—ফাইল চিত্র।
ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে অতীতের সেই মৈত্রী হয়তো ফিরে আসবে না, কিন্তু সাম্প্রতিক ভারত-চিন সংঘাতের বাতাবরণে মস্কোর ভূমিকা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। গত দু’মাস ধরে রাশিয়ার সঙ্গে চিন প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছে ভারত। সূত্রের বক্তব্য, পিছন থেকে ভারত-চিন উত্তাপ কমাতে সক্রিয় থেকেছে পুতিন সরকারও। তারই জের ধরে গত দু’দিন রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী এবং ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে পর পর বৈঠক করলেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের পাশাপাশি কথা হয়েছে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়গুলি নিয়েও।
গত মাসেই এসসিও এবং ব্রিকস সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল রাশিয়ায়। কোভিডের কারণে তা অনির্দিষ্ট কাল পিছিয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার উদ্যোগে ব্রিকস রাষ্ট্রগুলির বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের ভিডিয়ো বৈঠক হয়েছে দিল্লি-বেজিং উত্তেজনার মধ্যেই। পাশাপাশি অক্টোবরে ভারত এবং রাশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে ভ্লাদিমির পুতিনের ভারতে আসার কথা।
এই প্রেক্ষাপটে গত দু’দিন রাশিয়ার নেতৃত্বের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেন ভারতের বিদেশসচিব। দু’পক্ষের কৌশলগত এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও বাড়ানো, পরিকাঠামো এবং শক্তিক্ষেত্রে বিনিয়োগ, চিনের সম্প্রসারণবাদ, চিন এবং আমেরিকার সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো, কোভিড মোকাবিলার মতো বিষয়গুলি নিয়ে দু’দেশের নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
কূটনীতিবিদদের মতে, নয়াদিল্লির কাছে মস্কোর ভূমিকা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ সাউথ ব্লক ভাল করে জানে যে বেজিং যদি কারও কথায় কিছুটা গুরুত্ব দেয়, সেটা হলো মস্কো। দুই দেশের বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য স্বার্থ পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি মস্কোও চায়, তাদের সামরিক পণ্যের বিশাল দুই ক্রেতা, ভারত এবং চিনের মধ্যে অস্থিরতা যেন মাত্রা না-ছাড়ায়। আর সে কারণেই গত দেড় মাসে ভারত সব চেয়ে বেশি বৈঠক করেছে যে দেশের সঙ্গে, সেটা রাশিয়া। এই দৌত্যের ভূকৌশলগত দিকও রয়েছে। রাশিয়ার স্বার্থও বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত। এই মুহূর্তে ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) এবং এসসিও (সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন)-এর চলতি বছরের নেতৃত্ব মস্কোর হাতে। ভারত-চিন এই দু’টি সংগঠনেই রয়েছে। রাশিয়া আন্তর্জাতিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় তথা নিজের প্রভাব আরও সংহত করতে এই সংগঠনগুলোকে কাজে লাগাতে উন্মুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy