প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং পল্লবী চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
টক দই, শসাকুচি আর স্যালাড, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ভূরিভোজ’ বলতে এটুকুই। বছরের ৩৬৪টি দিন তিনি এই খাবারগুলিই খেয়ে থাকেন। ডায়েটকে তিনি এক প্রকার সাধনার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। ৬২-তেও প্রসেনজিতের মেদহীন চেহারা, টান টান ত্বকের নেপথ্যে যে সেই সাধনা, তা হলফ করে বলা যায়। তবে বছরে একটি দিন নিয়ম ভাঙেন ‘ইন্ডাস্ট্রি’। ভাইফোঁটায় প্রসেনজিৎ স্যালাডের বদলে হাতে তুলে নেন মাছ, মাংসে ভরা মহাভোজের থালি। তৃপ্তি করে খান বোন পল্লবীর হাতে তৈরি নানা সুস্বাদু পদ। এক দিন হলেও দাদাকে ভাত, মাছ, মাংস খেতে দেখে শান্তি পান পল্লবী।
প্রসেনজিৎ-পল্লবীর ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান প্রতি বারই খুব জাঁকজমক করে হয়। তবে এ বছর ভাইফোঁটায় দু’জনের দেখা হবে কি না, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ পল্লবী এই মুহূর্তে কলকাতায় নেই। মুম্বইয়ে রয়েছেন তিনি। তবে পল্লবী জানিয়েছেন, প্রসেনজিৎ যদি কোনও কারণে মুম্বইয়ে যান, তা হলে দেখা হয়ে যেতে পারেন। তা না হলে কি ভিডিয়োকলে ভাইফোঁটা সারবেন দু’জনে? পল্লবী বলেন, ‘‘একেবারেই না। ভাইফোঁটায় দাদার সঙ্গে দেখা না হলে আমি মন্দিরে গিয়ে ফোঁটা দিয়ে আসব। তা ছাড়া, এ রকম বহু বার হয়েছে। আসলে আমাদের দু’জনের কাছেই কাজ সব কিছুর আগে। কাজের সঙ্গে আপস করে আমরা কখনও উৎসব পালন করি না।’’
৩০ বছর ধরে টলিউড শাসন করা মানুষটির কাছে কাজ যে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়। তবে এই বিশেষ দিনটিতে বোনের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেন না প্রসেনজিৎ। পল্লবী কথায় কথায় জানালেন, কোনও এক বছর ভাইফোঁটায় খুব ব্যস্ত ছিলেন প্রসেনজিৎ। পল্লবী নিজের হাতে রান্না করে হটপটে ভরে দাদার জন্য খাবার পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। যাতে ফিরে এসে খেতে পারেন। আর যাওয়ার পথে গাড়িতেই ফোঁটা দিয়েছিলেন।
তবে যে বছর দু’জনেরই ব্যস্ততা কম থাকে, সে বার ভাইফোঁটায় হেঁশেল থেকে বেরোনোর সুযোগ পান না পল্লবী। প্রসেনজিৎ তেল-মশলা একেবারেই খান না। ভুলবশত বেশি ঝাল-মশলা দিয়ে ফেললেই মুশকিল। তাই সতর্ক হয়ে রান্না করেন পল্লবী। কী কী থাকে ভাইফোঁটার মেনুতে? পল্লবী জানালেন, পাতলা করে মটনের ঝোল রাঁধেন তিনি। আর পায়েস বানাতেই হয়। তাঁর কথায়, ‘‘বুম্বাদা তো একেবারেই কম খাওয়াদাওয়া করেন। তবে ভাইফোঁটায় আমার হাতের মটনের ঝোল ভাত খান তৃপ্তি করে। আর এক চামচ হলেও পায়েস খান। ছোট থেকেই থেকে ভাইফোঁটায় দাদাকে আমি পায়েস খাওয়াই। আগে মা রান্না করে দিতেন। এখন আমি রান্না করি।’’
মিষ্টিমুখ ছা়ড়া ভাইফোঁটার কথা ভাবা যায় না। কিন্তু দাদার নাম প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় হলে, সেই থালায় মিষ্টি সাজিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা তুলে রাখতে হয়। তবে পল্লবী অবশ্য মিষ্টি সাজিয়ে দেন থালায়। কিন্তু সেটা শুধুমাত্রই ছবি তোলার জন্য। প্রসেনজিৎ একটি মিষ্টিও দাঁতে কাটেন না। তবে শিঙাড়া খান। ভাইফোঁটা দিতে যাওয়ার সময় ‘মুখার্জি সুইটস’- থেকে দাদার জন্য গরম শিঙাড়া কিনে নিয়ে যান পল্লবী। আর মিষ্টির বদলে শিঙাড়া খেয়ে নিয়মরক্ষা করেন প্রসেনজিৎ। মটন, পায়েস ছাড়াও পল্লবী তাঁর দাদার জন্য ভাইফোঁটায় আরও একটি পদ রান্না করেন। দই দিয়ে মাছ রাঁধেন তিনি। সেটা খেতে বেশ পছন্দ করেন প্রসেনজিৎও। এমনিতে পল্লবীর হাতের রান্নার সুখ্যাতি আছে। যাঁরা সেই স্বাদ পেয়েছেন, একমাত্র তাঁরাই জানেন। তিনি কী ভাবে রাঁধেন দই মাছ? শিখিয়ে দিলেন পল্লবী।
উপকরণ:
৫০০ গ্রাম পাকা রুই
২৫০ গ্রাম টক দই
দেড় টেবিল চামচ পেঁয়াজ বাটা
১ টেবিল চামচ আদা বাটা
৪টি চেরা কাঁচালঙ্কা
১ টেবিল চামচ গরমমশলা গুঁড়ো
২ টেবিল চামচ ঘি
স্বাদমতো নুন এবং চিনি
পরিমাণমতো তেল
প্রণালী:
প্রথম মাছের টুকরোগুলি ভাল করে ধুয়ে নুন এবং টক দই মাখিয়ে ম্যারিনেট করে রাখতে হবে।
অন্য দিকে, কড়াইয়ে অল্প ঘি আর সাদা তেল গরম করে তার মধ্যে একে একে পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে।
মশলাটা একটু বাদামি হয়ে এলে তার মধ্যে সামান্য চিনি আর পরিমাণ মতো নুন দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে চেরা কাঁচালঙ্কাগুলি দিয়ে দিতে হবে। কয়েক মিনিট কষিয়ে দই দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখা মাছ দিয়ে দিতে হবে।
দই আর মশলা মাখামাখি হয়ে গেলে সামান্য জল দিয়ে কিছু ক্ষণ ঢাকা দিয়ে রেখে নামিয়ে নিলেই হবে। নামানোর আগে উপর থেকে গরমমশলার গুঁড়ো ছড়িয়ে দিলেই তৈরি দই মাছ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy