Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

শিশুর মৃত্যু বারাণসীতে, তপ্ত বিহারও, উত্তরপ্রদেশে নিহত বেড়ে ১৬

উত্তরপ্রদেশের কানপুর ও রামপুরে বড়সড় গন্ডগোল হয়েছে। বিহারে ঝামেলা হয়েছে আরজেডি-র বন্‌ধকে ঘিরে।

কানপুরে পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ। ছবি: পিটিআই।

কানপুরে পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০৩
Share: Save:

অশান্ত উত্তরপ্রদেশে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ ঘিরে গত তিন দিনের হিংসায় ওই রাজ্যে মোট ১৬ জন মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে ৮ বছরের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে। গত কাল পুলিশ লাঠি চালানোর সময়ে পাশের গলিতে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল সে। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছিল মহম্মদ সাগির নামে শিশুটি। হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

আজ উত্তরপ্রদেশের কানপুর ও রামপুরে বড়সড় গন্ডগোল হয়েছে। বিহারে ঝামেলা হয়েছে আরজেডি-র বন্‌ধকে ঘিরে। রেল ও রাস্তা অবরোধ হয়েছে, ভাঙচুর হয়েছে গাড়ি। বিক্ষোভ হয়েছে মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কেরলেও। তবে অসমে শান্তি ফিরছে। মেঙ্গালুরুতে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আজ দেখা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ও পি সিংহ এখনও বলছেন, তাঁরা গুলি চালাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সব ক’টি মৃত্যুই হয়েছে গুলি-বিনিময়ের মধ্যে পড়ে। ময়না-তদন্তেই তা স্পষ্ট হবে। আমাদের গুলিতে কেউ মারা গেলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করিয়ে ব্যবস্থা নিতাম।’’ তা-হলে গুলি চালাল কে? মনে করা হচ্ছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে যে মৃত্যুগুলি ঘটেছে, সেই গুলি বিক্ষোভকারীরাই ছুড়েছেন বলে ইঙ্গিত করেছেন ডিজি। আইজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রবীণ কুমার জানান, সারা রাজ্যে বিক্ষোভের এলাকা থেকে ৪০৫টি কার্তুজের খোল মিলেছে। ২৬৩ জন আহত পুলিশের মধ্যে ৫৭ জনের শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘পোশাক’ বেছেই কি পুলিশের লাঠি

প্রতিবাদীরা মহিলা ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে ডিজি-র অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘লখনউয়ে আমি মেয়েদের বিক্ষোভ ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলাম। বারাণসীতে বাচ্চারা ছিল। যারা নাগরিকত্ব আইনের মানেই জানে না, তারাও হাতে পাথর তুলে নিয়েছে।’’

কানপুরে আজ এতিমখানা ফাঁড়িতে আগুন লাগায় জনতা। তাদের ছোড়া ইটে আহত হন পুলিশকর্মীরা। লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস চালায় পুলিশ। সমাজবাদী পার্টির দুই নেতা অমিতাভ বাজপেয়ী এবং কমলেশ তিওয়ারিকে গ্রেফতার করা হয়। রামপুরে আজ ছিল বন‌্‌ধ। পুলিশের অভিযোগ, ১২ থেকে ১৮ বছরের কিশোরদের সঙ্গে নিয়ে ৪০০-৫০০ জনের একটা ভিড় শহরের ইদগা এলাকায় পুলিশকে পাথর ছুড়তে শুরু করে। সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন পুলিশ ও বিক্ষোভকারী আহত হন। গোটা উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা বলবৎ রাখা হচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রাজ্য জুড়ে গুরুতর অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৭০৫ জনকে। সমাজমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্টের অভিযোগে ধৃত আরও ১০২ জন। আটক প্রায় ৪৫০০। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে তৃণমূলের চার জনের প্রতিনিধিদল কাল লখনউ যাচ্ছে।

বিহারের বন্‌ধে আজ সমর্থন ছিল কংগ্রেস এবং আরএলএসপির। বন‌্‌ধ সমর্থকেরা কোথাও খালি গায়ে, কোথাও টায়ার পুড়িয়ে এমনকি মোষের পাল ছেড়ে দিয়েও রাস্তা রুখেছেন। মুঙ্গের, মুজফ্‌ফরপুর, ভাগলপুর, বেগুসরাই— অবরোধ হয় সর্বত্রই। ব্রহ্মপুরাতে দোকান খোলা নিয়ে অশান্তি বাধে। অন্তত সাতটি ট্রেন দেরিতে চলে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছিলেন, বিহারে এনআরসি হবে না। তাতে আমল না দিয়ে আরজেডি নেতা রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘আশ্বাসটাই গা-ছাড়া। নীতীশেরা কেন নাগরিকত্ব বিল সমর্থন করেছিলেন?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Violence CAA Uttar Pradesh Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy