ছবি: পিটিআই।
রাষ্ট্রপুঞ্জে ইমরান খান বলেছিলেন, কাশ্মীরে কার্ফু উঠলেই রক্তস্নান হবে। ইসলামাবাদে ফিরে ইমরান আজও বলেছেন, কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়ানো তাঁর কাছে ‘জেহাদ’। দুনিয়া কাশ্মীরিদের সঙ্গে না থাকলেও পাকিস্তান থাকবে। নাম না করে পাক প্রধানমন্ত্রীকে আজ কড়া জবাব দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সঙ্গে দাবি করলেন, কাশ্মীরে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে হইচই করার মতো কিছু নেই।
অমিত আজ বলেন, ‘‘কত রকম ভয় পাওয়ানো হচ্ছে, অমুক হবে, তমুক হবে, রক্তের নদী বইবে..। ৫ অগস্ট থেকে কাশ্মীরে একটিও গুলি চালাতে হয়নি, এক জনেরও মৃত্যু হয়নি। ১৯৬টি থানার মধ্যে মাত্র আটটিতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। বাকি কোথাও কার্ফু নেই। বিধিনিষেধ কয়েক জনের মনে, কাশ্মীরে নয়।’’
কাশ্মীরের জীবনযাত্রা কি তবে স্বাভাবিক? কাশ্মীরের স্থানীয় সূত্র কিন্তু তা বলছে না। মোবাইল-ইন্টারেনট বন্ধই। ইমরানের বক্তৃতার পরে কড়াকড়ি আবার ফিরেছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখনও বন্দি। অমিত এ দিন কার্যত মোবাইল-ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের প্রশ্নটিকেই গুরুত্ব দিতে চাননি। বলেছেন, ‘‘শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হল্লা করে কী লাভ?’’ তাঁর দাবি, সব ল্যান্ডলাইন এখন চালু। ১০ হাজার নতুন ল্যান্ডলাইন শুরু হয়েছে, ৬২০০ নতুন পিসিও।
স্বাগত: বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকে নরেন্দ্র মোদীকে অভ্যর্থনা দলীয় সভাপতি অমিত শাহের। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
অমিতের ঘোষণা, ৪০ হাজার পঞ্চায়েত প্রধান এখন জম্মু-কাশ্মীরে উন্নয়নের কাজে নেমে পড়েছেন। ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থা রূপায়ণ করতে দ্রুত তহসিল ও জেলা পঞ্চায়েতের ভোট হবে। ভারত সরকার ৭ হাজার কোটি টাকা পাঠাবে, যা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সরাসরি আম জনতার কাছে যাবে। বিধবারা ৬০০ টাকা করে পাবেন, প্রবীণেরা ৫০০ টাকা পেনশন। রাত গড়াতে ব্লক উন্নয়ন চেয়ারপার্সন ভোটের নির্ঘণ্টও ঘোষণা করে দিয়েছেন। ২৪ অক্টোবর ভোট ৩১০ ব্লকে। সে দিনই গণনা।
প্রায় ৫০ দিনের বেশি সময় ধরে কাশ্মীরিদের ‘বন্দি’ করে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ইমরান। অমিতের জবাব: ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জে কোনও রাষ্ট্রনায়ক পাকিস্তানের পক্ষে বলেননি। সকলেই ভারতের পাশে। সকলেই মেনেছেন, আত্মরক্ষা ও সীমানায় আইন তৈরির অধিকার রয়েছে ভারতের। সেটিই প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য।’’ মানবাধিকার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাল্টা আক্রমণ, ‘‘এত দিন ধরে যে ৪১,৮০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, তাদের মানবাধিকার নেই? নিহত জওয়ানের পরিবার, বিধবা-অনাথদের মানবাধিকার নেই? সুফি সম্প্রদায়, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মানবাধিকার?’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদের আড়ালে তিনটি পরিবার কাশ্মীরকে লুটেছে। আজ তাদের ঘাম ছুটছে। ৩৭০ রদে কাশ্মীরি সংস্কৃতি থাকবে না বলা হচ্ছে, তা হলে ৩৭০ নেই বলে বাংলায় কি দুর্গাপুজো হয় না? রবীন্দ্রসঙ্গীত শেষ?’’
কাশ্মীর প্রশ্নে সরকারের ভূমিকার নিন্দা করেও কংগ্রেসের আনন্দ শর্মাও বলেন, ‘‘আমেরিকা ও রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রধানমন্ত্রী যে অবস্থান নিয়েছেন, কংগ্রেস তার সঙ্গে একমত। ইমরানের বিবৃতিরও নিন্দা করছে কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর ভাষা সভ্য সমাজে গ্রাহ্য নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy