Advertisement
E-Paper

বদ্ধ ঘরে বসে কাজ, ব্যথা বেদনার পৌষমাস, কিন্তু বাঁচবেন কী করে?

কাজ তো সব বসেই। সকাল থেকে সেই যে শুরু হয়, দুপুর–বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামার পরও চলতে থাকে। রোদ বা গরমের ভয়ে অফিসে বা ঘরে জ্বলে আলো। ঠান্ডা আরামদায়ক ঘর ছেড়ে পারতপক্ষে বাইরে বেরনো হয় না। ফল, ব্যথা বেদনা। 

বসে কাজে ব্যাথা বাড়ে। ছবি— শাটারস্টক

বসে কাজে ব্যাথা বাড়ে। ছবি— শাটারস্টক

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:২৪
Share
Save

কাজ তো সব বসেই। সকাল থেকে সেই যে শুরু হয়, দুপুর–বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামার পরও চলতে থাকে। রোদ বা গরমের ভয়ে অফিসে বা ঘরে জ্বলে আলো। ঠান্ডা আরামদায়ক ঘর ছেড়ে পারতপক্ষে বাইরে বেরনো হয় না। ফল, ব্যথা বেদনা। কম্পিউটারের সঙ্গত পেলে তো কথাই নেই।

এমনিতেও আজকাল এ বিপদ সবার। তার উপর করোনা–কালে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের দৌলতে বিপদ আরও বেড়েছে। ঘরের বাইরে বের হলে সংক্রমণের আশঙ্কা। কাজেই এক চিলতে ঘরে বসেই যত কাজ। ফলে নানান কারণে বেড়ে যায় ব্যথার প্রকোপ।

ব্যথার নানান কারণ

• বসে থাকলে শরীরের ভার কোমরে এসে পড়ে। সে চাপে ক্লান্ত ও দুর্বল হয় পেশি। শুরু হয় ব্যথা। বসে থাকার ফলে ওজন ও ভুঁড়ি বেড়ে সেই চাপও গিয়ে পড়ে হাঁটু ও কোমরে। আবার ওজন কমানোর আশায় ভুলভাল ডায়েটিং করলে অপুষ্টির হাত ধরে হাড় নরম হতে শুরু করে বিপদ বাড়ায়।

• গায়ে পর্যাপ্ত রোদ না লাগলে ভিটামিন ডি–এর অভাব ঘটে ব্যথা বাড়তে পারে।

• দিনের শেষে আরাম কেদারায় গা এলিয়ে বসে টিভি দেখা বা আড্ডা মারার অভ্যাস আছে অনেকেরই। প্রায় কেউই জানেন না যে তাতে কোমর হাঁটু ঘাড়ের ক্ষতি হয়।

• নিয়ম মেনে কম্পিউটারে কাজ করলে ঠিক আছে। কিন্তু তা হয় না প্রায়শই। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে টেবিলের এক ধারে থাকে মনিটর, মুখের সামনে কি বোর্ড। ফলে কাজ করার সময় ঘাড় বেঁকে থাকে। তারই ফল, ঘাড়ে শক্ত ভাব, ব্যথা।

• কি বোর্ডে আঙুল চালাতে চালাতে আঙুল ব্যথা হয়, কব্জির স্নায়ুতে চাপ পড়ে কব্জি ব্যথা থেকে ‘কারপাল টানেল সিনড্রোম’ পর্যন্ত হতে পারে। কনুই বা কাঁধ ব্যথাও হয় অনেকের।

• সাধারণ চেয়ারে বসে অনেকক্ষণ এক ভাবে কাজ করলে বাড়ে কোমর ব্যথা।

• চেয়ার টেবিলের উচ্চতা ঠিক না থাকলে ঘাড়ে কোমরে সমস্যা হতে পারে।

• হাড়ের ক্যালসিয়াম কমাতে ধূমপান, মদ, ফাস্টফুড, নরম পানীয়র জুড়ি নেই। বসে কাজ করতে করতে একঘেয়ে লাগলে এ সব খাওয়া চলে ভালমতো। বিপদ বাড়ে।

আরও পড়ুন : মাঝে মধ্যেই রাত জাগেন? বিপদ এড়াতে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন

সমাধান

• এক ঘণ্টা বসে কাজ করার পর ৫–৭ মিনিট ছুটি নিন। আড়মোড়া ভাঙুন। দু–একটা স্ট্রেচিং করুন। বসার ধরন মাঝে মাঝে পাল্টান। চেয়ার ভাল না হলে কোমরের কাছে কুশন রাখুন।

• হাঁটু ব্যথা এড়াতে চেয়ারে বসে পা টেবিলের নীচে রাখা অবস্থায় প্রতি ঘণ্টায় অন্তত এক মিনিট থাইয়ের পেশি শক্ত ও ঢিলে করুন।

• কাজ করতে করতে ঘাড় শক্ত লাগলে চেয়ারে মাথা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকুন মিনিট খানেক। মাথা ডাইনে–বাঁয়ে ঘোরান দু’চার বার। চোখ ব্যথা করলে টেবিলে দু’কনুই রেখে হাতের তালুতে চোখ চেপে ধরে রাখুন ২–৩ মিনিট।

• আঙুল ও কব্জি ব্যথা করলে মাঝে মাঝে বিশ্রাম দিন। অবসর পেলে হাত মুঠো করুন–খুলুন। হাত মুঠো করে কব্জিকে বিভিন্ন দিকে ঘোরান।

• ৮–১০ ঘণ্টার কাজে অন্তত বার দুয়েক মিনিট দশেক খোলা হাওয়ায় ঘুরে আসুন।

• ভিটামিন ডি–এর অভাব মেটাতে দিনে এক ঘণ্টা অন্তত রোদ লাগান গায়ে।

আরও পড়ুন : সৌরভ: কী হয়েছিল, কেন হয়েছিল

কাজের শেষে

• হয় হাঁটাচলা করুন, নয়তো শুয়ে থাকুন।

• কব্জি ব্যথা হলে গরম জলে ডুবিয়ে হাত মুঠো করা–ছাড়ার ব্যায়াম করতে পারেন।

• বিশেষজ্ঞের কাছে শিখে ঘাড়ের কিছু ব্যায়াম করুন।

• ব্যথা বেদনা কম রাখতে পাতলা তুলোর তোষকে বা রবারাইড কয়্যার ম্যাট্রেসে ও মোটামুটি ২ ইঞ্চি মতো উচ্চতার তুলোর বালিশে ঘুমোন। ৬ মাস থেকে ১ বছর অন্তর বালিশ বদলান।

• টিভি এমন জায়গায় রাখুন, যাতে চিৎ হয়ে শুয়ে দেখা যায়।

• রোজ ২০–৩০ মিনিট হাঁটুন ও মিনিট ২০ হাঁটু, কোমর, ঘাড়, কাঁধ, হাতের ব্যায়াম করুন।

ব্যথা কমাতে কী খাবেন, কী খাবেন না

• ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন, ডিম, দুধ, দই, ছানা, চিজ, মাংস, ছোট মাছ, কাঁকড়া, খেজুর, ন্যাসপাতির সঙ্গে পর্যাপ্ত ভাত, রুটি, ডাল, শাকসব্জি খান।

• মধ্যবয়সি মহিলারা দিনে একটা করে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন।

• চা, কফি, কোলা কম খান।

Pain Work Posture Work from home Doctor's Advice

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}