কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে হিমশিম খান অনেকেই। মনোবিদদের কেউ কেউ বলেন, অফিসের কাজ সেখানেই শেষ করে আসা উচিত। বাড়ির সময়টা হওয়া উচিত একান্ত ব্যক্তিগত। এই একান্ত সময়ে নিজের শখকে গুরুত্ব দিতে পারেন। ভাল লাগার কাজ বেছে নিতে পারেন। তবে এই সময় অফিস নিয়ে মাথা ঘামানো নৈব নৈব চ।
কিন্তু নতুন এক সমীক্ষা বলছে একেবারে অন্য কথা। অবসর যাপনে ভাল লাগা থাক, তবে তারই সঙ্গে মিশে যাক নিজের কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে তোলার প্রস্তুতিও। একেই বলা হচ্ছে ‘লিজ়ার-ওয়ার্ক সিনারজাইজ়িং’ অর্থাৎ অবসর যাপন এবং কাজের একত্রীকরণ।
সহজাত মেধা যতই থাক, কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য তার ধার এবং ভার বাড়ানো জরুরি। প্রয়োজন নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু সে জন্য যা যা করণীয়, তার জন্যও তো সময় লাগে। অফিসে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা পরিশ্রমের পর সে সময় মেলে কই?
আরও পড়ুন:
গবেষকেরা বলছেন এই সমস্যার সমাধান করবে ‘লিজ়ার-ওয়ার্ক সিনারজাইজ়িং’। আমেরিকার পারজ্যু ইউনিভার্সিটির গবেষক কেট জিপে এবং ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়ার জেসিকা রডেল বলছেন, ‘‘অলস সময়ে সক্রিয়তা পেশাগত জীবনে উন্নতির পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনকেও ভাল রাখতে সাহায্য করবে।’’
লিজ়ার-ওয়ার্ক সিনারজাইজ়িং কী?
বিষয়টি আরও একটু খুলে বলা যাক। অলস সময়ে অনেকেই পছন্দের নানা কাজ করেন। সেই কাজ যদি নিজস্ব দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়, তা হলে সময়ের সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হবে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে অবসর সময়ে অফিসের কাজ এনে করতে বলা হচ্ছে না। বরং কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়তে পারে, এমন কিছুর মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যেমন অনেকেই বই পড়তে ভালবাসেন। কেউ অবসর সময়ে পডকাস্ট শোনেন, বিভিন্ন ভিডিয়ো দেখেন। যদি কেউ তালিকায় এমন বই রাখেন, যা কাজের ব্যাপারে জ্ঞান বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে, সে ক্ষেত্রে অবসরে বই পড়ার আনন্দও যেমন থাকবে আবার ব্যক্তিগত সুবিধাও হবে। কী ভাবে অফিসে একটি দলকে নেতৃত্ব দিতে হবে, কী ভাবে দলের বাকি সদস্যদের উৎসাহ দেওয়া যায়, সেই সংক্রান্ত ভিডিয়ো দেখলে তা কার্যক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হতে পারে। এ ভাবেই অবসর সময়কে কর্মক্ষেত্রে উৎপানদনশীলতা বৃদ্ধির কাজে লাগাতে বলা হয়েছে নতুন সমীক্ষায়। জেসিকার কথায়, ‘‘আমরা এখানে বলেছি, কী ভাবে অবসর যাপনের মধ্যে দিয়ে কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে তোলা সম্ভব হয়।’’
সকলের জন্য নয়
তবে এই ধারণা সকলের জন্যই কার্যকর হবে, তা কিন্তু নয়। যাঁরা মনে করেন, অফিসের কাজ সেখানেই শেষ করা দরকার, পারিবারিক জীবন সম্পূর্ণ আলাদা হওয়া উচিত, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ভাবনা সুবিধাজনক না-ও হতে পারে। কেটের মতে, অনেকেই কর্মজগতের সঙ্গে ব্যক্তিজীবন মেলাতে চান না। এটি ব্যক্তিগত পছন্দ, মানসিকতার উপর নির্ভর করে।