ওয়েবক্যাম চালু রেখে অফিসের মিটিং অথবা জ়ুম কল অথবা সন্তানের অনলাইন ক্লাস মাঝেমধ্যেই চলে। কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ক্যামেরা চালু রেখে চ্যাট করা অথবা ভিডিয়ো কলে কথা বলাও হয়। ওয়েবক্যাম যেমন কাজের জিনিস, তেমনই এর হাত ধরে বিপদও ঘনাতে পারে যখন তখন। অনেকে প্রায়শই ওয়েবক্যাম চালু রেখেই কাজ করেন। অথবা যখন কাজ করছেন না, তখনও ওয়েবক্যাম চালু থাকে। এর থেকে কী কী বিপদ হতে পারে এবং কী ভাবে সাবধান থাকা যাবে, তা জেনে রাখা ভাল।
ওয়েবক্যামে কেউ নজর রাখছে কি?
ভিডিয়ো কনফারেন্স বা লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিয়ো গেম খেলার পরে অনেকেই কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ক্যামেরা চালু রাখেন। এর থেকে কিন্তু ম্যালওয়ার বা কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকতে পারে। বিশেষ করে লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিয়ো খেলেন যাঁরা, তাঁদের বিপদ বেশি।
কেউ ওয়েবক্যাম হ্যাক করছে কি না অথবা ওয়েবক্যামের মাধ্যমে আপনার উপর নজরদারি চালাচ্ছে কি না, তা বোঝার কিছু উপায় আছে।
১) কম্পিউটার বা ল্যাপটপে যখন কাজ করছেন না, তখনও দেখবেন ওয়েবক্যামের আলো জ্বলছে। এমনও দেখা গিয়েছে ওয়েবক্যাম বন্ধ করার পরেও, আলো নেভেনি। এর অর্থ হল, আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম অন্যের কব্জায় চলে গিয়েছে।
২) কম্পিউটারে নিত্যনতুন ফাইল আসতে শুরু করবে। সেই সব ফাইল ডাউনলোডের অপশনও দেবে। মাঝেমধ্যে নানা রকম সফট্ওয়্যার ইনস্টল করার জন্য ‘পপ আপ’ আসবে।
আরও পড়ুন:
৩) কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ব্যাটারি খুব দ্রুত ক্ষয়ে যেতে থাকবে। চার্জও বেশি ক্ষণ থাকবে না।
৪) সেটিংস নিজে থেকেই বদলে যেতে থাকবে। অজান্তেই এমন সব সফ্টওয়্যার নিজে থেকেই ইনস্টল হয়ে যাবে, যা আপনি আগে কখনও দেখেননি।
৫) ডিভাইসের নিজস্ব ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যাবে।
বাঁচার উপায় কী?
ওয়েবক্যাম হ্যাকিং থেকে বাঁচতে হলে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতেই হবে—
১) অফিসের কাজ অথবা ব্যক্তিগত কাজের পরে সব সময়ে ওয়েবক্যাম বন্ধ করে দিন। যখন ক্যামেরার কাজ হচ্ছে না, তখন সম্ভব হলে ক্যামেরা ঢেকে রাখুন।
২) ডিভাইসের সফ্টওয়্যার ও ওপারেটিং সিস্টেম সব সময়ে আপডেট করে রাখুন।
৩) কম্পিউটারে ভাল অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করে রাখতে হবে। মাঝেমধ্যেই স্ক্যান করে দেখে নিন। অপ্রয়োজনীয় কোনও অ্যাপ বা ফাইল থাকলে, সেগুলি মুছে দিন।
৪) অজানা কোনও লিঙ্ক বা ফাইল ডাউনলোড করার অপশন এলে, তা এড়িয়ে যাবেন। এমন কোনও লিঙ্ক খুলবেন না, যেখানে ‘ইউআরএল’-এ নানা রকম চিহ্ন আছে। সেগুলি ভুয়ো হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
৫) সব সময়ে পাসওয়ার্ড আপডেট করুন। সমস্ত অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড দেবেন না। আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড দিন ও সময়ান্তরে তা বদলও করতে হবে।
৬) কম্পিউটারে যদি ম্যালওয়্যার ধরা পড়ে অথবা বোঝেন আপনার ওয়েবক্যাম হ্যাক্ড হয়েছে, যত ক্ষণ না সমস্যার সমাধান হয় ক্যামেরাটি ঢেকে রাখতে হবে।
৭) অনলাইন স্ট্রিমিং করতে হলে বা ভিডিয়ো কনফারেন্সের সময়ে ‘ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক’ (ভিপিএন) ব্যবহার করুন। ওয়াইফাই ব্যবহারের সময়েও সতর্ক থাকতে হবে।
আপনার কম্পিউটারের আইডি ও পাসওয়ার্ড যেন আড়ালেই থাকে।