Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Unnao

উন্নাওয়ের ছায়া ত্রিপুরায়, কিশোরীকে টানা দু’মাস ধরে ধর্ষণ, শেষমেশ পুড়িয়ে মারল প্রেমিক

শনিবার ভোররাতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নির্যাতিতা ওই কিশোরীকে জিবি পন্থ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
আগরতলা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৫৫
Share: Save:

উন্নাওয়ের পুনরাবৃত্তি এ বার ত্রিপুরায়। সেখানে এক কিশোরীকে বন্দি করে রেখে, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে টানা দু’মাস ধরে ধর্ষণ এবং শেষ মেশ পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল তারই প্রেমিকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তার মাকেও। কিন্তু গোটা ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধেই নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছে মেয়েটির পরিবার। থানায় অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ মেয়েটিকে বাঁচানোর কোনও চেষ্টাই করেনি বলে দাবি তাদের।

শনিবার ভোররাতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নির্যাতিতা ওই কিশোরীকে জিবি পন্থ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তেতে উঠেছে গোটা ত্রিপুরা। অভিযুক্ত যুবককে অজয় রুদ্রপাল বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে শনিবারই তাকে হাসপাতালে টেনে আনেন। সেখানে তার উপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। গোটা ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তার মাকেও মারধর করা হয়। শান্তিরবাজার থানার পুলিশ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ত্রিপুরার এসপি জয় সিংহ মীনা। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

ত্রিপুরা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেসবুকে ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরীর সঙ্গে আলাপ হয় অভিযুক্ত অজয়ের। অল্পদিনের মধ্যেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁদের মধ্যে। সেই মতো দীপাবলির পর মেয়েটির বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান অজয়। তার কয়েক দিন পরই জোর করে ওই কিশোরীকে তিনি আটক করে রাখেন এবং ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণের দাবি করেন বলে মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ।

আরও পড়ুন: ‘অপরাধ করলে এনকাউন্টার হবেই’, লাইসেন্স দিলেন তেলঙ্গানার আরও এক মন্ত্রী

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মেয়েটির মা জানিয়েছেন, মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে প্রথমেই পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা। অজয় মুক্তিপণ দাবি করলে তা-ও জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের তরফে কোনওরকম সহযোগিতা মেলেনি। তাই মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে শুরু করেন তাঁরা।

নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘কোনওরকমে ১৭ হাজার টাকা জোগাড় করেছিলাম। শুক্রবার রাতে চান্দ্রপুর আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনালে অজয়ের মায়ের সঙ্গে দেখা করে টাকা তুলে দিই। কিন্তু মাত্র ১৭ হাজার টাকা পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন উনি। বলেন, মেয়েকে ফেরত পেতে চাইলে যত শীঘ্র সম্ভব পুরো টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। এরই মধ্যে মেয়েকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছে, তা জানতে পেরেছিলাম আমরা। শনিবার সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তার আগেই ভোরবেলা মেয়ে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি বলে খবর পাই।’’

সময় মতো খবর দিলেও নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে পুলিশের কেউ হাসপাতালে আসেননি বলেও অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতার মা। তাঁর দাবি, হাসপাতালে পৌঁছে দেখেন অবস্থা সঙ্কটজনক হলেও, তখনও কথা বলছে মেয়ে। তিনি জানান, অজয় এবং তাঁর বন্ধুরা মিলে গত দু’মাস ধরে তাঁর মেয়েকে লাগাতার গণধর্ষণ করেছেন। মুক্তিপণের টাকা না পেয়েও অকথ্য অত্যাচার চালানো হয় তার উপর। মাত্র ১৭ হাজার টাকা দেখে মেজাজ বিগড়ে যায় অজয়ের। তিনি-ই মেয়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ইন্টারনেট চালু করুন, আটকদের মুক্তি দিন, মোদী সরকারের কাছে আবেদন মার্কিন কংগ্রেসে

মেয়েকে উদ্ধৃত করে ওই মহিলা জানান, বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত অজয়। তাঁদের মেয়ের সঙ্গে দেখা করতেই বাড়ি এসেছিলেন। প্রথমে সবই ঠিক ছিল। কিন্তু আটক করার দু’দিন পর থেকেই মা এবং‌ ছেলে মিলে মেয়েটির উপর অত্যাচার শুরু করেন। এর পর বন্ধু-বান্ধবদের ডেকে এনে মেয়েটিকে বার বার ধর্ষণ করান অজয়। সেইসময় তাঁদের মেয়েকে ঠিক মতো খেতে দেওয়াও হয়নি বলে অভিযোগ নির্যাতিতার মায়ের।

হায়দরাবাদ, উন্নাও-সহ দেশ জুড়ে যখন একের পর এক ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসছে, ঠিক সেইসময়ই এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ত্রিপুরা। পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি উঠছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Unnao Gang Rape Tripura Burnt Alive Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy