লিপস্টিক ব্যবহার করার সময় মনে রাখতে হবে অল্প কিছু টিপস। ছবি: শাটারস্টক।
শারদোৎসবের পরে দিনকয়েকের বিরতি। এরপরেই শুরু হয়ে যায় বিয়ের মরসুম। ফলে স্বমহিমায় ফিরে আসে লিপস্টিক। কারণ ওষ্ঠরঞ্জনী ছাড়া বিয়েবাড়ির সাজ অসম্পূর্ণ। লিপস্টিক এমনই এক প্রসাধন, যার শরণাপন্ন হন আটপৌরে গৃহবধূ থেকে কর্পোরেটে কর্মরতা, সবাই।
ঠোঁট রাঙানোর ধারা চলে আসছে মানবসভ্যতার গোড়া থেকেই। সুমেরীয় ও মিশরীয় সভ্যতায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ঠোঁটে রং লাগানো হত। প্রসাধনের থেকেও তখন এই রীতি ছিল সামাজিক মর্যাদার প্রতীক। সিন্ধু ও গ্রিক সভ্যতাতেও মেয়েদের সাজের অঙ্গ ছিল রঙিন ওষ্ঠ ও অধর।
লিপস্টিক যেমন সাজের মাত্রা বাড়ায়, এর ভুল প্রয়োগে আবার মাটিও হয়ে যেতে পারে মেকআপ। লিপস্টিক লাগানোর সময় মনে রাখতে হবে অল্প কিছু টিপস। তা হলেই ঠোঁটের জাদুতে বাজিমাত করার ক্ষমতা থাকবে আপনার হাতের মুঠোয়।
আরও পড়ুন: ব্রেস্ট ক্যানসার হানা দিতে পারে যখন তখন, রোগ ঠেকাতে মেনে চলুন এ সব
ঠোঁটের যত্ন নিন:
লিপস্টিক পরার প্রথম শর্ত এটাই। বছরভর প্যাম্পার করুন ঠোঁটকে। সাজ শেষ হয়ে গেলেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে লিপস্টিক লাগাতে শুরু করবেন না। প্রথমে পুরনো নরম টুথব্রাশ দিয়ে আলতো করে ঠোঁটে ঘষুন। এতে ঝরে যাবে মরা কোষ। তারপর লাগান লিপ বাম। ব্যবহার করতে পারেন লিপ প্রাইমার-ও। তা হলে লিপস্টিক অনেক ক্ষণ ঠিকঠাক থাকবে। যে কোনও মরসুমেই শুকনো ও ফাটা ঠোঁটে লিপস্টিক নৈব নৈব চ। নইলে সাজ মাঠে মারা যাবে।
ঠোঁটের স্বাভাবিক রং বা লিপটোন যদি সব জায়গায় সমান না হয়, অর্থাৎ ঠোঁটে যদি কালচে ছোপ পড়ে থাকে, তা হলে কনসিলার দিয়ে সেটা ঢেকে দিন। এরপর দিন কমপ্যাক্ট। যাতে লিপস্টিক দীর্ঘক্ষণ অটুট থাকে।
লিপস্টিকের সৌন্দর্য অনেকটাই নির্ভর করে ঠোঁটের কন্ট্যুরের উপর।
আগে লিপলাইনার:
প্রথমে লাইনার দিয়ে ভাল করে ঠোঁটের সীমারেখা এঁকে নিন। কিউপিডস বো বা নাকের নীচে ঠোঁটের ‘ভি’-এর মতো অংশ আঁকার সময় সতর্ক থাকুন। লিপস্টিকের সৌন্দর্য অনেকটাই নির্ভর করে ঠোঁটের কন্ট্যুরের উপর। তাই ঠোঁটের বর্ডার আঁকার সময় সতর্ক থাকুন। আউটার লাইন যাতে ধেবড়ে না যায়, খেয়াল রাখুন সে দিকে।
আরও পড়ুন: খাবার পাতে রাখছেন না এই সব তেতো? বিপদ ডাকছেন অজান্তেই
এ বার লিপস্টিক:
লিকুইড বা স্টিক, ম্যাট বা গ্লসি, যে রকম লিপস্টিক-ই ব্যবহার করুন না কেন, লাগাতে শুরু করুন ঠোঁটের মাঝখান থেকে। পুরো ঠোঁটে সমান ভাবে লাগিয়ে এ বার ভাল করে ভরুন কোণার অংশ। যদি ভাল কোম্পানির লিপস্টিক হয়, তা হলে একবার ভাল করে লাগালেই যথেষ্ট।
ঠোঁট যদি শুকনো হয়, তা হলে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার না করাই ভাল। বেছে নিন এমন লিপস্টিক, যা আপনার ঠোঁটকে আর্দ্র রাখবে। পাতলা, আকারে ছোট ঠোঁট হলে ব্যবহার করুন হাল্কা রং। গাঢ় শেডে ঠোঁট আরও ছোট দেখাবে। ঠোঁট চওড়া, মোটা হলে সঙ্গে রাখুন হাল্কা শেডের লিপস্টিক।
পাউটের জন্য লিপগ্লস অপরিহার্য।
পাউটের জন্য লিপগ্লস:
সবার শেষে কনসিলার ব্রাশ দিয়ে মুছে নিন ঠোঁটের চারপাশে বেরিয়ে থাকা লিপস্টিকের চিহ্ন। ইচ্ছে হলে, বুলিয়ে নিন লিপগ্লসের ব্রাশ। পাউট করে ছবি তোলার নেশা থাকলে গ্লস কিন্তু মাস্ট।
মনে রাখার টুকিটাকি:
লিপস্টিক গাঢ় হলে লিপলাইনার হবে হাল্কা। আর হাল্কা শেডের লিপস্টিকের জন্য আদর্শ ডার্ক শেডের লিপলাইনার। এই কম্বিনেশন না থাকলে ঠোঁটের পুরো সাজ মাটি। লিপস্টিক পরার পরে সব সময় টিসু দিয়ে বাড়তি রং তুলে দিন।লিপস্টিক পরার ব্রাশ হবে অ্যাঙ্গুলার বা কৌণিক। গোল ব্রাশ দিয়ে লিপস্টিক লাগালে সেই রং ভাল আসবে না। যত প্রিয়ই হোক, এক্সপায়ারি তারিখ পেরিয়ে যাওয়া লিপস্টিক ব্যবহার করবেন না।দোকানে লিপস্টিকের শেড পছন্দ করার সময় টেস্টার কখনওই ঠোঁটে লাগাবেন না। বরং, তা কব্জির কাছে লাগিয়ে রং পছন্দ করে নিন। দিনের শেষে সাজ তোলার সময় মনে করে ঠোঁট থেকে তুলে ফেলুন লিপস্টিকের শেষ চিহ্নটুকুও।
এই টিপসগুলো মেনে লিপস্টিক পরুন। হয়ে উঠুন সবার মাঝে অনন্যা।
(ছবি:শাটারস্টক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy