Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Jammu And Kashmir

বিল নয়, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাতেই কাজ হাসিল বিজেপির, রাজ্য পুনর্গঠনে আনতে হল বিল

সোমবার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে কার্যত বোমা ফাটিয়েছে মোদী সরকার। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করতে সংসদের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়নি কেন্দ্র সরকারের। আনতে হয়নি বিলও। কেন?

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব। ছবি: এএফপি

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ১৭:৩২
Share: Save:

কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার বিলোপ। সোমবার, এই ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপের জন্য অবশ্য আলাদা করে বিল পাশ করাতে হয়নি মোদী সরকারকে। যদিও, জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠনের সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি বাস্তবায়িত করতে আরও কিছুটা পথ পেরোতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। তবে, এর ফলে, উপত্যকায় একাধিক সম্ভাবনার রাস্তাও খুলে গিয়েছে। এ দিকে, বিশেষ মর্যাদা খর্ব হওয়ার পর, নানা আশা-আশঙ্কার দোলাচলে তৈরি হয়েছে কাশ্মীরে।

সোমবার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে কার্যত বোমা ফাটিয়েছে মোদী সরকার। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করতে সংসদের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়নি কেন্দ্র সরকারের। আনতে হয়নি বিলও। কেন? সেই উত্তর লুকিয়ে রয়েছে ৩৭০ ধারার মধ্যেই। ওই ধারার ৩ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ইচ্ছে করলে এই ‘বিশেষ মর্যাদা’ তুলে নিতে পারেন। আর রাষ্ট্রপতির ওই ক্ষমতাকে ব্যবহার করেই এ দিন কাজ হাসিল করল মোদী সরকার। অর্থাৎ বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি সই করার পর থেকেই ৩৭০ ধারা রদ হয়ে গেল। ওই ধারার অধীনেই রয়েছে ৩৫এ ধারা। ফলে, তার বলে ভূস্বর্গের বাসিন্দারা যে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন। এ দিন থেকে খারিজ হয়ে গেল সেটাও।

তবে, জম্মু-কাশ্মীরকে দু’ভাগে ভাঙতে সরকারকে অবশ্য পুনর্গঠন বিল আনতে হল সংসদে। ঠিক যেমনটা করা হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশ দ্বিখণ্ডিত করে তেলঙ্গানা রাজ্য তৈরির ক্ষেত্রে। সে ক্ষেত্রে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অবশ্যই প্রয়োজন। রাজ্যসভায় জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠনের প্রস্তাব এ দিন সন্ধেয় ১২৫-৬১ ভোটে পাশ হয়ে যায়।

৩৭০ ধারা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন?

ভবিষ্যতে দিল্লির মতোই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীর। থাকবে বিধানসভা, একই সঙ্গে থাকবেন লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর। লাদাখ হবে চণ্ডীগড়ের মতো যেখানে বিধানসভা থাকবে না। থাকবেন লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর। এ বার থেকে দেশ জুড়ে চালু থাকা যে কোনও উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের আওতায় আসবে জম্মু-কাশ্মীর। রাজ্যের আলাদা করে পতাকা বা সংবিধানও আর থাকবে না।

৩৭০ ধারার অবলুপ্তির ফলে জম্মু-কাশ্মীরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারেও অনেকটা বদল আসবে। ওই রাজ্যের বিশেষ ফৌজদারি বিধি রণবীর পেনাল কোডের (আরপিসি) বিলুপ্তি ঘটবে। সরাসরি ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) আওতায় আসবে ওই রাজ্য। ১৯৩২ সাল নাগাদ ডোগরা রাজবংশের রাজা রণবীর সিংহের আমলে চালু হয়েছিল ওই ফৌজদারি বিধি। এত কাল ধরে সেই বিধিই মানা হচ্ছিল। কিন্তু, তা বদলে যাবে এ বার। এত কাল জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভার মেয়াদ ছিল ছ’বছর। কিন্তু, এ বার থেকে তা কমে হবে পাঁচ বছর।

আরও পড়ুন: ৩৭০ বাতিল, বিশেষ অধিকারের সঙ্গে রাজ্যের মর্যাদাও হারাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর, ভেঙে আলাদা হচ্ছে লাদাখ​

৩৭০ ধারার ঢাল না থাকায়, রাজ্যের জনবিন্যাসের চেহারাটাও বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, এ বার থেকে জম্মু-কাশ্মীরে জমি, বাড়ি কিনতে পারবেন দেশের অন্যান্য রাজ্যের মানুষও। এখন থেকে জম্মু-কাশ্মীরে চাকরিও পেতে পারেন ভিনরাজ্যের বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন: ভারতের ভাঙন শুরু: চাঞ্চল্যকর মন্তব্য চিদম্বরমের, ‘চরম বিশ্বাসঘাতকতা’, টুইট ওমর-মেহবুবার​

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE