চাইলে কি আমরা আমাদের আয়ু বাড়িয়ে নিতে পারি? দেহের ‘আজব ঘড়ি’টিকে চালাতে পারি আমাদের ইচ্ছেমতো? জীবনশৈলীতে সংযম আনলে আয়ু বৃদ্ধি সম্ভব, এমনটাই জানিয়েছেন লেখক ড্যান বাটনার। তাঁর বই ‘দ্যা ব্লু জ়োন্স’-এ আয়ু বৃদ্ধির তিনটি উপায়ের কথা লিখেছেন লেখক। দীর্ঘজীবী হতে জীবনে বাবার মন্ত্রই মেনে চলেন তিনি। ড্যান বলেছেন, “আমার বাবা ১০১ বছর জীবিত ছিলেন। শেষ দিন পর্যন্ত তিনি বেশ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতেন। ৭০ বছর বয়স অবধি তিনি নিয়মিত সকালবেলা মাঠে দৌড়তে যেতেন। মানসিক চাপ থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতেন। পরিবার ও বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে সবসময় হাসিখুশি থাকতেন।” লেখক লিখেছেন, “আমিও ১০০ বছর বাঁচতে চাই। আর দীর্ঘজীবী হতে আমিও বাবার মন্ত্রই মেনে চলি।”
আরও পড়ুন:
ড্যান তাঁর বাবার খাদ্যাভ্যাস নিয়েও আলোচনা করেছেন তাঁর বইতে। তিনি লেখেন, “বাবা বলতেন প্রাতরাশ খেতে হবে রাজার মতো করে, দুপুরের খাবার খেতে হবে যুবরাজের মতো করে আর রাতের খাবার খেতে হবে আমজনতার মতো করে। রাতের খাবার বিকেলের মধ্যেই সেরে ফেলতেন বাবা। আর তিনি সবসময় বলতেন যে, পেট ৮০ শতাংশ ভরে গেলেই খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত।” লেখক নিজে এক সময় প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেলতেন। তবে এখন তিনি মেপে খান। তাঁর রোজের খাবারে ৯০ শতাংশই শাকসব্জি থাকে। মাঝেমধ্যে মাছ খান তিনি। বাইরের ভাজাভুজি, রেস্তরাঁর খাবার একেবারে খান না বললেই চলে। লেখক লিখেছেন, “বাবা নিয়মিত মদ্যপান করতেন। তবে শেষ পাঁচ বছরে তিনি মদ্যপান একেবারেই বন্ধ করে দেন। আমি অবশ্য রোজ রাতে দু’গ্লাস ওয়াইন খাই। জানি এই অভ্যাস ভাল নয়, তবে এখনও পর্যন্ত এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি।”
বাবার মতোই নিয়মিত শরীরচর্চা করেন ড্যান। তবে বদ্ধ ঘরে বসে নয়, খোলামেলায় প্রকৃতির সান্নিধ্যে থেকেই শরীরচর্চা করতে পছন্দ করেন তিনি। লেখক বলেন, “একা থাকতে পছন্দ করতেন না বাবা। মায়ের মৃত্যুর পর একাধিক বিয়ে করেন তিনি। বিষয়টি আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সহজ ছিল না। তবে তাঁকে খুশি থাকতে দেখে আমিও সবটা মেনে নিয়েছিলাম।”
আরও পড়ুন:
লেখকের মতে, মানসিক চাপ শরীরে ধূমপানের মতোই ক্ষতি করে। দীর্ঘজীবী হতে মানসিক চাপ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকাই শ্রেয়। সব সময়ই বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-পরিজনদের নিয়ে হইহুল্লোড়, আনন্দ করতে হবে।