রক্ত দেখে ভয় কোনও জটিল সমস্যা নয। ছবি: শাটারস্টক।
রক্ত দেখলেই ভয় পান বা প্রায় অজ্ঞান হওয়ার জোগাড় হয়? দুশ্চিন্তার কারণ নেই। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, পৃথিবীর প্রায় তিন শতাংশ মানুষই এমন ভীতিতে ভোগেন। চিকিৎসকদের ভাষায় ভয়ের জেরে হওয়া প্রতিক্রিয়াকে ভ্যাসোভেগাল সিনকোপ বলে। একে নিউরোকার্ডিওজেনিক সিনকোপ-ও বলে। ‘ভ্যাসো’ বলতে বোঝানো হয় রক্তনালী এবং ‘ভ্যাগাস’ হল একটি বিশেষ স্নায়ু ।
রক্ত দেখে ভয় পাওয়াটি মূলত হিমোফোবিয়া। খুব সাধারণ এই ফোবিয়া আদতে নীরিহ। মারাত্মক ক্ষতি করে না। তবে যদি ভয়ের চোটে ঘন ঘন অজ্ঞান বা বাড়াবাড়ি রকমের প্রতিক্রিয়া প্রায়ই হতে থাকে, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
অনেকেই ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ দেখলে ভয় পান। রক্তদান করতেও এই ভীতি কাজ করে। মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘হিমোফোবিয়ায় ভোগেন এমন মানুষদের ক্ষেত্রে রক্ত দেখলেই তাঁদের হার্ট রেট বেড়ে যায়। সেখান থেকে অ্যাংজাইটি বা প্যানিক অ্যাটাক হয়। এতে রক্তচাপও বাড়ে অনেকের ক্ষেত্রে।’’
আরও পড়ুন: ডিম খান এ সব উপায়ে, পুষ্টিগুণ তো মিলবেই, সঙ্গে আটকাবে মেদ
অনেকে রক্তপরীরক্ষার সময়ও এই ভীতিতে ভোগেন।
তবে শুধু এটুকুই নয়, অনেকেই এই প্যানিক অ্যাটাক সামলাতে না পেরে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখেন। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হিমোফোবিয়া নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা অবশ্য দাবি করে, এই ফোবিয়া কিছুটা জিনগত, অর্থাৎ উত্তরাধীকার সূত্রেও মেলে।
কখন বাড়াবাড়ি?
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও মানসিক ভীতি (ফোবিয়া) নিয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করা গৌতম বরাটের মতে, ‘‘হিমোফোবিয়া আদতে খুবই নিরীহ। একে নিয়ে দুশ্চিন্তা বা মাতামাতি কোনওটাই প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু এটা তখনই বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যায়, যখন কারও রক্তচাপ এই আতঙ্কের জেরে তলানিতে পৌঁছে যায় ও ক্রনিক রক্তচাপের রোগী হয়ে ওঠেন। ঘন ঘন অজ্ঞান হওয়া থেকে খিঁচও চলে আসতে পারে। তখনই দরকার হয় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার।’’
আরও পড়ুন: ভিটামিন সি-র অভাব টের পাওয়া যায় না সহজে, এ সব লক্ষণেই সতর্ক হোন
এমন হলে কী করব?
চিকিৎসকের পরামর্শ তো নেবেন, কিন্তু হঠাৎ কাউকে এমন হতে দেখলে বা নিজের এমন হলে দ্রুত কোনও শক্ত জিনিসে হেলান দিয়ে বসে পড়ুন। ঘাড়ে জল দিন। ধীরে ধীরে শুয়ে পড়ে পা দুটোকে কোনও সাপোর্টের মাধ্যমে উঁচু করে রাখুন। এতে রক্ত চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক হবে ও প্যানিক অ্যাটাক সারবে।
রক্তে ভয় থাকলে মেডিক্যাল চেক আপ বা কোনও ইঞ্জেকশন নেওয়ার সময় একা যাবেন না। সূচের দিকে না তাকানোই ভাল। প্রয়োজনে পরীক্ষক বা চিকিৎসককে নিজের এই ফোবিয়ার কথা জানিয়ে রাখুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy