প্রতীকী ছবি।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে ফুটছে পাকিস্তান। চব্বিশ ঘণ্টা পেরোলেও, এখনও ওয়াঘার ওপার থেকে প্রতিক্রিয়া দেওয়া বন্ধ হয়নি। গোটা বিষয়টি নিয়ে সোমবার নীরব থাকার পর, মঙ্গলবার মুখ খুলল বেজিংও। ভারত-চিন সীমান্তবর্তী লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তারা। চিনের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চিনা এলাকার ভারত-ভুক্তি নিয়ে সব সময়েই প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে তারা। এ নিয়ে নয়াদিল্লিকে সতর্কও করেছে বেজিং। তবে বিবৃতিতে কোথাও লাদাখের নাম উল্লেখ করা হয়নি। সরাসরি, ৩৭০ রদ নিয়ে মুখ না খুললেও, কাশ্মীর নিয়েও ‘গভীর উদ্বেগ’ও প্রকাশ করেছে চিন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এক বিবৃতিতে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেন, ‘‘ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিম দিকে থাকা চিনা ভূখণ্ডের ভারতভুক্তি নিয়ে সব সময় প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে চিন। দীর্ঘ দিন ধরেই ধারাবাহিক ভাবে এই অবস্থান নিয়ে আসছে চিন। সম্প্রতি অন্তর্দেশীয় আইন সংশোধন করে ভারত চিনের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব খাটো করার ক্রমাগত চেষ্টা করছে। যেটা মেনে নেওয়া যায় না। এই চেষ্টা কোনও দিনই সফল হবে না।’ ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত নিয়েও নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেজিং। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্ত নিয়ে কথায় ও কাজে যেন সতর্ক থাকে ভারত। দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত চুক্তিও যেন কঠোর ভাবে মেনে চলে। জটিলতা বাড়ে এমন পদক্ষেপ যেন এড়িয়ে যায় নয়াদিল্লি।’ বিবৃতিতে অবশ্য লাদাখের নাম উল্লেখ করেনি চিনা বিদেশ মন্ত্রক।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তৃতায় উঠে আসে পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিতর্কের কথা। বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়ে পাল্টা সুর চড়ান অমিত। আগ্রাসী ভঙ্গিতেই তিনি বলেন, ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও আকসাই চিনও ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’’ এই দু’টি জায়গা নিয়ে পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বিতর্ক নয়াদিল্লির।
আরও পড়ুন: গ্রেফতার বা আটক করা হয়নি ফারুককে, সংসদে প্রশ্নের মুখে জানালেন অমিত শাহ
কাশ্মীর নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে চিন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কাশ্মীর নিয়ে চিনের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। এই ইস্যুটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক বিষয়। তাতে আন্তর্জাতিক মহলেরও নজর রয়েছে।’ ৩৭০ রদ নিয়ে ভারতকে টার্গেট করে একের পর এক তোপ দাগছে পাকিস্তান। সেই সূত্র ধরেই উত্তেজনার ‘আশঙ্কা’ প্রকাশ করেছে বেজিং। দু’দেশের প্রতি স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আবেদন করেছে চিন। বিবৃতিতে হুয়া চুনইং লিখেছেন, ‘উত্তেজনা কমাতে ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে দুই দেশেরই সাবধানে পা ফেলা উচিত। দু’পক্ষ যেন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলির শান্তিপূর্ণ সমাধান করে।’
আরও পড়ুন: ‘ভারতে ফের পুলওয়ামা হবে,’ ৩৭০ রদ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য ইমরানের
এই প্রথম নয়। সাম্প্রতিক কালে কাশ্মীর নিয়ে পর পর দু’টি বিবৃতি দিল বেজিং। এর আগে, গত ২৬ জুলাই চিনের তরফে বলা হয়, ‘ভারত ও পাকিস্তান আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের মধ্যে কাশ্মীর ও অন্যান্য সমস্যার সমাধান করে ফেলুক।’ দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতিতে আন্তর্জাতিক মহলের পাশে থাকার কথাও জানায় বেজিং। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘গঠনমূলক ভূমিকা’র কথাও তুলে ধরে তারা। তখন অবশ্য ভারত-চিন সীমান্ত নিয়ে এত উষ্মাপ্রকাশ করেনি বেজিং, যা এ দিন তারা করেছে। তবে, কৌশলগত কারণেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের কথা কোনও ভাবেই বিবৃতিতে উল্লেখ করেনি তারা। যদিও, সোমবারই ৩৭০ ধারা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং আমেরিকাকে জানিয়ে দেয় ভারত।
আরও পড়ুন: খাস কাশ্মীরে এখন কী হচ্ছে? অন্ধকারে বহির্বিশ্ব, সাইটে আপডেট নেই খবরের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy