ছবি: রয়টার্স।
স্বাধীনতার পরে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) থেকে চলে আসা প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কাশ্মীর যে শান্ত ও নিরাপদ তা বোঝাতে দু’মাস আগে পর্যটকদের ভূস্বর্গ ছাড়ার যে ফরমান জারি হয়েছিল তা-ও তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। এরই মধ্যে আজ রাজ্য প্রশাসনের অস্বস্তি বাড়িয়ে পিডিপি ও এনসি-র মতো দলগুলির পরে আসন্ন ব্লক উন্নয়ন পরিষদ নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস।
আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে বসেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। তাতে ১৯৪৭ সালে পাক হানাদারদের হামলার কারণে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া এবং বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরে বসবাসকারী প্রায় ৫,৩০০ পরিবারকে এককালীন প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সব পরিবারের সদস্যেরা যাতে ধারাবাহিক ভাবে উপার্জনে সক্ষম হন সে জন্যও পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরের জন্য যে উন্নয়নমূলক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন তারই অঙ্গ হিসেবে ওই সাহায্য করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। আজ তিনি বলেন, ‘‘ওই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক ভুল সংশোধন করা হল।’’
জাভড়েকর জানান, ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার ঠিক পরেই পাক হানাদারেরা সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালায়। সে সময়ে প্রায় ৩১,৬১৯টি পরিবার পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পালিয়ে ভারতে চলে আসে। তাদের মধ্যে ২৬,৩১৯টি পরিবার জম্মু-কাশ্মীরে রয়ে যায়। বাকি ৫,৩০০টি পরিবার প্রথমে অন্য রাজ্যে আশ্রয় নেয়। পরে ওই পরিবারগুলিও জম্মু-কাশ্মীরে এসে থাকতে শুরু করে। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ে ছাম্ব-নিয়াবত এলাকার আরও প্রায় ১০,০৬৫টি পরিবার গৃহহীন হয়ে জম্মু-কাশ্মীরে চলে আসে। জাভড়েকর বলেন, ‘‘শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজের আওতায় ছিল ১৯৪৭ সালে বাস্তুচ্যুত ২৬ হাজার এবং পরবর্তী কালে গৃহহীন ১০ হাজার পরিবার। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজের সুবিধে পায় প্রায় ৩৬,৩৮৪টি পরিবার। ১৯৪৭ সালে আসা ৫,৩০০টি পরিবার যেহেতু অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছিল সেহেতু তাদের প্যাকেজের আওতায় নিয়ে আসা হয়নি। কিন্তু এ বারে সেই ভুল শুধরে নেওয়া হল।’’
অন্য দিকে কাশ্মীর যে স্বাভাবিক হয়ে আসছে সেই ছবি তুলে ধরতেও মরিয়া কেন্দ্র। গত সোমবার রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। সেখানেই ঠিক হয়, বিশেষ মর্যাদা লোপের ঠিক আগে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের সে রাজ্য ছাড়ার যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তবে ওই সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু-কাশ্মীরে পর্যটক কিংবা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সেখানে যাওয়া এবং অবাধে ঘোরার স্বাধীনতা পাবেন কি না তা নিয়ে মুখে কুলুপ প্রশাসনের।
সোমবারের প্রশাসনিক বৈঠকে ব্লক উন্নয়ন পরিষদ (বিডিসি) নির্বাচনের প্রস্তুতিও খতিয়ে দেখেন রাজ্যপাল। রাজ্যের ৩১০টি ব্লকে ২৪ অক্টোবর ওই নির্বাচন হওয়ার কথা। রাজ্যের দুই দল এন সি ও পিডিপি আগেই ওই নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছিল। আজ কংগ্রেসও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বিজেপির দাবি, ‘ক্ষমতালোভী’রা নতুন শক্তির উত্থানে ভয় পেয়েছেন। তাই ভোটের ময়দান থেকে পালানোর অজুহাত খুঁজছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy