটনার দিন ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। বরং সে সময় বুলন্দশহরের একটি থানায় বসে একটি অভিযোগ দায়ের করছিলেন।
গো-হত্যার গুজবে সোমবার অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর। স্যানা মহকুমা এলাকার মাহু গ্রামের বাইরে একটি জঙ্গলের কাছে প্রায় ২৫টি গবাদি পশুর মাংস উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে সাতসকালে রাস্তা অবরোধকরে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ পৌঁছলে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। ইট-পাথর ছোড়া, থানায় আগুন ধরানো-ভাঙচুর হয়। ওই তাণ্ডবে নিহত হন পুলিশ ইনস্পেক্টর সুবোধকুমার সিংহ এবং স্থানীয় এক যুবক সুমিতকুমার সিংহ। সুবোধকুমারকে ভারী পাথর মেরে আহত করে তাঁর সার্ভিস রিভলভার ছিনিয়ে গুলি করে মারা হয়। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে বুলন্দশহরের বজরং দলের প্রধান এবং উত্তরপ্রদেশের বিজেপি যুব মোর্চার সদস্য যোগেশ রাজের নাম।
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
বুলন্দশহরে তাণ্ডব চলাকালীন একটি সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়ো ফুটেজে ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছিল যোগেশকে। ছবি: সংগৃহীত।
বুলন্দশহরে ওই তাণ্ডব চলাকালীনই একটি সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়ো ফুটেজে ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছিল যোগেশকে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ার ওই ভিডিয়োটিতে সে কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। যোগেশের কথায়, “সে দিন দুটো ঘটনা ঘটেছিল। প্রথম ঘটনায় গ্রামের পাশে জঙ্গলের কাছে গবাদি পশুর মাংস উদ্ধার হয়, তখনই সহকর্মীদের নিয়ে সেখানে ছুটে যাই। পুলিশও সেখানে ছিল। এর পর এলাকায় শান্তি ফিরে এলে এলাকার একটি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলাম। সংঘর্ষ চলার সময়ও আমি থানাতেই বসে ছিলাম। যখন ওই পুলিশ অফিসার আর একটি ছেলে মারা যায়, তখনও আমি থানাতেই বসে ছিলাম।”
আরও পড়ুন: দুই নাবালককে আটক, এফআইআরে ‘ভুয়ো’ নামের ছড়াছড়ি, প্রশ্নের মুখে যোগীর পুলিশ
এই ঘটনায় বজরং দল বা ভিএইচপি-র মতো কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নাম কেন জড়ানো হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন যোগেশ। পুলিশের কাছে যাঁরা সাহায্য চাইতে গিয়েছিলেন, তাঁরাই কেন এ ধরনের ঘটনায় উস্কানি দেবেন, তা-ও জানতে চেয়েছেন তিনি। যোগেশ বলেছেন, “আমি ঘটনাস্থলে ছিলামই না। ওই ঘটনার সঙ্গেও কোনও ভাবে জড়িত নই। আমি নিশ্চিত, ঈশ্বর এর সঠিক বিচার করবেন।”
আরও পড়ুন: সাক্ষী-মৃত্যুতে ধাক্কা আখলাক মামলায়
সুপরিকল্পিত ভাবে ইনস্পেক্টর সুবোধকুমার সিংহকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ছবি: পিটিআই।
যোগেশের দাবিকে নস্যাত্ করে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পরিকল্পনা করেই যে ইনস্পেক্টর সুবোধকুমার সিংহের খুন করা হয়েছিল, তা-ও দাবি করেছেন রাজ্যের পুলিশ প্রধান ও পি সিংহ। বুধবার সকালে তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য, “বুলন্দশহরের ঘটনার পিছনে একটা বড়সড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। এটা শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয় নয়।” তাঁর প্রশ্ন, “ওই গবাদি পশুরগুলোর মাংস ওখানে পৌঁছল কী করে? আমাদের দেখতে হবে, কোন পরিস্থিতিতে, কে ওগুলো ওখানে নিয়ে গেল!”
বুলন্দশহরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতেই পরিকল্পিত ভাবেই ওই গবাদি পশুগুলোরর মাংস রাখা হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এডিজি আনন্দ কুমার। গো-হত্যার পিছনে কার হাত রয়েছে, তা খুঁজে দেখতে বলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। তবে পুলিশ ইনস্পেক্টর সুবোধকুমার সিংহের খুনের ঘটনা নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন যোগী।
যোগেশ রাজের ভিডিয়োটি কে বা কারা তুলেছেন, তা জানা যায়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা গেলেও ‘পলাতক’ যোগেশের এখনও খোঁজ পাচ্ছে না পুলিশ।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy