Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
CORONAVIRUS

আইসোলেশন, কোয়রান্টিন ও হোম কোয়রান্টিন এগুলোয় ফারাক কী? কখন কোনটা দরকার?

রোগীর ক্ষেত্রে এই তিন অবস্থায় বিধিনিষেধ কি বদল বদলে যায়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা?

জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কয়েক দিন থাকাও করোনা প্রতিরোধ করতে পারে।

জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কয়েক দিন থাকাও করোনা প্রতিরোধ করতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ১৮:৪৯
Share: Save:

আইসোলেশন। হোম কোয়রান্টিন। কোয়রান্টিন। করোনা-কাঁটা থেকে বাঁচতে সতর্কতার অঙ্গ হিসেবে এই তিনটি শব্দ প্রায়ই শোনা যাচ্ছে।

কিন্তু এই তিনটির মধ্যে তফাৎ কোথায়? রোগীর ক্ষেত্রে এই তিন অবস্থায় বিধিনিষেধ কি বদল বদলে যায়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘আইসোলেশন, হোম কোয়রান্টিন ও কোয়রান্টিনের মধ্যে বেশ কিছু ফারাক রয়েছে। পার্থক্য আছে নিয়ম মানার ক্ষেত্রেও।

আরও পড়ুন: করোনা-ভয় ঠেকাতে জিমে যাওয়ায় নিষেধ করল ‘হু’! শরীরচর্চার সময় সংক্রমণ এড়াতে মেনে চলুন এ সব

আইসোলেশন: কারও শরীরে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পেলে, সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ হলে, মোট কথা করোনা হয়ছে তা ধরা পড়লে তাকে আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। আইসোলেশনের সময় চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে থাকতে হবে রোগীকে। অন্য রোগীদের কথা ভেবে হাসপাতালে আলাদা জায়গা তৈরি করা হয় এঁদের জন্য। অন্তত ১৪ দিনের মেয়াদে আইসোলেশন চলে। অসুখের গতিপ্রকৃতি দেখে তা বাড়ানোও হয়। আইসোলেশনে থাকা রোগীর সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না। তাঁদের পরিজনের সঙ্গেও এই সময় দেখা করতে দেওয়া হয় না। একান্ত তা করতে দেওয়া হলেও অনেক বিধিনিষেধ মেনে।

এই অসুখের কোনও প্রতিষেধক এখনও সন্ধানে নেই। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এই সময় কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দিয়ে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায় এমন কিছু ওষুধ ও পথ্য দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। যাঁদের শরীরে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ও করোনার প্রকোপ অল্প, তাঁরা এই পদ্ধতিতে সুস্থও হন। যাঁদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ও রোগের হানা বড়সড় রকমের, তাঁদের পক্ষে সেরে ওঠা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

আরও পড়ুন: মাল্টিভিটামিন খেলেই কি করোনা-সংক্রমণ এড়ানো যাবে?

কোয়রান্টিন: করোনার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার পরেই তার উপসর্গ দেখা দেয় না। অন্তত সপ্তাহখানেক সে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে জানে। তাই কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে বা রোগীর সংস্পর্শে এলে তার শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে কোভিড-১৯। বাসা আদৌ বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত কি না এটা বুঝে নিতেই কোয়রান্টাইনে পাঠানো হয় রোগীকে। অন্য রোগীদের কথা ভেবেই কোয়রান্টিন কখনও হাসপাতালে আয়োজন করা হয় না। করোনা হতে পারে এমন ব্যক্তিকে সরকারি কোয়রান্টিন পয়েন্টে রাখা হয়।

কমপক্ষে ১৪ দিনের সময়সীমা এখানেও। এই সময় রোগের আশঙ্কা থাকে শুধু, তাই কোনও রকম ওষুধপত্র দেওয়া হয় না। শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়। বাইরে বেরনো বন্ধ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। যেহেতু রোগের জীবাণু ভিতরে থাকতেও পারে, তাই মাস্ক ব্যবহার করতেও বলা হয়। বাড়ির লোকেদেরও এই সময় রোগীর সঙ্গে কম যোগাযোগ রাখতে বলা হয়।

হোম কোয়রান্টিন: সুবর্ণবাবুর কথায়, ‘‘প্রথমেই বলি, হোম আইসোলেশন বলে কিছু হয় না। আইসোলেশন বাড়িতে রেখে সম্ভবও নয়। বরং হোম কোয়রান্টিন বলাটা অনেক যুক্তিযুক্ত। কোনও ব্যক্তি যখন নিজের বাড়িতেই কোয়রান্টিনের সব নিয়ম মেনে, বাইরের লোকজনের সঙ্গে ওঠাবসা বন্ধ করে আলাদা থাকেন, তখন তাকে হোম কোয়রান্টিন বলে। সাধারণত, সম্প্রতি আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে না এলে রোগীকে হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়।

এ ক্ষেত্রেও ন্যূনতম ১৪ দিন ধরে আলাদা থাকার কথা। কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে, বা রোগীর সংস্পর্শে এলে তার শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে কোভিড-১৯। বাসা আদৌ বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত কি না এটা বুঝে নিতেই এই ব্যবস্থা নিতে হয়।

এ ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যবিধির বাইরে কোনও আলাদা ওষুধ দেওয়ার প্রশ্নই নেই। জল, ভাল করে খাওয়াদাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর নানা পথ্য— এ সব দিয়েই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy