হঠাত্ করে হাসপাতালে ঢুকতে গেলে মনে হবে নতুন কোনও জলাশয় খোঁড়া হয়েছে। কারণ, সেখানে নিশ্চিন্তে চড়ে বেড়াচ্ছে হাঁস। তার মধ্যে দিয়েই জলকাদা মাড়িয়ে রোগীদের পৌঁছতে হচ্ছে হাসপাতালে। অন্তর্বিভাগের পাশেই রয়েছে নিকাশি নালা। তার পাশ দিয়েই হাসপাতালে ঢোকার রাস্তা। সেই নালার জল আর রাস্তার জল মিশে একাকার হয়ে জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। দুর্গন্ধে অন্তর্বিভাগের রোগীদের টিঁকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। ওই নোংরা জল দূষণ ছড়াচ্ছে গোটা হাসপাতাল চত্বরে। মালদহের চাঁচল মহকুমা হাসপাতালের ছবিটা এখন এমনই।
সারা বছর ধরেই ওই রাস্তায় কমবেশি জল জমে থাকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে ওই রাস্তা আক্ষরিক অর্থেই জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন নোংরা আবর্জনা জমে থাকায় গোটা চত্বরেই বেড়েছে মশার উত্পাত। দুর্গন্ধের পাশাপাশি মশার দাপটে নাজেহাল হতে হচ্ছে হাসপাতালের শয্যায় থাকা কয়েকশো রোগীকে। নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে পড়ার পাশাপাশি আবাসন ও দোকানের ব্যবহার করা জল এসে জমা হয়ে থাকায় ওই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই ঘটনায় রোগী ও তাদের আত্মীয়রাই নন। উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি মহকুমা প্রশাসনও। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ওই পরিস্থিত চলতে থাকলেও কেন হাসপাতালের মতো এলাকার সমস্যা মেটানো নিয়ে এত উদাসীন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও পরিস্থিতি আঁচ করে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে!
চাঁচলের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারক সোমনাথ ভট্টাচার্য় বলেন, “বিষয়টি বিএমওএইচ দেখছেন।” চাঁচলের বিএমওএইচ প্রদীপ বারুই বলেন, “প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়েই সমস্যা তৈরি হয়েছে। সাময়িকভাবে কীভাবে সমস্যা মেটানো যায় তা দেখা হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতাল চত্ত্বরের জল নিকাশি নালার মাধ্যমে পিছনের মাঠে ফেলা হতো। কিন্তু বাড়ি, দোকান গড়ে ওঠায় নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চাঁচলের মহকুমাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, “ওখানে নিকাশির সমস্যা রয়েছে। সমস্যা স্থায়ীভাবে মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্প তৈরি করে তা স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, হাসপাতাল চত্বরের আবাসনে ৩৮টি জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে। বেশ কিছু ট্যাঙ্ক ফুটো হয়ে গিয়েছে। আবার বেশ কিছু কর্মীর আবাসনে ট্যাঙ্ক নেই। তাদের জল ধরে রাখার জন্য একাধিকবার পাম্প চালাতে হয়। ফুটো ট্যাঙ্ক ও উপচে পড়া বিপুল পরিমাণ জল এসে রাস্তায় জমা হয়। লাগোয়া বাড়ি ও দোকানের জল রাস্তায় গড়িয়ে এসে পড়ে। নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে পড়ায় সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। অথচ অর্থাভাবে কিছু করা যাচ্ছে না। রোগী ও তাদের আত্মীয়দের অভিযোগ, নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত জল পেরিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়। গন্ধ আর মশার দাপটে অন্তর্বিভাগে থাকা রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
মহকুমা হাসপাতালের ওই বেহাল দশায় এক রোগী অনুপ দাস ও রোগীর আত্মীয় কোহিনুর বিবির কটাক্ষ, “যা অবস্থা তাতে আগে হাসপাতালের শুশ্রূষা জরুরি। সেটা যদি স্বাস্থ্য দফতর বা প্রশাসন না করতে পারে তা হলে এলাকার বাসিন্দা সহ রোগীদের কাছে চাঁদা তুলে ব্যবস্থা করুক। আমরা স্বেচ্ছায় তা দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy