জ্বর সারলেও খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। ছবি-শাটারস্টক থেকে নেওয়া।
'একে রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর', একেই তো করোনার ভয়ে সবাই তটস্থ তার সঙ্গে বৃষ্টির জমা জলে এডিস মশার বংশ বৃদ্ধিতে শুরু হয়েছে ডেঙ্গি জ্বর। আবার এদের সঙ্গী ইনফ্লুয়েঞ্জা তো আছেই। যে কোনও কারণেই জ্বর হোক না কেন সেরে যাওয়ার পরেও কদিন খুব দুর্বল লাগে। জ্বরের পর কয়েকদিন বিশ্রাম আর পুষ্টিকর খাবার খেলে তাড়াতাড়ি ক্ষয়ক্ষতি পূরণ হয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসা যায়। যে কোনও ভাইরাসের সংক্রমণের পর শরীরের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই জ্বরের পর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে তবেই শরীর সারে, বললেন ডায়েটিশিয়ান ইন্দ্রাণী ঘোষ। সকালের জলখাবার থেকে রাতের খাবার প্রতি বারই খাওয়া দরকার প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস এবং পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।
রান্নায় থাকুক হলুদ, জিরে, গোলমরিচ
কম তেল মশলা যুক্ত সহজপাচ্য খাবার দ্রুত হজম হয়ে যায়। জ্বর হলে হালকা রান্না খাবার খেলে ভাল হয়। তবে বেশ কিছু মশলা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। হলুদ, জিরে, গোলমরিচ, আদা দিয়ে রান্না হালকা খাবার খেতে হবে। এই সব মশলা একদিকে খাবারকে মুখরোচক করে, অন্যদিকে পুষ্টিও বাড়ায় বললেন ইন্দ্রাণী ঘোষ। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক টুকরো কাঁচা হলুদ খেয়ে দিন শুরু করতে পারলে ভাল হয়। এছাড়া সব রকমের ডাল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাওয়া যায়। আবার মিশ্র ডাল খেলেও সব কটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকায় পুষ্টি বাড়ে। যাঁরা নিরামিষ খান তাঁদের প্রতিদিনের খাবারে ডাল থাকতেই হবে। এছাড়া ছোলা, সয়াবিনের বড়ি, ছানা ও দই খেতে হবে। কুমড়ো, পটল, ঝিঙ্গে, ঢ্যাঁড়শ সব রকমের সবজি খেতে হবে। বেশি তেলে রান্না বাদ দিতে হবে। অল্প তেলে রান্না করা খাবার বেশি পুষ্টিকর বলে জানালেন ইন্দ্রাণী।
জলীয় খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি
যে কোনও জ্বর হলেই শরীরে জলের পরিমাণ কমে গিয়ে ডিহাইড্রেশন হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবার খাওয়া দরকার। সুপ, টাটকা ফলের রস, ডাবের জল, লেবুর সরবত, দইয়ের ঘোল নিয়ম করে খেতে হবে। ডেঙ্গি অথবা ভাইরাল জ্বর সেরে যাবার পরেও দুর্বলতা থেকে যায়। তাই জ্বর চলাকালীন ও জ্বরের পরেও শরীরে জলের জোগান বজায় রাখা দরকার। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে লেবু ও মধুর জল পান করলে একদিকে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায়, অন্যদিকে ডেঙ্গির ও ভাইরাল জ্বরের কারণে কমে যাওয়া 'ইমিউনিটি' ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়া গাজর, বিনস, পেঁপে দিয়ে চিকেন স্টু কিংবা টম্যাটো, সুইট কর্ন, চিকেন সহ যে কোনও সুপ খেলে ভাল হয়। ডালের সুপও খাওয়া যেতে পারে। দই দিয়ে পাতলা ঘোল খেলেও ভাল হয়।
আরও পড়ুন: একে বর্ষা, সঙ্গে করোনা, এই সময় চোখের যত্ন কীভাবে নেবেন?
আনলক শুরু হওয়ায় ডাব পেতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। ডাবের জল এই সময় অত্যন্ত উপযোগী। ডাবের জলে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাসিয়াম, ইলেকট্রোলাইটস, এনজাইম, সাইটোকাইন ও ফাইটো হরমোন। এর সবগুলিই ডেঙ্গি সহ ভাইরাল জ্বরের পরবর্তী দুর্বলতা সহ বিভিন্ন ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে বেরচ্ছেন? এ সব না মানলে কিন্তু বিপদে পড়বেন
একই সঙ্গে প্রত্যেক দিন ফল খাওয়া দরকার। ফলে থাকা নানা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ভিটামিন সি প্লেটলেট কাউন্ট বাড়িয়ে রক্তের অন্যান্য ঘাটতি পুরণ করতে পারে, বললেন ডায়েটিশিয়ান ইন্দ্রাণী।
ভাইরাস সংক্রমণের কারণে জ্বরের পর ডাল, চিকেন ও মাছ থাকুক ডায়েটে
ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ আর ডিনার তিন বারই সহজপাচ্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে ভাল হয়।জ্বরের জন্যে শরীরের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, তা পূরণ করতে পারে প্রোটিন। বিভিন্ন ডাল, রাজমা,ডিম, চিকেন, মাছ, ছানা প্রোটিনের ভাল উৎস। তবে সামুদ্রিক মাছ খেতে মানা করেন ডায়েটিশিয়ান।
এই সময় হজম শক্তি কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। সামুদ্রিক মাছ ও চিংড়ি খেলে পেটের গোলমাল ফিরে আসতে পারে। হালকা চিকেন স্টু, মাছের ঝোল বা মাছ ভাজা, ডাল সেদ্ধ, অল্প তেলে রান্না ডাল ইত্যাদি হালকা করে রান্না বাড়ির খাবার খাওয়া দরকার। সকালের জলখাবারে ডাল রুটি ডিম সেদ্ধ, বা কিনোয়া ও ডালের খিচুড়ি, ডিমের পোচ, খাওয়া যেতে পারে। দুপুরে খাওয়ার আগে হালকা চিকেন স্টু বা সুপ খেলে ভাল। দুপুরে মাছের ঝোল ভাত, ডাল, দই থাকুক পাতে। বিকেলে কল বেরনো ছোলা, গোটা মুগ, রাতে ডাল, রুটি, চিকেন, স্যালাড খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব বলেই জানাচ্ছেন ডায়েটিশিয়ান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy