ছবি: এএফপি।
বাড়িতে বসে থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিল আজরা ইয়াকুব। আজ স্কুলে যাওয়ার পথে দ্বাদশ শ্রেণির কমার্সের ছাত্রি বলল, ‘‘খুব ভাল লাগছে। বাড়িতে বসে পড়াশোনা করতেও আর ভাল লাগছিল না।’’
তিন মাসের শীতের ছুটি-সহ মোট সাত মাস বন্ধ থাকার পরে গত কাল থেকে স্কুল খুলেছে কাশ্মীরে। ৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ পাওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন স্তব্ধ ছিল উপত্যকা। দফায় দফায় জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞার জেরে তালা পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতেও। সেপ্টেম্বরের শেষে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে প্রশাসন সেগুলি খোলার চেষ্টা করলেও নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চাননি অভিভাবকেরা।
আজ দ্বিতীয় দিনেও নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করেছে পড়ুয়ারা। বছর আঠারোর শাইস্তার কথায়, ‘‘আমরা ক্লাসে ফিরতে পেরে খুব খুশি। তবে একটা ভয় সব সময়েই আছে। কখন যে কী হয় তা কেউ বলতে পারে না।’’
আরও পড়ুন: কেজরী চুপ কেন? অস্বস্তিতে আপও
দু’দিন ধরে রঙিন স্কুলের পোশাকে ব্যাগ পিঠে স্কুলবাসের জন্য খুদেদের অপেক্ষার চেনা দৃশ্য দেখা গিয়েছে। বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই স্কুল খোলা-বন্ধের সময় ও বাস পরিষেবা চালুর সময় জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিভাবকদের। দুই স্কুলপড়ুয়া সন্তানের মা আজ়রা আহমেদ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে ও আর্থিক ভাবে ৫ অগস্টের পর থেকে অনেক কিছু হারিয়েছে কাশ্মীর। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ারও অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আর কোনও ক্ষতি চাই না।’’
স্কুলবাসগুলিকে আগে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ট্রাফিক পুলিশের কাছেও প্রশাসনের নির্দেশ পৌঁছেছে। গত বছরের শেষ দিকে কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল খুললেও পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম না পরে স্কুলে আসার নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিভাবকেরা সাহস না পাওয়ায় স্কুলে যাওয়া হয়নি খুদেদের। মেয়েকে নিয়ে স্কুলবাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাজমুল ইমরান। বললেন, ‘‘সব বাবা-মাই সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। এই কারণেই আগে ওদের স্কুলে পাঠাতে পারিনি।’’ স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে চিকিৎসক নাসির হাকিমের সন্তানেরাও। হাকিমের কথায়, ‘‘এখন একটু নিরাপদ বোধ করছি। অন্তত আমার ল্যান্ডলাইন চালু হয়েছে। ছেলেমেয়ে কেমন আছে, তা অন্তত জানতে পারব।’’
কাশ্মীরের স্কুলশিক্ষা দফতরের ডিরেক্টর মহম্মদ ইউনিস মালিক জানিয়েছেন, শ্রীনগর পুরসভার মধ্যে যে স্কুলগুলি, সেগুলি ১০টা থেকে ৩টে পর্যন্ত খোলা থাকবে। কাশ্মীরের বাকি অংশে সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ৩টে পর্যন্ত চলবে স্কুল। ইউনিস বলেছেন, ‘‘পড়ুয়াদের পাশে থাকা ও সময়ের মধ্যে তাদের পাঠক্রম শেষ করানো আমাদের দায়িত্ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy