যুদ্ধকালীন যৌন হিংসার নিদর্শন এই প্রথম নয়। প্রতীকী ছবি।
নারীদের উপর যৌন হেনস্থাকেই রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নামা যুদ্ধের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। জাতিসঙ্ঘের সদস্য প্রেমিলা প্যাটেনের এমন মন্তব্যে বিশ্ব জুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রেমিলার মতে, ইউক্রেনের নারীদের ধর্ষণ এবং তাঁদের উপর যৌন নিপীড়ন করেই সেই দেশকে নিঃস্ব করে দেওয়ার ফন্দি আঁটছে রুশরা। আর সেই উদ্দেশ্যকে সফল করতে সেনাকে প্রচুর মাত্রায় ভায়গ্রা জোগাচ্ছে রাশিয়া। বন্দুক-বোমা-পরমাণু নয়, শেষে কি না ভায়গ্রা অস্ত্রেই যুদ্ধ জয় করতে চাইছে রাশিয়া? আর কী ভাবেই বা তা সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন।
ইউক্রেনের নারীদের উপর রুশসেনাদের যৌন নিপীড়নের কথা খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে বার বার। জাতিসঙ্ঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, যুদ্ধ চলাকালীন ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ১০০টিরও বেশি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে রুশসেনার বিরুদ্ধে। আদতে সংখ্যাটি অনেক বেশি বলেই মত অধিকাংশের। এর নেপথ্যে কি সেই ভায়গ্রাই?
যুদ্ধকালীন যৌন হিংসার নিদর্শন এই প্রথম নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়েও যৌন হিংসার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে সে সব যুদ্ধেও কি ভায়গ্রার সাহায্য নেওয়া হয়েছিল? প্রমীলার মন্তব্য কিন্তু সে দিকেও সওয়াল করে।
কী এই ভায়গ্রা?
যৌন বলবর্ধক ওষুধের প্রচলিত নাম ‘ভায়াগ্রা’। যদিও প্রকৃত ভায়াগ্রা আমেরিকার ফাইজার কোম্পানির তৈরি একটি ওষুধ। যার দামও তুলনায় অনেক বেশি। এই ওষুধে থাকা ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’ নামক যৌগতেই লুকিয়ে আসল রহস্য। এই যৌগের কামালেই যৌনইচ্ছা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ভায়গ্রা খেলে পুরুষাঙ্গের পেশিগুলি ও রক্তবাহগুলি শিথিল হয়ে যায়, ওই অঞ্চলে রক্তপ্রবাহের মান বেড়ে যায়, এর ফলেই হয় লিঙ্গোত্থান।
ভায়গ্রার প্রভাব কত ক্ষণ থাকে?
চিকিৎসকদের মতে, ভায়গ্রা খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই শরীরে কাজ শুরু হয়। শারীরিক মিলনের আধ ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা আগেই এই ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। কার শরীরে কত ক্ষণ এই দাওয়াই কাজ করবে, তা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। তবে সাধারণত এই ওষুধ খাওয়ার পর চার থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত এর প্রভাব থাকে। অর্থাৎ, বেশ অনেক ক্ষণ উত্তেজিত রাখে এই ওষুধ।
কী ভাবে খায় এই ওষুধ?
লিঙ্গোত্থানের জন্য মোটামুটি ৫০ মিলিগ্রাম ডোজের ভায়গ্রা খাওয়া নিরাপদ। তবে চিকিৎসকরা সমস্যা বুঝে ২৫ থেকে ১০০ মিলিগ্রামের ওষুধও দিয়ে থাকেন। দিনে একটির বেশি ভায়গ্রা খাওয়ার পরামর্শ দেন না চিকিৎসকরা। যদিও খাবার সঙ্গে ভায়গ্রা খাওয়ায় কোনও রকম বাধা নেই, তবে মনে করা হয় খালি পেটে এই ওষুধ খেলে সবচেয়ে বেশি কাজ হয়। উচ্চ ফ্যাটজাতীয় খাওয়ার সঙ্গে এই দাওয়াই না খাওয়াই শ্রেয়। এমনটা হলে ওষুধের প্রভাব কমে যায়।
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে ভায়গ্রা খাওয়ার ফলে ‘প্রায়াপ্রিজম’ নামক এক ধরনের লিঙ্গ সংক্রান্ত রোগ দেখা যায়। এমনকি, সঠিক পরিমাণে খেলেও এই রোগ হতে পারে। পুরুষদের অস্বাভাবিক হারে লিঙ্গোত্থান এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। এমন হলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ‘প্রায়াপ্রিজম’ ছাড়াও প্রয়োজনাতিরিক্তি হারে বিশেষ ধরনের ভায়াগ্রা খেয়ে নেওয়ার কারণে ঘটতে পারে মৃত্যুও। কারণ, এই ধরনের ওষুধ রক্তচাপের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত এই ওষুধ খেলে মাথা ধরা, নাক থেকে রক্ত পড়া, বমি বমি ভাব, বুকজ্বালা, এমনকি, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা যায়। যৌন বলবর্ধক ওষুধ সাময়িক ভাবে সুখানুভূতির কারণ হলেও এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ডেকে আনতে পারে মারাত্মক কোনও বিপদ। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই এই ওষুধ খাওয়া ভাল।
ভায়গ্রা কি শুধুই শারীরিক সুখের দাওয়াই?
এই দাওয়াইয়ের আরও অনেক গুণ আছে। পালমোনারি আর্টিয়াল হাইপারটেনশন সমস্যা, হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা, পাহাড়ে উঠলে শারীরিক অসুস্থতা কমাতেও এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy