সংসদ চত্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার। ছবি: পিটিআই।
ঠিকানা বদলাবেন রামলালা। কম করে বছর তিনেকের জন্য। মন্দির তৈরি করতে এই সময়টুকু লাগবেই।
গেরুয়া শিবিরের খবর, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর গত কয়েক মাস অমিত শাহ সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে নিরন্তর কথা বলে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত করেছেন। আবার এক ঢিলে পাঁচ পাখি মারার কৌশলও নিয়েছেন।
এক, দিল্লি ভোটের ঠিক আগে নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে আজ ঘোষণাটি করানো হয়েছে। সকালে সংসদে মোদী ‘সম্প্রীতি’র বার্তা দিলেও ‘মাঘ একাদশী’তে রামমন্দির ঘোষণা সন্ধে থেকেই অমিত শাহের দিল্লি প্রচারের অঙ্গ হয়েছে। শাহিন বাগকে সামনে রেখে দিল্লিতে আবারও উস্কে দিচ্ছেন হিন্দুত্বকে।
দুই, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে অযোধ্যার রামমন্দিরকে নতুন সার্কিট ও আধুনিক পরিকাঠামোও যোগী আদিত্যনাথের হাতিয়ার হতে পারে। হিন্দুত্বের সঙ্গে উন্নয়নের মিশেল।
তিন, চলতি বছরে মন্দিরের কাজ শুরু হলে সেটি শেষ হতে লাগবে অন্তত বছর তিনেক। অর্থাৎ, পরের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত। গত লোকসভায় রামমন্দির খুব বেশি কাজে না-দিলেও এখন থেকে একটি হাতিয়ার তৈরি করে রাখা। কারণ, আগামী কয়েক বছর এই মন্দির নির্মাণকে ঘিরেই দেশে ও বিদেশে হিন্দুদের আরও সংগঠিত করবে গেরুয়া শিবির।
চার, যত দিন মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ না হয়, তার জন্য রামলালাকে সরানো হবে অন্যত্র। কারণ, এখন যেখানে রামলালা বিরাজমান, সেখানে নতুন মন্দিরের গর্ভগৃহ হবে। অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই নিরাপত্তার যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখে নতুন অস্থায়ী ঠিকানা করবে রামলালার, যেখানে ভক্তরা পরিক্রমাও করতে পারেন। নতুন মন্দিরে রামের নতুন মূর্তিও হতে পারে।
পাঁচ, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এমনিতেই দেশে মেরুকরণের একটি পরিবেশ তৈরি করেছে বিজেপি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ মন্দিরের জন্য হিন্দুদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমান্তরালে নাগরিকত্ব নিয়েও অভিযান চালাবে। বিশেষ করে বাংলা ও কেরলে প্রচার হবে, যেখানে বিরোধিতা সব থেকে বেশি।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানত সঙ্ঘ পরিবার। সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঙ্ঘও অযোধ্যার জন্য নিজেদের রোডম্যাপ তৈরি করে ফেলে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক কার্যনির্বাহী সভাপতি অলোক কুমার জানান, ২৫ মার্চ নবরাত্রি শুরু, ২ এপ্রিল রামনবমী, ৮ এপ্রিল হনুমান জয়ন্তী। এই পুরো সময়টি পালন হবে ‘রামোৎসব’। পৌনে তিন লক্ষ গ্রামে ধুমধাম করে তা পালন হবে। মন্দিরের কাজ শুরু হলে এক এক দিন এক এক জেলার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হবে, যাতে সকলে মন্দিরের কাজে ‘হাত’ লাগাতে পারেন। হিন্দুদের থেকে পরিবারের সকলের নামে চাঁদা তোলা হবে। সে কাজে সাহায্য করবে পরিষদই। পুরনো নকশাতেই মন্দির তৈরিতে জোর দেওয়া হবে ট্রাস্টের সদস্যদের।
গত নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ‘উচ্ছ্বাস’ প্রকাশে রাশ টানা হয়। কিন্তু এ বারে ধাপে ধাপে রাশ আলগা হবে। সঙ্ঘের এক নেতা বলেন, প্রত্যেক হিন্দুর কাছে পৌঁছনো হবে। আর #সিএএ-র আওতায় সব হিন্দু যাতে নাগরিকত্ব পান, সেটিও সুনিশ্চিত করা হবে। বিশেষ নজর অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy