সোশ্যাল আইসোলেশন মানেই কিন্তু অচ্ছুৎ হয়ে থাকা নয়। বরং কিছু দিন কয়েকটা নিয়ম মেনে চলা। ছবি: আইস্টক।
বিশ্ব জুড়েই দ্রুত ছড়়াচ্ছে করোনা-কাঁটা। রোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আতঙ্কও। তবে চিকিৎসকদের মতে, অকারণ আতঙ্ক নয়, বরং ক’টা দিন নিয়ম মেনে থাকলেই এই অসুখকে পরাস্ত করা সম্ভব। রোগ হলে আক্রান্তকে ‘সোশ্যাল আইসোলেশন’-এ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
এই সোশ্যাল আইসোলেশনের উপরে নির্ভর করেই সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখার কথা ভাবছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু এই ধরনের আইসোলেশন করার মানে কী? কী ভাবে তা করা হয়?
সংক্রামক অসুখ বিশেষজ্ঞ সুমিত সেনগুপ্তের মতে, ‘‘সোশ্যাল আইসোলেশন কথার একেবারে আক্ষরিক অর্থ, বাড়িতে থেকেই সমাজের সব রকম জমায়েত থেকে দূরে থাকা। বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই মানুষকে অন্য মানুষের সংস্পর্শে আসতে হয়। অফিস, ক্লাব, পাড়ার আড্ডা, স্কুল-কলেজ, জিম, নানা রকম পার্টি, অনুষ্ঠান, বাজার, পারিবারিক জমায়েত, যাতায়াত— সব মিলিয়েই বাইরের মানুষজনের সংস্পর্শে আসতে হয় তাকে। অসুখ সন্দেহ হলে বা আক্রান্ত হলে তাকে এই অভ্যাসগুলি থেকে দিন ১৪-১৫ একটু সরে আসতে হবে। রোগ ঠেকিয়ে রেখে সংক্রমণ প্রতিরোধ করার এটাই উপায়।’’
আরও পড়ুন: শরীরের ভিতর কী ভাবে ঢোকে করোনা? কোন পথে চালায় আক্রমণ?
হাই ব্লাড প্রেশার ও ডায়াবেটিস থাকলে কোভিড-১৯ সাংঘাতিক হতে পারে
রোগীর দেখভাল করলেও মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
কী ভাবে থাকবেন সোশ্যাল আইসোলেশনের সময়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সোশ্যাল আইসোলেশন মানেই কিন্তু অচ্ছুৎ হয়ে থাকা নয়। বরং কিছু দিন কয়েকটা নিয়ম মেনে চলা।
• একা থাকলে এই সময় নিজের রান্নাবান্না নিজেই করে নিন। একান্ত তা না পারলে খাবার ডেলিভারি করে এমন কোনও সংস্থাকে অর্ডার করে দিন। ফোনে বলে রাখুন দরজার কাছে খাবার নামিয়ে রেখে যেতে। টাকাপয়সা দিয়ে রাখুন অনলাইনে। বাড়িতে অন্য লোকজন থাকলে তাঁরা সারা ক্ষণ সার্জিক্যাল মাস্ক পরে থাকুন। রোগীর জন্য রান্নাবান্না করা বা তাঁদের খেতে দেওয়ায় বাধা নেই। দেখভালের সময় পরে থাকুন এন ৯৫ মাস্ক। রোগীর হয়ে তাঁরাও তার অনেক কাজ করে দিতে পারেন। মাস্ক পরা থাকলে ও ঘন ঘন হাত ধুলে কোনও ভয় নেই।
• রোগীদের বাইরে না বেরনোই বাঞ্ছনীয়। চিকিৎসকের কাছে যাওয়া বা খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনও কাজে একান্তই বেরতে হলে রোগী ও রোগীর সঙ্গে কেউ গেলে দু’জনেই মাস্ক পরুন। ফিরে এসেই সাবান বা ইথাইল অ্যালকোহল মেশানো হ্যান্ডওয়াশে ও জলে স্নান সেরে নিন। কাপড় কেচে নিন সাবান জলে।
• যোগাসন ও শরীরচর্চা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। তাই জিমে না গিয়ে বাড়িতেই তা সারুন। ফোনে যোগাযোগ করে নিন কোনও ফিটনেস বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। তাঁকে ভিডিয়ো করে পাঠাতে বলুন কিছু ব্যায়াম। ফোনে কথা বলা বা ভিডিয়ো দেখায় কোনও বাধা নেই। শুধু আপনার ব্যবহারের ফোনটিকে আলাদা করে রাখুন।
• গামছা বা তোয়ালে, স্নানের উপকরণ, সবই প্রতি দিন গরম জলে ফুটিয়ে নিন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ওষুধ ও খাবার খান।
• রোগীর ব্যবহারের ঘর ও জিনিস আলাদা করে রাখতে পারলে ভাল। দরকার না পড়লে সেই ঘরে অন্য কারও প্রবেশে রাশ টানতে হবে। দেখভাল করতে তার ঘরে ঢুকলে বেরিয়েই ভাল করে হাত-পা ধুয়ে নিন। পরে থাকুন মাস্ক।
• বিশেষজ্ঞের মতে, রোগীর সঙ্গে গল্প করা বা একসঙ্গে বসে টিভি দেখায় কোনও বাধা নেই। শুধু এ সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরে থাকুন ও এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন। রোগীকে স্নান করানোর দরকার পরলে তাঁকে স্নান করানোর পর নিজেও জলে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মিশিয়ে স্নান সারুন। রোগীর বেশির ভাগ পরিচর্যা হাতে গ্লাভস পরে করুন। সেই গ্লাভসও প্রতি দিন গরম জলে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাই একাধিক গ্লাভসের সেট রাখুন ঘরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy