Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
blanket

শীতের র‌্যাপার নকশা কাটা

শীতকালে শোয়ার সময়ে কী গায়ে দেবেন, বেছে নিন পছন্দসই ডিজ়াইন ও ফ্যাব্রিক দেখে।কথাতেই আছে, বর্ষায় ছাতা আর শীতে কাঁথা— দুই মরসুমে এই দু’টি অপরিহার্য জিনিস।

Img at1

সায়নী ঘটক
নেতাই ও নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০০:৩০
Share: Save:

কথাতেই আছে, বর্ষায় ছাতা আর শীতে কাঁথা— দুই মরসুমে এই দু’টি অপরিহার্য জিনিস। এ শহরে শীত ক্ষণিকের অতিথি। বাকি বছরটা অনেকেরই কাটে এসি-র ভরসায়। সেই সময়ও গায়ে একটা চাপা দেওয়া থাকলে বেশ আরাম বোধ হয়। তাই সাধারণ কাঁথা-কম্বল-বালাপোশ হোক কিংবা এসি ব্ল্যাঙ্কেট— দৈনন্দিন ব্যবহারে অঙ্গাঙ্গি জড়িয়ে রয়েছে এগুলি।

কাঁথা-কম্বল করে সম্বল

শীতের দুপুরে খেয়ে উঠে লেপের তলায় সেঁধিয়ে যাওয়া কিংবা পায়ের কাছে কম্বলটা টেনে নিয়ে গল্পের বই আর কমলালেবু নিয়ে বসা— স্বপ্নের ছুটির দিন বলতেই যেন এই ছবিটা চোখে ভাসে। আরামের সেই উপকরণ হিসেবে যুগে যুগে কাজে লেগেছে শিমুল তুলোর লেপ, হাতে বোনা কাঁথা বা বালাপোশ। এখন যদিও তার ব্যবহার খানিক কমই দেখা যায় ঘরে ঘরে। তার বদলে ধীরে ধীরে বাঙালির বেডরুমে জায়গা করে নিয়েছে পলিয়েস্টার মাইক্রোফাইবার কমফর্টার। শীতের দিনে গায়ে মুড়ি দিয়ে শোয়া বা বসার জন্য আরও বহু ধরনের অপশন বাজারে এসে গিয়েছে এখন। প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী তা সংগ্রহ করুন।

মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়

আগেকার দিনে মা-ঠাকুমারাই কাঁথা বোনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতেন অনায়াসে। এখনও সে অভ্যেস ও শখ রয়েছে অনেকেরই। তবে মূলত ওজনে ভারী হওয়ার কারণে এবং কাচাধোয়ার অসুবিধের জন্য হাতে তৈরি কাঁথা বা তুলোর লেপের চাহিদা আগের চেয়ে কম। তুলনায় হালকা থ্রো ব্ল্যাঙ্কেট কিংবা রজ়াইয়ের চাহিদা ইদানীং বেশি। ওজনে হালকা ও ওয়াশেবল এমন হরেক অপশন এসে গিয়েছে।

তবে অনেকের মতে, এ শহরের হালকা শীতে সনাতন হাতে বোনা কাঁথার জুড়ি নেই। সুতির নরম শাড়ির কাপড় কেটে তিনটি স্তরে সেলাই করে জুড়ে দিয়ে বানানো হয় কাঁথা। শাড়ির বদলে অনেক সময়ে প্যাচওয়র্ক করা কাপড়ের টুকরো জুড়েও বানানো হয় এটি। কাঁথার নিখুঁত কাজের জন্য দরকার দক্ষ কারিগর। সেই ধরনের এমব্রয়ডারি করা কাঁথার দামও অনেকটাই বেশি। বাংলাদেশের শিল্পীদের হাতে বোনা নকশি কাঁথা কিংবা একটা রিভার্সিবল জয়পুরি রজ়াইও পারে আপনার বেডরুমে ক্লাসি লুক এনে দিতে। হ্যান্ড ডাই, ব্লক প্রিন্ট, ফ্লোরাল মোটিফ... ইচ্ছে মতো ডিজ়াইন বেছে নিন।

কাঁথা রিভাইভালিস্ট শামলু দুদেজা যেমন শান্তিনিকেতনের শিল্পীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে প্রথম কাঁথার কাজে আগ্রহী হয়েছিলেন। তিন-চারটি স্তরের সুতির কাপড়ের জায়গায় সিঙ্গল লেয়ার সিল্কের উপরে কাঁথার কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, দক্ষ শিল্পীদের কদর করতে জানতে হবে। না হলে ক্রমে মধ্যমানের জিনিসের সঙ্গে আপস করতে হবে, হারিয়ে যাবে ঐতিহ্য।

শিমুল তুলো ধুনতে ভাল

তুলো ধোনার শব্দ শহরের পাড়া থেকে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। ভারী লেপ বা কম্বল কাচাও যেমন অসুবিধে, বারবার রোদে দেওয়াও। তাই এর পরিবর্তে এখন অনেক বেশি জনপ্রিয় হালকা বালাপোশের ব্যবহার। পুরনো শাড়ির ছেঁড়া পাড় বা বাতিল কাপড়ের টুকরো ব্যবহৃত হয় বালাপোশ তৈরি করতে। সিন্থেটিক ফ্যাব্রিকের ফার কুইল্ট বা ফ্লিস ব্ল্যাঙ্কেট অনেকের সহ্য হয় না, তাঁদের জন্য পিয়োর কটনই সেরা অপশন। উলেন নিটেড থ্রো হালকা হলেও বেশ গরম হয়। আবার বেশি ঠান্ডার জায়গায় ব্যবহার করা হয় ইলেকট্রিক ব্ল্যাঙ্কেট। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বিছানা গরম রাখা যায় এতে। ঠান্ডা জায়গায় বিছানার ভিজে ভাবও কাটাতে সাহায্য করে এই কম্বল।

শীতকালে আলাদা করে তো বটেই, সারা বছর ব্যবহার করার জন্য এসি ব্ল্যাঙ্কেট বিছানায় সর্বক্ষণের সঙ্গী। তা কটন বা পলি কটন মেটিরিয়ালের হতে পারে। সঙ্গে সুতিরই কভার ব্যবহার করুন। অ্যালার্জি থাকলে রেহাই পাবেন, আর মাঝে মাঝে কভারটা ধুয়ে নিলেই পরিষ্কার থাকবে। সফট ফ্যাব্রিকের কোরিয়ান ব্ল্যাঙ্কেটের চল এখন বেশি। কভার দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন তা-ও। দেখেশুনে বেছে নিলেই শীত কাটবে আরামে।

যত্ন নেবেন কী ভাবে?

কাঁথা বা রজ়াই বছরের বাকি সময়েও যত্ন করে রাখুন। শীত চলে গেলে একবার কুইক ওয়াশ করে রোদে দিয়ে তুলে দিন। রজ়াই ও কাঁথা কখনও ভাঁজ করে রাখবেন না। রজ়াই রাখবেন রোল করে। আর কাঁথা বিছানার তলায় পেতে রাখলে ভাল থাকবে বহু দিন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy