Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
diamond

Most Expensive Blue Diamond: বিশ্বের বৃহত্তম নীল হিরে বিক্রি হল ৪৩৬ কোটি টাকায়! অজানা রইল নেপথ্যের রক্তাক্ত ইতিহাস

নিলামে উঠতেই হিরেটি ঘিরে শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি। আট মিনিট ধরে নিলাম চলার পর অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ৪৩৬ কোটি টাকায় কিনে নেন হিরেটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ১৫:৫০
Share: Save:
০১ ১৪
এ যাবৎ নিলামে ওঠা সবচেয়ে বড় হিরেটি বিক্রি হয়ে গেল হংকংয়ে। দাম উঠল ৫৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৪৩৬ কোটি টাকারও বেশি। হিরেটির নাম ‘দ্য ডি বিয়ার্স কুল্লিনান ব্লু’।

এ যাবৎ নিলামে ওঠা সবচেয়ে বড় হিরেটি বিক্রি হয়ে গেল হংকংয়ে। দাম উঠল ৫৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৪৩৬ কোটি টাকারও বেশি। হিরেটির নাম ‘দ্য ডি বিয়ার্স কুল্লিনান ব্লু’।

০২ ১৪
১৫.১০ ক্যারেটের হিরেটির আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছিল হয়েছিল প্রায় ৩৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু নিলামে উঠতেই হিরেটি ঘিরে শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি। আট মিনিট ধরে নিলাম চলার পর অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি টেলিফোন মারফত সর্বোচ্চ দাম দিয়ে কিনে নেন হিরেটি।

১৫.১০ ক্যারেটের হিরেটির আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছিল হয়েছিল প্রায় ৩৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু নিলামে উঠতেই হিরেটি ঘিরে শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি। আট মিনিট ধরে নিলাম চলার পর অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি টেলিফোন মারফত সর্বোচ্চ দাম দিয়ে কিনে নেন হিরেটি।

০৩ ১৪
২০২১ সালে আফ্রিকার কুল্লিনান খনিতে পাওয়া গিয়েছিল হিরেটি। হিরের গুণমান বিচারকারী সংস্থা জেমোলজিকাল ইনস্টিটিউট অব আমেরিকা রং ও গঠনের উপর ভিত্তি করে হিরেটিকে ‘অতি বিরল’ ‘ফ্যান্সি ভিভিড ব্লু’ হিরে বলে চিহ্নিত করে।

২০২১ সালে আফ্রিকার কুল্লিনান খনিতে পাওয়া গিয়েছিল হিরেটি। হিরের গুণমান বিচারকারী সংস্থা জেমোলজিকাল ইনস্টিটিউট অব আমেরিকা রং ও গঠনের উপর ভিত্তি করে হিরেটিকে ‘অতি বিরল’ ‘ফ্যান্সি ভিভিড ব্লু’ হিরে বলে চিহ্নিত করে।

০৪ ১৪
যত হিরে সংস্থাটি পরীক্ষা করে তার মধ্যে কেবল ১ শতাংশ হিরে এই তকমা পায় বলে খবর সংস্থা সূত্রে। নিলামকারী সংস্থার দাবি এ যাবৎ এই ধরনের যত হিরে তাঁরা নিলাম করেছে তার মধ্যে শুধু ৫টি হিরে ১০ ক্যারাটের বেশি ছিল। কিন্তু ১৫ ক্যারাটের বেশি ওজনের নীল হিরে এই প্রথম।

যত হিরে সংস্থাটি পরীক্ষা করে তার মধ্যে কেবল ১ শতাংশ হিরে এই তকমা পায় বলে খবর সংস্থা সূত্রে। নিলামকারী সংস্থার দাবি এ যাবৎ এই ধরনের যত হিরে তাঁরা নিলাম করেছে তার মধ্যে শুধু ৫টি হিরে ১০ ক্যারাটের বেশি ছিল। কিন্তু ১৫ ক্যারাটের বেশি ওজনের নীল হিরে এই প্রথম।

০৫ ১৪
হিরেটির নামে ‘ডি বিয়ার্স’ অংশটি এসেছে উত্তোলক সংস্থা ডি বিয়ার্সের থেকে। হিরেটি কাটা ও পালিশ করার দায়িত্ব ডায়াকোর নামক অপর একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে পালন করেছে ডি বিয়ার্স। হিরেটি কাটা হয়েছে স্টেপ কাট শৈলীতে। সাধারণত সাদা হিরে এই পদ্ধতিতে কাটা হয়।

হিরেটির নামে ‘ডি বিয়ার্স’ অংশটি এসেছে উত্তোলক সংস্থা ডি বিয়ার্সের থেকে। হিরেটি কাটা ও পালিশ করার দায়িত্ব ডায়াকোর নামক অপর একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে পালন করেছে ডি বিয়ার্স। হিরেটি কাটা হয়েছে স্টেপ কাট শৈলীতে। সাধারণত সাদা হিরে এই পদ্ধতিতে কাটা হয়।

০৬ ১৪
শুধু হিরেটি নয়, সে সংস্থা হিরেটি বাজারে এনেছে সেই ডি বিয়ার্স নামক সংস্থাটিও কিন্তু কম বর্ণময় নয়। ডি বিয়ার্স সংস্থাটির জন্ম ১৮৮৭-৮৮ সালে। ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ সেশিল জন রোডস এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা।

শুধু হিরেটি নয়, সে সংস্থা হিরেটি বাজারে এনেছে সেই ডি বিয়ার্স নামক সংস্থাটিও কিন্তু কম বর্ণময় নয়। ডি বিয়ার্স সংস্থাটির জন্ম ১৮৮৭-৮৮ সালে। ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ সেশিল জন রোডস এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা।

০৭ ১৪
সেশিল রোডস সাহেব ছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে ভাবে ভারত দখল করেছিল, তেমনই রোডসের ‘ব্রিটিশ সাউদ আফ্রিকা কোম্পানি’ আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করে। গোটা অঞ্চলটির নাম রাখা হয় ‘রোডেসিয়া’। স্থানটিকে এখন আমরা চিনি জিম্বাবোয়ে ও জাম্বিয়া নামে। তৎকালীন আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তের ব্রিটিশ উপনিবেশ কেপ কলোনির প্রধানমন্ত্রীও হন রোডস।

সেশিল রোডস সাহেব ছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে ভাবে ভারত দখল করেছিল, তেমনই রোডসের ‘ব্রিটিশ সাউদ আফ্রিকা কোম্পানি’ আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করে। গোটা অঞ্চলটির নাম রাখা হয় ‘রোডেসিয়া’। স্থানটিকে এখন আমরা চিনি জিম্বাবোয়ে ও জাম্বিয়া নামে। তৎকালীন আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তের ব্রিটিশ উপনিবেশ কেপ কলোনির প্রধানমন্ত্রীও হন রোডস।

০৮ ১৪
শিক্ষাক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যতম সম্মানীয় বৃত্তি, রোডস স্কলারশিপও শুরু করেন তিনিই। জাতি হিসেবে ইংরেজদের শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাস ছিল তাঁর। তাই বিশ্ব জুড়ে ইংরেজি ভাষার প্রসার ও প্রচারের জন্য এই বৃত্তি চালু করেন তিনি। আজও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্তাবধানে এই স্কলারশিপ বন্টন করা হয়।

শিক্ষাক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যতম সম্মানীয় বৃত্তি, রোডস স্কলারশিপও শুরু করেন তিনিই। জাতি হিসেবে ইংরেজদের শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাস ছিল তাঁর। তাই বিশ্ব জুড়ে ইংরেজি ভাষার প্রসার ও প্রচারের জন্য এই বৃত্তি চালু করেন তিনি। আজও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্তাবধানে এই স্কলারশিপ বন্টন করা হয়।

০৯ ১৪
জন্মলগ্ন থেকে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত, প্রায় একশো বছর ধরে গোটা বিশ্বের হিরে উত্তোলন ও বিক্রয়ের দুনিয়ায় একাধিপত্য ছিল ডি বিয়ার্সের। বিশ্বের সব ধরনের হিরে ক্রয়-বিক্রয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশই হত এই সংস্থার হাত ধরে।

জন্মলগ্ন থেকে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত, প্রায় একশো বছর ধরে গোটা বিশ্বের হিরে উত্তোলন ও বিক্রয়ের দুনিয়ায় একাধিপত্য ছিল ডি বিয়ার্সের। বিশ্বের সব ধরনের হিরে ক্রয়-বিক্রয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশই হত এই সংস্থার হাত ধরে।

১০ ১৪
বাণিজ্যের একাধিপত্য ধরে রাখতে ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগও ওঠে ব্রিটিশ সংস্থাটির বিরুদ্ধে। আফ্রিকার একাধিক স্থানে দীর্ঘ দিন ধরে ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। যে ভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারত থেকে ধন-সম্পদ লুঠ করে, অনেকের অভিযোগ ঠিক তেমন ভাবেই এই সংস্থা আফ্রিকার হিরে লুঠ করে।

বাণিজ্যের একাধিপত্য ধরে রাখতে ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগও ওঠে ব্রিটিশ সংস্থাটির বিরুদ্ধে। আফ্রিকার একাধিক স্থানে দীর্ঘ দিন ধরে ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। যে ভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারত থেকে ধন-সম্পদ লুঠ করে, অনেকের অভিযোগ ঠিক তেমন ভাবেই এই সংস্থা আফ্রিকার হিরে লুঠ করে।

১১ ১৪
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি ছিল ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ কেনা বেচা করার। বিংশ শতকের শেষ দিকে আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে গৃহযুদ্ধ দেখা দেয়। অ্যাঙ্গোলা, আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া, কঙ্গোর মতো দেশে ক্ষমতা দখলের জন্য লুঠ, ধর্ষণ ও গণহত্যা চালাতে থাকে জঙ্গি সামরিক নেতারা। এই নেতারা টাকার জন্য শিশু ও সাধারণ মানুষকে ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করে হিরে উত্তোলন করতে থাকে। এই হিরেগুলিকে রক্তস্নাত হিরে বা ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ বলা হয়।

সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি ছিল ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ কেনা বেচা করার। বিংশ শতকের শেষ দিকে আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে গৃহযুদ্ধ দেখা দেয়। অ্যাঙ্গোলা, আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া, কঙ্গোর মতো দেশে ক্ষমতা দখলের জন্য লুঠ, ধর্ষণ ও গণহত্যা চালাতে থাকে জঙ্গি সামরিক নেতারা। এই নেতারা টাকার জন্য শিশু ও সাধারণ মানুষকে ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করে হিরে উত্তোলন করতে থাকে। এই হিরেগুলিকে রক্তস্নাত হিরে বা ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ বলা হয়।

১২ ১৪
অভিযোগ ওঠে এই জঙ্গি নেতাদের থেকে হিরে কেনে ডি বিয়ার্স। সরকারি ভাবে সংস্থাটি এই কথা স্বীকার না করলেও নব্বইয়ের দশকে ডি বিয়ারস ৭৭৭ ক্যারেটের বিশাল একটি হিরে কেনে। বিখ্যাত এই হিরেটির নাম ‘মিলেনিয়াম স্টার’। জানা যায় এটি ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত কঙ্গো থেকে প্রাপ্ত একটি হিরে।

অভিযোগ ওঠে এই জঙ্গি নেতাদের থেকে হিরে কেনে ডি বিয়ার্স। সরকারি ভাবে সংস্থাটি এই কথা স্বীকার না করলেও নব্বইয়ের দশকে ডি বিয়ারস ৭৭৭ ক্যারেটের বিশাল একটি হিরে কেনে। বিখ্যাত এই হিরেটির নাম ‘মিলেনিয়াম স্টার’। জানা যায় এটি ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত কঙ্গো থেকে প্রাপ্ত একটি হিরে।

১৩ ১৪
বিংশ শতকের শুরুতে এই ধরনের হিরে কেনা-বেচা নিয়ে প্রবল সমালোচনা শুরু আন্তর্জাতিক মহলে। শেষ পর্যন্ত জাতিসঙ্ঘ ও একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার চেষ্টার ফলে এই ধরনের হিরে কেনা-বেচা নিষিদ্ধ হয়। ডি বিয়ার্স কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, এই ধরনের কোনও হিরে এখন তারা ক্রয়-বিক্রয় করে না।

বিংশ শতকের শুরুতে এই ধরনের হিরে কেনা-বেচা নিয়ে প্রবল সমালোচনা শুরু আন্তর্জাতিক মহলে। শেষ পর্যন্ত জাতিসঙ্ঘ ও একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার চেষ্টার ফলে এই ধরনের হিরে কেনা-বেচা নিষিদ্ধ হয়। ডি বিয়ার্স কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, এই ধরনের কোনও হিরে এখন তারা ক্রয়-বিক্রয় করে না।

১৪ ১৪
নব্বইয়ের দশকের পরপরই হিরের বাজারে ডি বিয়ারসের একাধিপত্য কমতে থাকে। তবে একাধিপত্য কমলেও সংস্থাটি আজও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হিরে বিপণন সংস্থা। হিরের বাজারের ২৯ শতাংশ এখনও তাঁদেরই দখলে।

নব্বইয়ের দশকের পরপরই হিরের বাজারে ডি বিয়ারসের একাধিপত্য কমতে থাকে। তবে একাধিপত্য কমলেও সংস্থাটি আজও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হিরে বিপণন সংস্থা। হিরের বাজারের ২৯ শতাংশ এখনও তাঁদেরই দখলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy