শঙ্খনাদ: উল্লসিত বিজেপি সমর্থক। মঙ্গলবার বিহারের পটনায়। পিটিআই
‘নতুন রেকর্ড গডুন’। বিহারে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের ভোটারদের কাছে এই আহ্বান রেখেছিলেন। বিজেপি বিহারে নতুন রেকর্ড হয়তো গড়তে পারল না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে ভোটের বৈতরণী পার করে ফেলল।
এনডিএ জোট কোনও মতে ‘ম্যাজিক সংখ্যা’ ছুঁলেও বিজেপি তার পুরো কৃতিত্ব নরেন্দ্র মোদীকেই দিচ্ছে। কোভিড মোকাবিলা নিয়ে প্রশ্ন, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, রুটিরুজি নিয়ে অভিযোগ, লাদাখে চিন সেনার জমি দখল— বিহারের ভোটে বিরোধীদের কাছে হাতিয়ারের কমতি ছিল না। তা সত্বেও বিহারে বিজেপির সাফল্যের জন্য মোদী ও তাঁর সরকারেরই কৃতিত্ব প্রাপ্য বলে একমত বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের যুক্তি, মোদী বিহারে যেখানে যেখানে প্রচারে গিয়েছেন, সেখানেই বিজেপি ভাল ফল করেছে। প্রথম দফার
থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণের আগে মোদী বেশি সংখ্যায় জনসভা করেছেন। ভোটের ফলেও দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ভোট হওয়া আসনগুলিতে বিজেপি তথা এনডিএ বেশি ভাল করেছে। বিজেপি নেতাদের হিসেবে, প্রধানমন্ত্রী বিহারে ১২টি জনসভা করেছেন। প্রায় ১১০টি বিধানসভা কেন্দ্র ‘কভার’ করেছেন। প্রাথমিক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, এই সব আসনের প্রায় ৬০ শতাংশই বিজেপি বা জেডিইউ জিতেছে।
বিজেপির সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষের বক্তব্য, ‘‘বিহারের বিধানসভা নির্বাচন-সহ গোটা দেশেই উপনির্বাচন হয়েছে। তা দেখিয়ে দিয়েছে, মোদী সরকার যে ভাবে অতিমারির মধ্যে গোটা দেশকে চালনা করেছে, তাতেই মানুষ সিলমোহর দিয়েছেন।’’ বিহারের জয় নরেন্দ্র মোদীর ‘কাজ’ ও ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’র জয় বলে তাঁর মত।
আরও পড়ুন: লাইভ: বিহারে সরকার গড়তে চলেছে এনডিএ, শুভেচ্ছা মোদী-শাহের, এক নম্বরে তেজস্বীর দল
ভোটের আগে বিহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু করেছেন। প্রতিটি অনুষ্ঠানে বিহারের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবে কাজ করছে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। বার্তা দিয়েছেন, বিহারের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের পাশাপাশি পটনাতেও এনডিএ সরকার প্রয়োজন। প্রচারে নেমে বারবার লালু প্রসাদের জমানার ‘জঙ্গলরাজ’-এর আতঙ্ক মনে করিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি নেতারা বলছেন, মোদীর সুবাদেই বিজেপির সঙ্গে তেজস্বী যাদবের আরজেডির মুখোমুখি লড়াইয়ে বিজেপি এগিয়ে থেকেছে।
উল্টো দিকে বিরোধী শিবির বলছে, জাতীয় স্তরে তাঁর সমকক্ষ কোনও বিরোধী নেতা না থাকারই ফায়দা তুললেন মোদী। বিহারের প্রচারে তেজস্বী যাদব শুধুমাত্র নীতীশ কুমার ও তাঁর সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছেন। মোদীর দিকে তির নিক্ষেপ করেননি। এক সময় মোদীর জন্যই এনডিএ ছেড়েছিলেন নীতীশ। এ বার সেই নীতীশ কুমারই তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ ধামাচাপা দিতে মোদীর ছবি কাজে লেগে গিয়েছেন। কিন্তু মোদী যেভাবে নীতীশ কুমারের পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন, সে ভাবে রাহুল গাঁধী বা আর কেউ তেজস্বীর পিছনে দাঁড়াতে পারেননি।
আরও পড়ুন: নীতীশ কি কুর্সি ছাড়বেন বড় শরিক বিজেপিকে
তৃতীয় দফায় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী জয় শ্রীরাম, ভারতমাতা কি জয়, পুলওয়ামা প্রসঙ্গে টেনে এনে মেরুকরণ করতে চাইছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও বিহারে গিয়ে সিএএ-র ঢাক পিটিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের দেশছাড়া করার হুমকি দেন। বিহারের ভোটের পরে সেই যোগীরও মন্তব্য, ‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy