Advertisement
E-Paper

পর্যটনে কি ছাড় ভূস্বর্গে? কমবে কড়াকড়ি? খুলবে দোকানপাট? উত্তর সময়ের গর্ভেই

আপাতত যা ইঙ্গিত, তাতে জীবনযাত্রা চট করে স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, সরকার হয়তো দাবি করছে যে, গত দু’মাস উপত্যকা মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ।

ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০১
Share
Save

৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের বেশ কিছু দিন আগেই দেশ-বিদেশের তীর্থযাত্রী এবং পর্যটকদের জম্মু-কাশ্মীর ছাড়তে বলেছিল কেন্দ্র। ‘জঙ্গি হামলার আশঙ্কা’-য় জারি হয়েছিল বিজ্ঞপ্তি। সব ঠিক থাকলে, সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে চলেছে বৃহস্পতিবার থেকে। অন্তত সোমবার রাতে তেমনটাই দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। তবু উত্তর নেই বহু প্রশ্নের।

যেমন, গত দু’মাস সেনাবাহিনীর অতন্দ্র প্রহরার মধ্যে উপত্যকায় আদৌ কোনও তীর্থযাত্রী বা পর্যটক আর আছেন কি না, তা অস্পষ্ট। অনেকের প্রশ্ন, তবে কি এর পরে জম্মু-কাশ্মীরে কারও যাওয়ায় কিংবা সেখানে অবাধ ঘোরাফেরায় শিথিল হবে নিষেধাজ্ঞা? কমবে ফোন কিংবা ইন্টারনেট সংযোগ কার্যত বন্ধ করে রাখার কড়াকড়ি? দোকানপাট খুলবে? কিছুটা হলেও কি স্বাভাবিক হবে গত দু’মাস কার্যত ঘরবন্দি জীবনযাত্রা? উত্তর সময়ের গর্ভেই। তবে মুখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে বারবার দাবি করার পরে এ বার কড়াকড়ি কমাতে না পারলে সরকারের পক্ষেও বিষয়টা স্বস্তির থাকছে না। মার্কিন কংগ্রেসের কমিটি কাশ্মীরে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্ল্যাকআউট তুলে নেওয়ার জন্য ভারতের উপরে চাপ বাড়িয়েছে। এই ব্ল্যাকআউট কাশ্মীরের জনজীবনের উপরে বিধ্বংসী প্রভাব ফেলছে বলে দাবি করেছে তারা।

কিন্তু আপাতত যা ইঙ্গিত, তাতে জীবনযাত্রা চট করে স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, সরকার হয়তো দাবি করছে যে, গত দু’মাস উপত্যকা মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ। সেনা বা পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারাননি এক জনও। কিন্তু অনেকের ধারণা, গোলমাল সে ভাবে বাধেনি সেনার বজ্র আঁটুনির জন্যই। নইলে বিরোধী নেতাদেরও কাশ্মীরে যাওয়া থেকে আটকানো হবে কেন? কেনই বা সামান্যতম জমায়েতেও বিক্ষোভ দেখানো কিংবা পাথর ছোড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছে না সেনা? এ নিয়ে ক্ষোভ উস্কে দিতে জঙ্গি হামলার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে সেনার ধারণা।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা অফিসার জানিয়েছেন, সোমবারও সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইয়ের পরে প্রাণ হারিয়েছে লস্কর-ই-তইবার এক জঙ্গি। মঙ্গলবার পুলওয়ামায় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। উপত্যকাকে সেনা-পাহারায় মুড়ে ফেলার পর থেকে এই নিয়ে মোট পাঁচ জঙ্গিকে খতম করা হল বলে তাঁর দাবি। গত সপ্তাহান্তেও গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছেন দশ জন। মঙ্গলবারই পিটিআই-কে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে যে, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানের তরফে অন্তত ২০টি জঙ্গিশিবির এবং ২০টি লঞ্চপ্যাড সক্রিয় করে তোলা হয়েছে। এর প্রত্যেকটিতে কম করে ৫০ জন জঙ্গি ওত পেতে রয়েছে। হামলার আশঙ্কা পুরোদস্তুর রয়েছে বলেই এখনও নিজেদের দেশের মানুষকে কাশ্মীরে যেতে বারণ করে রেখেছে ব্রিটেন-সহ বেশ কিছু দেশ।

গত দু’মাসে কার্যত কোনও বিরোধী নেতাকে উপত্যকায় স্বাধীন ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেওয়া হয়নি। ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, পিপলস্ ডেমোক্রেটিক পার্টির মেহবুবা মুফতি-সহ স্থানীয় নেতারা গৃহবন্দি। এত দিন পরে এই সবে রবিবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের জনা পনেরো কর্মীকে তাঁদের শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সামান্য ছাড় দেওয়া হলেই বিক্ষোভ প্রদর্শন কিংবা পাথর ছোড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই যেখানে পরিস্থিতি, সেখানে বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকদের জন্য উপত্যকার দরজা আদৌ খোলা যাবে কি না, সেই প্রশ্ন তাই জ্বলন্ত। আর শেষমেশ ছাড়পত্র দিলেও, আদৌ কত জন সেখানে যাবেন, উত্তর নেই সেই প্রশ্নেরও।

Jammu And Kashmir Article 370 জম্মু ও কাশ্মীর

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}