Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
আজ নাগরিক বন্‌ধে সমর্থন প্রিয়ঙ্কার

যজ্ঞ, বীণা ও গাজর, রাজধানীর দূষণের সঙ্গে লড়তে নিদান বিজেপির!

দূষণের চাদর আরও ঘন হয়ে ঢেকে দিয়েছে শহর। দমবন্ধ রাজধানী। দিন এগোবে কী করে?

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৯
Share: Save:

ঘুম ভেঙে আজ দিল্লি দেখল— কিছুই দেখা যাচ্ছে না!

দূষণের চাদর আরও ঘন হয়ে ঢেকে দিয়েছে শহর। দমবন্ধ রাজধানী। দিন এগোবে কী করে? দাওয়াই দিলেন পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। টুইটে দিলেন ইমানী শঙ্কর শাস্ত্রীর বীণাবাদনের লিঙ্ক। বললেন, ‘‘দিনটা শুরু করুন সঙ্গীতে।’’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দিল্লিরই নেতা। স্বাভাবিক ভাবেই দিল্লি ও স্বাস্থ্য, দু’টি বিষয় নিয়েই তাঁর ভারী চিন্তা। টুইটে তাঁর উপদেশ— দূষণের সঙ্গে লড়তে গাজর খান। গুণে ভরা গাজর। শরীর ভিটামিন-এ পাবে, পটাশিয়ামও।

কিন্তু দূষণ বন্ধ হবে কী করে? কয়েক দিন ধরেই দূষণের কবলে রাজধানী ও আশপাশের এলাকা। জারি হয়েছে ‘জরুরি অবস্থা’। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও রেহাই পাননি এই দূষণের কোপ থেকে। মোদী সরকারের কাছে বিদেশি দূতাবাসগুলির আবেদন, ‘দূষণে আর পারছি না। হস্তক্ষেপ করুন’। যদিও সরকারের কাছে কোনও সমাধান নেই!

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ঘরে ফিরেছে ৫০ জঙ্গি, দাবি সেনার

এর মধ্যেই বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, এখনই না কি গোটা বিশ্বের ভারতে আসার সময়। নেিটজ়েনদের মন্তব্য— বেশ তো! সকলকে এখনই দিল্লি নিয়ে আসুন! বিষয়টি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে, বুঝতে পারছে সরকারের মাথারা। বিজেপির ‘গোপন’ সূত্র তো বলছে, কিছু নেতার জন্য না কি বিদেশ থেকে ‘এয়ার পিউরিফায়ার’ এসেছে। বাতাসের বিষের হাত থেকে ফুসফুস যাতে মুক্তি পায়। আমজনতার কী হবে? মোদী-মন্ত্রীরা বলছেন, দোষ অরবিন্দ কেজরীবালের। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বাচ্চাদের স্কুলে গিয়ে বলছেন, দোষ মনোহর আঙ্কল (হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর) ও ক্যাপ্টেন আঙ্কেলের (পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ)। আর ক্যাপ্টেন বলছেন, দোষ মোদী সরকারের।

সবাই সবাইকে দুষছেন। দিল্লির মানুষ স্থির করেছেন, কেউ সাধারণের চিন্তা করেন না। কাল তাই দিল্লি বন্‌ধ। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও টুইটে লিখলেন, ‘‘দিল্লির নাগরিক ও এক মা হিসেবে আমিও এই পদক্ষেপকে সমর্থন করি। দিল্লি বন্‌ধ। দিল্লি বাঁচাও।’’

দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাল থেকে গাড়ির নম্বরের জোড়-বিজোড় নীতি ফের চালু হচ্ছে দিল্লিতে। মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বিজেপি নেতা বিজয় গোয়েলের দাবি, ‘‘এ সব করে কী হবে? কাল থেকে নিয়ম ভেঙেই গাড়ি চালাব।’’ তা হলে দিল্লি বাঁচানোর উপায় কী? উপায় জানিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথের এক মন্ত্রী। সুনীল ভারালা। কী সেই মোক্ষম উপায়? তাঁর মতে, কেন এত দোষারোপ? কেন এত হল্লা? ভগবান ইন্দ্রের উপাসনা করে যজ্ঞ করলেই বৃষ্টি হবে। আর বৃষ্টি হলেই কাটবে দূষণ!

কিন্তু দূষণ ও মানুষের চাপ যে লাগাতার বাড়ছে, বিদেশে বসেই টের পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দেশে ফেরার আগেই আজ প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, ক্যাবিনেট সচিব দিল্লি, পঞ্জাব ও হরিয়ানার অফিসারদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে পড়েন। তার পর সরকার জানাল, ‘‘আজ প্রথম নয়, একমাস আগে থেকে বৈঠক হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী দফতরে। রাজ্যকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। দিল্লিতেও দূষণ রুখতে ৩০০টি টিম দিনরাত কাজ করছে।’’

প্রশ্ন থেকেই গেল। একমাস ধরে বৈঠক করেও এই হাল?

তাজমহল বাঁচাতে: উত্তর ভারতে বেড়ে চলা দূষণের হাত থেকে প্রাচীন সৌধকে রক্ষা করতে তাজমহলের সামনে ‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ ভ্যান’ বসানো হল। আট ঘণ্টায় ৩০০ মিটার ব্যাসার্ধের একটা জায়গায় ১৫ লক্ষ কিউবিক মিটার বায়ু শোধন করতে পারবে এই যন্ত্র।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Harsh Vardhan Delhi Pollution Air Pollution Environment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy